আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পতিতালয়ে গমনের বাস্তব অভিজ্ঞতা। বাচ্চারা টিভি দেখতে যাও।

আমি বাংলাদেশের দালাল| যৌবনের গান যখন আমার বুকের কোণে ধীর তাল-লয়ে বাজনা শুরু করল, নাকের নিচে দেখলাম কালো গোঁফের রেখা উকি দিচ্ছে। কেমন কেমন যেন লাগে। এলাকার বড়ভাইদের আলাপের ফাঁকে ফাঁকে শুনে ফেলেছি গাঙ্গিনার পাড়ে নাকি যাওয়ার জায়গা আছে, যেখানে সবাই যায়। বিষয়টা আগে বোঝতাম না। কে যেন আমাকে ভর্তি করিয়ে দিল ময়মনসিংহের একটা কলেজে আজ থেকে গুইন্না ১০ বছর আগে।

থাকার মতো কোন আত্মীয়-স্বজন নাই বিধায় মেসেই উঠতে হলো। নতুন ক্লাশে বন্ধু পেলাম কাওন (অভিজ্ঞতার ১৫ কলা পূর্ণ), বাবু (১৬ কলা পূর্ণ), নাহিদ (আনাড়ি), হারুক (আনাড়ি) আর আমি বান্দর (আনাড়ি)। তো যে মেসে থাকি সেখানে বন্ধু হলো কুমন, আজীব। ময়মনসিংহে থাকি, কেউই ভালো করে এই শহরের রাস্তা-ঘাট বা মার্কেট চিনি না। একদিন প্রস্তাব করলাম চল আমরা রেলওয়ে স্টেশন দেখতে যাব।

ময়মনসিংহ নাকি রেলওয়ে জংশন। কিভাবে জংশন হয় তাও দেখব। আর দেখব কিছু নতুন মার্কেট। শুনেছি হাবীব মার্কেটে নাকি সস্তায় শার্ট-প্যান্ট কিনতে পাওয়া যায়। সেই মতে হাঁটা শুরু করলাম চরপাড়া থেকে কাঁচা বাজারের ভিতর দিয়া।

যেতে যেতে গিয়ে পৌঁছলাম রেলওয়ে জংশনে। জংশন রে বাবা জংশন। কি বড় আর বিশাল। ৫/৭ টা ট্রেন স্টেশনে। ২/৩ টায় যাত্রী উঠানামা করতেছে, বাকিগুলা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে ব্যাস্ত।

পুরোটা ঘুরে দেখলাম। পেসেন্জার রেষ্ট হাউস কি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন!!! কফ, থুতু, পানের পিক, বিড়ির পাছা কি নেই সেখানে!!!! বসতেও ঘিন্না হয়। এসব দেখে শুনে হাটলাম সামনের দিকে। গিয়ে পড়লাম ৫ রাস্তার মোড়ে। ওরে বাবা ৫টা রাস্তা ৫ দিকে চলে গেছে।

তখন কিন্তু মোড়ের এই হোটেলটা হয়নি। সামনেই দেখি দোয়েল শপিং কমপ্লেক্স। সুন্দর সুন্দর টি শার্ট আর প্যান্ট টানায়া রাখছে। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। বিক্রেতারা এমনভাবে ডাকে যেন আমি তাদের কোন জনমের খালাতো ভাই।

আমরা তো আর ভয়ে দাম বলি না। শুনেছি দাম বললেই নাকি জোড়াজুড়ি করে মাল গছিয়ে দেয়। তারপর একটু এগিয়েই দেখি হাবীব মার্কেট। ভিতরে ঢুকে তো পুরাই টাস্কি। কত ধরনের কাপড় যে সেখানে আছে।

কয়েকটার দাম জিজ্ঞেস করলাম। বেশ দাম চায়। এখান থেকে বেরিয়ে এভাবে প্রতিটি অলি গলি ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়লাম বারী প্লাজার সামনে। এইদিকে দেখি একটা গলি। দেখতে দেখতে ঢুকে গেলাম সামনে।

দেখি কেমন যেন একটা গন্ধ গন্ধ লাগছে। বাবু তো মিটি মিটি হাসছে। বলছে মামা তোমরা সামনে আগাও আমি একটা জিনিস দেখি দোকানে পাই কিনা। এবার আমরা ৪ জন হয়ে গেলাম। কাওন আর নাহিদ আগে আমি আর হারুক পিছে।

গলির মাথায় গিয়ে দেখি কিছু পুরুষ লোক সিগারেট টানছে আর কোনায় কোনায় আলো আঁধারিতে কিছু মেয়ে স্বল্প বসনে ঠোঁটে রঙ মেখে ভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের দেখে পুরুষ লোকেরা একটু কেমন যেন করলো। কতইবা আমাদের বয়স তখন ১৬ হবে, মাত্র তো কলেজে ভর্তি হয়েছি। নাহিদ শুকনা চিকনা-চাকনা ছিল, একটা মেয়ে তাকে ধরে ফেলল। কাওন চালাক ছেলে দিল দৌড়, ওর দৌড় দেখে আমি আর হারুক ও দৌড়।

বাবু এক দোকানের কাছে দাড়িঁয়ে ছিল। আমাদের দৌঁড় দেখে সেও দিল দৌড়। দৌড় রে দৌড়, দৌড় কারে কয়। হামারা দৌড় কা পিছে সালাউদ্দিন কা দৌড় হারে গা মার্কা দৌড়। জান হাতে নিয়া গলির মুখে আসলাম।

বাবু বলে নাহিদ কইরে? কাওন কয় রাইখ্যা দিছে। ওরে এক মাইয়্যা ধইরা রাইখ্যা দিছে। আমি উপরের দিকে তাকাইয়া দেখি লেখা নাজমা বোর্ডিং। বাবুরে জিগাইলাম এইডা কি রে বাবু? কয় মামা এইডাও হেইডা। তয় দাম বেশি।

আমি তো আবারও দিলাম দৌড়। একেবারে বারী প্লাজার সামনে এসে দাড়ালাম। ৫ মিনিট পর নাহিদ আসলো। আইস্যা জিজ্ঞেস করে তোরা দৌড় দিলি কেন? কাওন বলল, ছোট জামা পড়া মেয়ে তরে যহন ধরলো, আমি তহনই বুঝছি এইটা কোন জায়গা। তাই দৌড় দিয়া জান বাচাইছি।

আমরা বললাম, কাওনের দৌড় দেইখ্যা আমরাও দৌড় দিছি। বাবু কয় আমি আগেই জানতাম এইডা সেই জায়গা, এই জন্য তোদের সাথে যাইনি। জিজ্ঞেস করলাম কি করল রে তোরে ওই মাইয়্যা? নাহিদ কয়ঃ কিছু না। জিগাইল কেন আইছি, কিছু দরকার কিনা, কি করি ইত্যাদি। পরে বাসায় এসে কাদতে কাদতে বলল, "বাড়ি থেকে ৩৪০ টাকা এনছিলাম জুতা কিনার জন্য।

সেই টাকাগুলি মাইয়্যাটা রাইখ্যা দিছে। " এই ছিল প্রথম দিন পতিতালয়ে গমনের অভিজ্ঞতা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.