ভালবেসে বিয়ে করার ৬ মাস পরে মাত্র ৭০০ টাকায় স্ত্রীকে মাদারীপুর পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছে স্বামী। রোববার বিকালে মাদারীপুর শহরের পুরানবাজার এলাকার দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম পতিতাপল্লীর সামনে থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ফাতেমা আক্তার (২২) নামের ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ৫ই আগস্ট গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মধ্য এলাকা গ্রাম থেকে স্ত্রীকে নিয়ে আসে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ কৃষ্ণনগর গ্রামের মান্নান সরদারের ছেলে আবদুল আজিজ সরদার (৩৫)। পরে তাকে মাদারীপুর পতিতালয়ের সুরমা বেগম নামের এক সর্দারণীর কাছে বিক্রি করে দেয়। রোববার বিকালে ফাতেমাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করতে মারপিট করার খবর পেয়ে র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি দল তাকে উদ্ধার ও পতিতালয়ে নারী পাচারকারী আজিজ সরদারকে গ্রেপ্তার করে।
ক্যাপ্টেন সিরাজুল ইসলাম জানান, ফাতেমাকে তার স্বামী আজিজ পতিতালয়ে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও মাত্র ৭০০ টাকা দিয়েছে পতিতালয়ের সুরমা নামে এক সর্দারণী।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে গাজীপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় আজিজের। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মন দেয়া নেয়ার পরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের তিন দিন পরে মেয়েটি জানতে পারে আজিজ বিবাহিত এবং তার ঘরে আরেক স্ত্রী রয়েছে। এরপর দু’জনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়, আজিজ মাদারীপুরে চলে আসে।
গত ৫ই আগস্ট গাজীপুর গিয়ে স্ত্রীকে বুঝিয়ে শুনিয়ে সে মাদারীপুর নিয়ে আসে। রাতেই আজিজ তার স্ত্রীকে নিয়ে মাদারীপুর পতিতালয়ের একটি ঘরে থাকে। সকালে আজিজের স্ত্রী বুঝতে পারে যে তারা পতিতালয়ের মধ্যে রয়েছে। শুধু ফাতেমার সঙ্গেই নয় এই বখাটে আজিজের বিরুদ্ধে আরও অনেক মেয়ের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের অপকর্ম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ফাতেমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী আমাকে মাদারীপুরে তার বোনের বাসায় রাখার কথা বলে পতিতালয়ের সুরমা নামের এক মহিলার কাছে রেখে যায়।
আমি যখন বুঝতে পারি যে আমাকে পতিতালয়ে এনে রাখা হয়েছে তখনই স্বামীকে অনুরোধ করি এখানে থেকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে। আমি তার কাছে জানতে চাইলে আমাকে বলে যে, আমাকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ৬ তারিখ সারাদিন আমাকে একটি ঘরে আটকে রাখে। রাতে আমাকে বলে, আমাকে খারাপ কাজ করতে হবে। রাতে সে আমার সঙ্গে এক ঘরে ছিল, সারারাত আমি কান্নাকাটি করি।
পরে জানতে পারি আমাকে দশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হলেও আজিজকে মাত্র ৭০০ টাকা দিয়েছে। সকালে আমি কান্নাকাটি শুরু করলে খবর পেয়ে র্যাব এসে আমাকে উদ্ধার করে। স্বামী আজিজ সরদার র্যাব ও সাংবাদিকদের জানায়, দশ হাজার টাকার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে বিক্রি করে দিয়েছি। যৌনকর্মী সুরমা আমাকে মাত্র ৭০০ টাকা দিয়েছে। এই কাজ করা আমার ঠিক হয়নি।
আমি আমার বিবাহিত স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি করে ভুল করেছি। মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, স্বামীসহ ওই তরুণীকে র্যাব পতিতালয় থেকে উদ্ধার করে থানায় দিয়েছে। এই ঘটনায় ওই তরুণীর অভিযোগ অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দু’জনই থানা হেফাজতে রয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।