আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাফিজ উদ্দীন

কয়েদি নম্বর ৩৪৩৮/এ। মো. হাফিজ উদ্দীন। কারাগারে তার পরিচয় জল্লাদ হাফিজ নামেই। কেবল নির্ধারিত মেয়াদের কিছু সময় আগে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠের বাইরে এসে বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বেছে নিয়েছেন 'জল্লাদ'-এর মতো ভয়ংকর কাজ। কারণ জেল কোডের ৭৬৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিটি ফাঁসিতে দুই মাস চার দিন করে কারাদণ্ড মওকুফ করা হয়।

জল্লাদ হাফিজের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারা কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের পর জল্লাদের খাতায় নাম লেখানোর আগে প্রায় একমাস নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। পরবর্তী সময়ে এক পর্যায়ে দ্রুত মুক্তির স্বাদ নিতে ওই প্রস্তাবে সাড়া দেন হাফিজ। ইতোমধ্যে রাজধানীর চাঞ্চল্যকর রীমা হত্যা মামলার আসামি মুনির, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ আসামি, খুলনার ত্রাস কুখ্যাত এরশাদ সিকদারের ফাঁসিসহ মোট ৩০ জন আসামিকে জল্লাদ ও সহকারী জল্লাদ হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। তবে প্রধান জল্লাদ হিসেবে ফাঁসির মঞ্চের লিভার ঘুরিয়েছেন রীমা হত্যা মামলার আসামি মুনিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময়। জল্লাদ হাফিজের বাবার নাম সাহেব আলী।

গ্রামের বাড়ি গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার বড় কয়েরে। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে হাফিজ চতুর্থ। জানা গেছে, স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের বলি হয়ে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন জল্লাদ হাফিজ। বর্তমানে তার বয়স ৬২ বছর পেরিয়ে গেছে। ১৯৮২ সালের ১২ মে থেকে গতকাল পর্যন্ত কারা প্রকোষ্ঠেই কেটেছে টানা ৩১ বছর চার মাস।

মুক্তির স্বাদ নিতে উন্মুখ হয়ে আছেন হাফিজ। মামলার আসামি হওয়ার আগ পর্যন্ত হাফিজ কর্মরত ছিলেন টঙ্গী মেঘনা কটন মিলে। কারা অভ্যন্তরেই কেটেছে তার যৌবনের প্রায় পুরোটা সময়। এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে হাফিজের সংসার এখনো আগলে রেখেছেন তার স্ত্রী জহুরা বেগম। একমাত্র ছেলে আলম তার পৈতৃক জমি দেখাশোনা করে।

জানা গেছে, ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে তৎকালীন কালিগঞ্জ থানার বড় কয়ের গ্রামে স্থানীয় এমদাদ গ্রুপ ও আলী হোসেন গ্রুপের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভয়াবহ সংঘর্ষ বাধে। ওই সংঘর্ষে দুই গ্রুপের মোট ১৫ জন মারা যায়। ওই মামলায় হাফিজের ৪৩ বছর কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছর কারাভোগের আদেশ দেন আদালত।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।