ভারতের রাজধানী দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আম-আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিলি্লর বিধান সভার নির্বাচনে তিনি ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম পরিচিত মুখ ও তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে হারিয়ে চমক দেখান। তার নেতৃত্বাধীন এক বছর বয়সী আম-আদমি পার্টি বিধান সভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আত্দপ্রকাশ করে। কংগ্রেসকে তৃতীয় স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। নির্বাচনে কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
আম-আদমি পার্টি সিদ্ধান্ত নেয় তারা কোনো দলের সঙ্গে বিশেষ শর্তে আবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করবে না। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস আম-আদমি পার্টিকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমতার বাইরে থেকে সমর্থন জানালে জনপ্রত্যাশা পূরণে সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শপথ নেওয়ার আগে তিনি ঘোষণা করেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি সরকারি ভবনে বাস করবেন না। নেবেন না সরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা। এমনকি তিনি বা তার মন্ত্রীরা কোনো সরকারি যানবাহন ব্যবহার করবেন না।
ট্রেনে চেপে সাধারণ মানুষের মতোই তিনি অফিসে যাবেন। বাসায় ফিরবেন তাদের মতোই। তার এই অনুকরণীয় পদক্ষেপ ভারতীয় রাজনীতিতে যেমন প্রতিক্রিয়া ফেলেছে, তেমন উপমহাদেশের রাজনীতিতেও ফলপ্রসূ প্রভাব রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার এক সাধারণ সমস্যা। এক সময় ভারতীয় রাজনীতিকদের ত্যাগ ও সততার সুনাম ছিল আকাশছোঁয়া।
কিন্তু দ্রুত পুঁজির বিকাশ ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন স্তরে যেমন সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিয়েছে তেমনি সৃষ্টি করেছে অবক্ষয়। এ অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিলেন গান্ধবাদী সামাজিক নেতা আন্না হাজারে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করতে এক বছর আগে কেজরিওয়াল রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। আন্না হাজারে থেকে যান সামাজিক আন্দোলনের পরিমণ্ডলে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বেছে নেন ঝাড়ু। ঝাড়ু যেমন ঝেঁটিয়ে আবর্জনা দূর করে, দুর্নীতিকে সেভাবে দূর করার যে প্রত্যয় তিনি ঘোষণা করেন তা বিপুল জনসমর্থনও পায়। ভারতে দুর্নীতিবিরোধী রাজনৈতিক দলের উদ্ভব দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকেও বিপুলভাবে প্রভাবিত করবে বলে আমাদের ধারণা। আমাদের বিশ্বাস, অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার লক্ষ্য পূরণে শুধু সফলই হবেন না, অন্যদের জন্যও আশার আলো জ্বালাতে সক্ষম হবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।