নতুনদিনের মিছিলে,একজন বেয়নেটধারী সৈনিক কয়েকদিন থেকেই মনের শরীরটা ভালো যাচ্ছেনা। কোনভাবেই মনটাকে স্থির করতে পারছিলাম না। এই সময়ে হঠাৎ সামুর ব্লগারদের পিকনিকের বার্তা পেলাম। ফেবুর পিকনিক গ্রুপে আড্ডা দেই। অনেক মজা হয়।
ভাবি, যাবোনা। আমার মন খারাপটা কাউকে স্পর্শ করুক চাইনি। আবার পিকনিকটাও মিস করতে রাজি ছিলাম না। কি আর করা! মনখারাপটাকে আড়ালে রেখে নিজেকে লুল ঘোষনা দিয়ে পিকনিকে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
১৩ তারিখে যাত্রা শুরু করলাম।
সকাল সাতটায় আমি, নোমান নমি আর আলমাস(ধুসর ধ্রুব)। আমরা তিনজনে মোহাম্মদপুর থেকে চা পান করে রওনা দিলাম। আড্ডা শুরু হলো। তিনজনে জমিয়ে আড্ডা দিতে দিতে পৌছে গেলাম শাহবাগ। সেখান থেকে যাত্রা শুরু হবে।
পৌছে দেখি, ফাঁকা ময়দান! কেউ নাই! শাহেদ ভাই, গীটার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আস্তে আস্তে সবাই আসতে শুরু করলেন! আশকারি এলো তার বাবাকে নিয়ে। নিমচাঁদ ভাই এলেন তার ছেলেকে নিয়ে। ছোটমির্জা এলেন,নষ্টকবি এলো। ওহো! আসল কথাইতো বলা হয়নি, ব্লগাররা আসার প্রাক্কালে বাসে কিছু রমনী বাসে শেষবারের মতো রূপচর্চা করে নিচ্ছিলেন,তাদের নাম জাতির সামনে প্রকাশ না করে পারলাম না।
অপরিনীতা, নিশাত, হানী, আরেকটা আপু। আড্ডা আরো জমে উঠলো! শিপু ভাই এলেন, হাওয়াই মিঠাইয়ের ফেরিওয়ালা হয়ে। সঙ্গে শিপুভাবী আর পার্লিন। জিসান মামা এলেন, একা! একা কেনো? হেলাল মামা কই! জিজ্ঞেস করলাম। বললেন, বাসে উঠে জানাবেন।
বাস চলতে শুরু করলে জানালেন। মন খারাপ হয়ে গেলো! তারচাইতে বেশি মুগ্ধতা আর শ্রদ্ধায় মন ভরে উঠলো হেলাল মামার প্রতি। আমাদের আনন্দ আয়োজনের এতটুকু ক্ষতি হবে ভেবে, তার সমস্যা লুকিয়ে গেছেন!
বাস চলতে শুরু করলো! আমার পূর্বঘোষিত লুলামী শুরু হইলো ব্লগার নীলপরীর সাথে। মাঝখানে মনসুর জ্যাডা আসিয়া কাবাব মে হাড্ডি হইলেন। দুষ্টলোক সর্বদাই বিদ্যমান! আফসুস।
কিছুকাল লুলামী করিয়া ক্লান্ত হইয়া পড়িলাম। পেছনে তখন শাহেদ ভাই তার গীটার আর নষ্টকবি তাহার হারমোনিকা বাজিয়ে জমিয়ে ফেলেছেন। তাদের টানে পেছনে চলে গেলাম। বেসুরে গলায় চিৎকার করে গাইলাম দারুন সব গান। পথে পথে থামলাম, আরো কয়েকজনকে তুলে নিতে।
অবশেষে গন্তব্যে পৌছালাম। পৌছেই শুরু হলো পরিচিতি পর্ব। সবাই সবার পরিচয় দিলাম। তারপর শুরু হলো আড্ডা। জাহিদ ভাই ঘোষনা দিলেন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হইবে।
সবাই দল দিন। দিলাম। আমার দলে ছিলেন, আশকারি, নোমান ভাই, দুর্জয় ভাই, জাভেদ ভাই, নির্ভীক যুবক। মনসুর জ্যাডা আর নিমচাঁদ ভাইয়ের সুক্ষ ষড়যন্ত্র স্বত্বেও আমরা অপরাজেয় চ্যাম্পিয়ন হইলাম। সামুর ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে আমাদের নাম স্বর্নাক্ষরে লেখা হোক।
তারপর মেয়েদের বালিশখেলা হলো। সঞ্চালক কে ছিলেন জানেন? আশকারির বাবা! বাচ্চাদের বিস্কুট দৌড় হলো। এই দৌড়ে অংশ নিলেন, মনসুর জ্যাডা আর আশকারিও!
