আপনার গানে হাতেখড়ি কার কাছে?
এর পেছনে একটি গল্প আছে। একদিন বাবা আমাকে একটি বাঁশি কিনে দিয়েছিলেন। আমি সারা দিন সেই বাঁশিটা বাজানোর চেষ্টা করতাম। একদিন নিজে নিজেই সুর তুললাম। বাবাকে বাজিয়ে শোনালাম।
খুব আহামরি না হলেও বাবা মুগ্ধ হলেন। আমাকে উৎসাহ দিলেন। আসলে আমার যে কোনো সৃজনশীল কাজে বাবা উৎসাহ দিতেন। ক্লাস থ্রিতে যখন প্রথম হারমোনিয়াম ধরলাম, ভীষণ কষ্ট হতো সুর তুলতে। আমার অনেকদিন লেগেছিল হারমোনিয়াম আয়ত্ত করতে।
বাবা নিরাশ হতেন না। তিনি বলতেন, তুমি পারবে। ক্লাস টেনে আমি সাডেন নামে একটা ব্যান্ড গঠন করি। উচ্চ মাধ্যমিকে এসে ব্যস্ততা বেড়ে গেল। নিয়মিত টিভি প্রোগ্রাম ও স্টেজ শোতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
বাবা তখন উৎসাহ দিতেন, আমাদের চর্চা কেমন চলছে সে ব্যাপারে খোঁজ নিতেন।
গানের মানুষ অভিনয়ে এলেন কেন?
আমার মধ্যে অভিনয়ের চিন্তার বীজ বুনে দিয়েছিলেন আমার বাবাই। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে এফডিসিতে যেতাম। অভিনয়ের প্রাথমিক শিক্ষাটা বাবার সুবাদেই পেয়েছি। প্রতি রাতে আমাদের বাসায় অভিনেতা, গায়করা আসতেন।
তাদের আড্ডা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
খান আতা অভিনীত 'জীবন থেকে নেয়া' থেকে নির্মিত ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন।
মোস্তফা মননের ধারাবাহিক 'জীবন থেকে নেয়া'তে আমি রাজ্জাক অভিনীত 'ফারুক' চরিত্রে রূপদান করছি। এ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে আমি বাবার চরিত্রটি মনে করতে চেষ্টা করি। বাবা কি সাবলীল অভিনয় করেছেন।
বাবার সংলাপগুলো মনে করি।
বাবার অভিনয় কেমন লাগত?
বাবা অভিনীত প্রথম সিনেমা 'জাগো হুয়া সাভেরা'। এ সিনেমাতে বাবার অনবদ্য অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। ওটা দেখে আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, পঞ্চাশের দশকে এমন সিনেমা নির্মাণ সম্ভব! জহির রায়হানের 'জীবন থেকে নেয়া', তার পরিচালিত 'মনের মতো বউ', 'এ দেশ তোমার আমার', 'কখনও আসেনি', 'আবার তোরা মানুষ হ', সিনেমাগুলোতে বাবার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে।
বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতেন?
আমি বাবার সঙ্গে প্রচুর সিনেমা দেখেছি।
আমরা যখন মোহাম্মদপুরে ছিলাম প্রায় বিকালেই বাবার সঙ্গে বিভিন্ন হলে যেতাম। বাংলা, ইংরেজি মিলিয়ে প্রচুর সিনেমা দেখেছি। বাবার সঙ্গে শেষ দেখা সিনেমা 'সুজন সখী'। এ সিনেমায় আমি প্লে-ব্যাক করেছি।
আপনার বাবার স্মৃতি সংরক্ষণে কি কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন?
বাবা প্রচুর সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।
সংগীত পরিচালনা করেছেন। প্রতিটি সিনেমাই ইতিহাস তৈরি করেছে। বাবার গানগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমার বোন রোমানা ইসলাম বাবার সেরা গানগুলো নিয়ে 'অস্তিত্ব' শিরোনামে একটি অ্যালবাম করেছে। আমি একটি অ্যালবামে বাবার একটি গান গেয়েছি।
বাবার গান তো অনেকেই গেয়েছেন। সত্যি কথা হলো বাবার অধিকাংশ গানের রেকর্ডিং ভালো নয়। সে রেকর্ডিং শুনে গান তোলা খুব কষ্টসাধ্য। এ গানগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি। যারা খান আতার গান শুনতে চায়, নিজেরা গাইতে চায় তাদের জন্য একটি অ্যালবাম প্রকাশের পরিকল্পনা আছে।
* আলী আফতাব
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।