আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুহূর্তেই ফিকে হয়ে গেল একটি পরিবারের স্বপ্ন

বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের ট্রাকে ছোড়া হাতবোমায় নিহত হন কনস্টেবল সিদ্ধার্থ চন্দ্র সরকার। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের আশ্রমপাড়া গ্রামের বিমল চন্দ্র সরকারের বড় ছেলে তিনি।
বিমল চন্দ্র ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শুক্রবার কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদকের।
বিমল জানান, তিন ছেলের মধ্যে সিদ্ধার্থ সবার বড়। এক টুকরো বাসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো আবাদি জমি নেই।


“পরের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতাম। তিন ছেলের লেখাপড়াও চলতো এ থেকেই। এইচএসসি পাশ করে তিন বছর আগে পুলিশে চাকরি নেয় সিদ্ধার্থ। এরপর থেকে সংসারের খরচের একটি বড় অংশ আসতো তার কাছ থেকে। ”
সিদ্ধার্থের এক ভাই এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।

অন্যজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে বলে জানান তিনি।



সিদ্ধার্থের স্ত্রী দীপ্তি রানীও পুলিশ কনস্টেবল। তিনিও রাজশাহীতে কর্মরত।
ছয় মাস আগে একে অন্যকে ভালোবেসে তারা বিয়ে করেছিলেন বলে জানান সিদ্ধার্থের বাবা।
“সিদ্ধার্থের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল গত মঙ্গলবার।

মোবাইল ফোনে সে বলেছিল, বাবা রাজশাহীর অবস্থা ভালো নয়। তোমাদের আর বেশি দিন কষ্ট করতে হবে না। পরে কথা বলবো,” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিমল চন্দ্র।
ছেলে হারানোর শোকে মুহ্যমান মা প্রেয়সী সরকারের একটাই আকুতি, “আর যেনো আমার মত কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। ”
সিদ্ধার্থের ছোট ভাই পার্থ চন্দ্র বলেন, দুর্গাপূজার ছুটিতে দাদা বাড়িতে এসেছিল।

সে ফোন করলেই বাবা-মা সব সময় সাবধানে দায়িত্ব পালন করতে বলতেন।
“লেখাপড়া করে আমিও যাতে পুলিশে চাকরি নিই দাদা সব সময় আমাকে সেই উৎসাহ দিত। ”
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, রাতেই সিদ্ধার্থের মরদেহ এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এরপর তার সৎকারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী শহরের রাজাহাতা লোকনাথ স্কুলের পাশের মোড়ে ১৮ দলের মিছিল থেকে পুলিশের ট্রাকে বোমা ছোড়া হয়।


বোমার বিস্ফোরণে নয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এর মধ্যে সিদ্ধার্থকে ঢাকায় পাঠানোর পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।



ওই মিছিলের আগে ১৮ দলের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা পুলিশের ওপর হামলার হুমকি দেয়ার আধা ঘণ্টার মাথায় এই হামলা হয়।
এর আগেও রাজশাহীতে পুলিশের ওপর কয়েকদফা হামলা হয়।
গত ৩১ মার্চ নগরীর রাণীনগর এলাকায় বোমা হামলায় এক এসআইয়ের দুই হাতের কব্জি উড়ে যায়।

পরদিন শালবাগান এলাকায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে এক এসআইয়ের মাথা থেতলে দেয়।
এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর কোর্ট স্টেশন মোড়ে পুলিশের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং গুলিতে এক পুলিশ আহত হন।
১০ ডিসেম্বর বিনোদপুরে পিটিয়ে এক ওসির পা ভেঙে দেয়াসহ ছয় পুলিশে জখম করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.