সবচাইতে মজার ব্যাপার হলো, পিকনিক মনে হয় এটাই। এতো বিশাল এলাকা। কোথাও হারিয়ে যাবার বাধা ছিলোনা।
কিন্তু কিসের টানে যেনো সবাই একসাথে ছিলাম!
অবশেষে ফেরার পালা! ফিরতি পথে আবার সেই শাহেদ ভাইয়ের গীটার আর নষ্টকবির হারমোনিকা। সাথে এবার পানকৌড়ির গান। নারী ব্লগাররাও জমে গেলেন! এই ফাঁকে আমি আবার একটু লুলামী করে এলাম! আমরা পেছনে শিপু ভাই,স্বর্নমৃগ, পুশকিন ভাই, ছোটমির্জা সহযোগে ১৮+ আড্ডা বসাইলাম। আমাদের আড্ডার বেশির ভাগ সময় কেটেছে আশকারির দিকে কড়া নজর রেখে। পিচ্ছিটা কান পেতে ছিলো! (পিকনিকের বর্ননা বেশি দিলামনা।
আর সবাই পোষ্টে ব্যাপক বর্ননা দিছেন। )
যারা পরিবার নিয়ে এসেছিলেনঃ শিপু ভাই, জাহিদ ভাই, অথৈ সাগর ভাই, আশকারি, নিমচাঁদ ভাই, ববি আপু, নীরব দর্শক। (অবশ্য আমরা সবাই একটা পরিবার)
যাদের দেখে বুড়ো হতে আর ভয় নেইঃ মোজাম ভাই ও তার বন্ধু, জিসান মামা, আশকারির বাবা, নিমচাঁদ ভাই।
যারা পিকনিক মাতিয়ে রেখেছেনঃ ছোটমির্জা, মনসুর জ্যাডা, পানকৌড়ী, শাহেদ ভাই, নষ্টকবি।
তারুন্যের কবিতারাঃ নোমান নমি, পুশকিন ভাই, ফারজুল ভাই, সবুজ ভীমরুল, জাভেদ ভাই, আলমাস ভাই, সুমন ভাই, ছবিওয়ালা, নির্ভীক যুবক, দুর্জয় ভাই, রিয়েল রিফাত,গুরুজী, আশকারি আর আশরাফ ভাই(২০ টাকা জিতে ৫০ টাকা খাইয়েছেন)।
নারী সিন্ডিকেটে ছিলেন যারাঃ হানী, শারমিন সোনালী, নীল_পরী, নিশাত, অপরিনীতা।
যিনি ছিলেন সবার চাইতে আলাদাঃ স্বর্নমৃগ
যার কাছে ক্ষমাপ্রার্থীঃ নীলপরী আপু। আমার উপর বিরক্ত হয়েছেন কি?
পিকনিকজুড়ে যাদের ব্যাস্ততা ছিলো লক্ষনীয়ঃ জিসান মামা, শিপু ভাই, আরিফ রায়হান মাহি ।
একজনকে উদ্দেশ্য করি বলিঃ বেড়ে উঠো, মনের দিকে দিয়ে। যেটুকু তুমি শরীরে বেড়েছো।
উৎসর্গঃ নিমচাঁদ ভাইয়ের অটিজমে আক্রান্ত ছেলের জন্য। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।