রাস্তায় খুঁজে ফিরি সস্তায় ঘুরে ঘুরে এক কাপ চা অষ্টাদশ বর্ষে পদাপর্ণের মাতালময় দিনগুলোতে দেশের একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় হাওয়ায় ভেসে চলতেছিলেম। তেমনি এক উত্তাল দিবসে উড়াল দিলাম যশোহরের পথে। অবশেষে যাত্রাকাল শেষ হইলো,কিছু সময়ের বিশ্রাম এবং খাদ্য গ্রহন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল দরজায় কড়া নাড়ল,হুম! বেরুনো যেতে পারে। কিছু পথ পেরিয়ে সামনে একটা কাঁচাবাজার দেখতে পেলাম।
ধারণামত সন্ধ্যের পরেই বাজার জমবে ভালো। একটু খুঁজতেই চা দোকান পেলাম। রং চা খারাফ হয়নাই কিন্তু মৌলভীবাজারের মত না। পাশ থেকে হিন্দু বৈরাগীর মত এক লোক ফিসফিসিয়ে বলল,ভাইজান কি ঘোঁড়ারটেক যাবেন?
-কি আছে ওইখানে? আমার প্রতিউত্তরে লোকটা আর কিছু না বলে অতি সত্তর স্থান ত্যাগ করল
ধারণা করলাম হয়ত জায়গাটা বিক্রয়ের জন্য বিখ্যাত নচেত্ এই সম্পর্কীয় কিছু
ধারণাটা পরিবর্তন হতে একটু সময় লাগল বৈকি,যখনি মাচা ছেড়ে উঠে হাঁটা দিলাম ঐ বৈরাগী এসে ধরল পিছন থেকে। এবার অন্যদিক থেকে কথা শুরু করল,কয়েক মিনিটের কথায় যা বুঝলাম সেটির সারমর্ম হল ঘোঁড়ারটেক জায়গাটা একটা পতিতালায়।
এহেনকালের দীর্ঘভ্রমনে ভাবিনি আঁধ মাইল দুরত্বে পতিতালায়ের সন্ধান পাইব। উপেক্ষার কাল মনেহয় পেরিয়ে এসেছি তাই ধীর কদমে এগুতে লাগমাম বৈরাগীর পিঁছু পিঁছু। দুর থেকে আলো দেখতে পেলাম কিন্তু আলো যে কতদুর তাহা বোধগম্য হইল না। গ্রামের নিষ্কন্টক মেঠোপথ তবু ঘামতে শুরু করলাম। কিছুতেই নিজ সত্তাকে বুঝাইতে পারলামনা; নিজের ভেতর অন্য সত্তা দেখতে পেলাম যে শুধুই ভোগের মোহনায় নিজেকে ছেড়ে দিতে চায়,যে স্রষ্ট্রার চির ধর্ম প্রজনন রক্ষায় আজ প্রথম পেরেক ঠুকতে চায়।
জায়গাটা টিলার মতন যেখানে ছোট ছোট টিলার নিচে আট-দশটা টিনের ঘর। কতিপয় বৈরাগিকে পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে তার দেখানো একটা ঘরে কড়া নাড়লাম।
হলুদ রংয়ের দশহাতি কাপড় পরা ১৩-১৪ বছর বয়সের একটা মেয়ে। ছোট্ট একটা মেয়ে দেখেই বোধহয় কিছু বলার শক্তি পেলাম। তোমার নাম?
-কচি কন্ঠে উত্তর আসল 'মালা'
নিজেকে নিয়ন্ত্রনের সর্বোচ্চ চেষ্টায় মালাকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে দিলাম,দৌঁড়ে দরজায় খুলে বেরিয়ে আসলাম।
মাথায় রক্ত উঠে আসল আর আমি দোঁড়াচ্ছি...ঠিক দিশ করতে পারলামনা কোনদিকে সেই মেঠো পথটা আর বাজার। ফিনকি দিয়ে লাল বেরুতে লাগল,কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়েছি বোধহয়। খোলা একটা জায়গায় এসে আর কিছু দেখতে পেলাম না। তবু হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে লাগলাম। হটাত্ শোঁ শোঁ বাতাস শরীরে দোলা দিয়ে গেল।
ক্ষীন একটা আলো দেখতে পেলাম,সামনে নদী আর লন্ঠন জালিয়ে মাঝি ওপারে চলে যাচ্ছে। বাঁচার শেষ চেষ্টায় ডাকতে চেষ্টা করলাম,কন্ঠেই মাঝি শব্দটা বিঁধে রইল। তবু চিত্কার করে ডাকতে লাগলাম,মাঁঝি...মাঁঝি...মাঁঝি। .। ।
.। । .। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।