ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘হিংসার বলি ১৯, জিতছেন হাসিনাই’ এই শিরোনামে বাংলাদেশের নির্বাচনের খবর প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, লাগামছাড়া হিংসার মধ্যেই রবিবার ভোট দিল বাংলাদেশ। ১৪৭টি আসনের ১৮ হাজারের কিছু বেশি ভোটকেন্দ্র নিয়ম মেনে সাতসকালেই খোলা হয়েছিল। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাতে গোনা কিছু ভোটার ভোট দিতে আসেন। সেই ভোটে প্রত্যাশা মতোই অনায়াসে জিতলেন আওয়ামী লিগের নেতৃত্বাধীন শাসক জোটের প্রার্থীরা।
রংপুর ও গোপালগঞ্জের দুটি আসনেই বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে রংপুরের একটি আসনে জিতলেও লালমণির হাটে আওয়ামী লীগ প্রার্থী, প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের কাছে পরাজিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হুসেইন মহম্মদ এরশাদ। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তার ভাই ও প্রাক্তন মন্ত্রী গোলাম মহম্মদ কাদের। বিএনপি-জামায়াত ভোটে না-আসায় জাতীয় পার্টিই বিরোধী আসনে বসবে নতুন সংসদে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে লেখা হয়, স্কুল পোড়ানোর পরে রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় বুথে বুথে সশস্ত্র হামলা।
রাজধানী ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার বজ্রআঁটুনিতে হিংসা মারাত্মক আকার নিতে পারেনি। তবে ঢাকার বাইরে দেশের সর্বত্র ভোট বানচালের লক্ষ্যে মরণকামড় দেয় জামায়াতে ইসলামী ও তার সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি, গুলি, কাঁদানে গ্যাস চালিয়েছে পুলিশ ও সেনা। সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন। ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার পুড়িয়ে দেওয়ায় সকাল ১০টার মধ্যেই ১৪৭টি বুথের ভোট স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন।
বিকেল ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার পরে বুথে বুথে শুরু হয় গণনা।
প্রতিবেদনে লেখা হয়, নির্বাচনী সরকার নিয়ে মতভেদের কারণে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামাত জোট ভোট বর্জন করায় ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে একজন করে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান। তার মধ্যে ১৩২টিই পায় আওয়ামী লীগ ও তার শরিকরা। বাকি আসনগুলোতে একাধিক প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার নামগন্ধ ছিল না। এ দিকে নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিরোধী জোট আগের দিন থেকেই হরতাল ডাকে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই ‘প্রহসনের ভোট’ বাতিলের দাবিতে কাল থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি-জামাত। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ওসমান ফারুক এই হরতালের ডাক দিয়ে বলেন, ফাঁকা ভোটকেন্দ্রগুলোই প্রমাণ করে মানুষ এই সরকার ও তাদের এই সাজানো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। ' আওয়ামী লীগের নেতা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর আবার ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট। তার কথায়, অনেক সাধ্যসাধনা করেও বিরোধীদের নির্বাচনে আনা যায়নি। কিন্তু সংবিধানের শাসন সমুন্নত রাখতে এই নির্বাচন করাটা সরকারের বাধ্যবাধকতা ছিল।
বিরোধীদের লাগাতার হিংসা ও হুমকিতে ভোটের হার যে কম হবে, তা ভাবা গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও বহু মানুষ ভোট দিতে এসেছেন। নির্বাচনটা যে করা গেল, সেটাই সব চেয়ে বড়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।