আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্হবির হয়ে যাচ্ছে আর্থনীতির চাকা!! বাড়ছে বেকারত্বের দির্ঘ লাইন!! মুক্তি মিলবে কবে??...

আমি মনে প্রাণে একজন মুসলিম। ঘৃণা করি ধর্ম বিদ্বেষী নাস্তিকদের এবং ধর্ম ব্যবসায়ী ছাগু তথা উগ্রবাদীদের। ক্যঁচাল পছন্দ করিনা । ।

অনেকটা স্হবির হয়ে পড়েছে দেশ।

দিন-রাত মিলে মাত্র দু-তিনটে ট্রেন আসে
আমাদের মফস্বল শহরের ষ্টেশনে। তাও আবার শিডিউল বিপর্যয়ে ট্রেন চলছে। দিনের
ট্রেন আসে রাতে আর রাতের ট্রেন দিনে। মাঝে মধ্য হুট-হাট করে ক্যনসেল হয় ট্রেনের যাত্রা।
যাত্রীরা পড়ে মহা বিপাকে।

এমনটিই চিত্র দেখা যাচ্ছে ট্রেনের যাত্রীসেবার পরিসরে।

বাস তো পুরোই বন্ধ। চলছে অর্নিদিষ্টকালের লাগাতার অবরোধ। সাথে যোগ হয়েছে হরতাল।
শহরের রাস্তাগুলিতে লোকজনের কোলাহলের বদলে যেন ধুধু করছে।

নিঃস্তব্ধ নিরবতা..
মাঝে মাঝে ট্রেনের হুইসেল শোনা যায়…তখন মনে হয় শহরটার কিছুটা হলেও প্রাণ চান্ঞ্চল্য কোন রকমে টিকে আছে। মাঝে মধ্য কিছু কিছু ঢাকা ফেরৎ লোকজনের দেখা মেলে। ট্রেনে করে চলে এসেছে তারা
নিজের জেলায়। অনেকে রিক্সা-ইজিবাইকযোগে ফিরে যাচ্ছে নিজ নিজ গ্রামে। ঢাকাফেরৎ অধিকাংশ লোকজনের মুখে হতাশার ছায়া দেখা যায়।

দির্ঘদিন ধরে চলা হরতাল-অবরোধেও শহরের রাস্তায় চলতে দেখা যেত ইজিবাইককে কিন্তু গতকালের হরতালে শহরের বিভিন্নস্হানে হরতাল সমর্থক পিকেটারদের ভাংচুরে এখন ইজিবাইকেরও দেখা পাওয়া দুস্কর হয়ে উঠেছে। ঢাকা ফেরৎ বেশ কজন লোককে জিজ্ঞেস করলাম বাড়ি এলেন কেন এই দুঃসময়ে??...
তাদের মুখখানা মলিন হয়ে গেল। বললো ’বাহে হামরা যে গামেন্টসে চাকুরী করতাম সেই ফ্যক্টরী মালিকে বন্ধ করি দিছে’ কামাই কাজি কিছু নাই ঢাকাত থাকি কি করুম??... তাই বাড়ি চইলা আসলাম….কামলা কৃষাণ দিয়া হইলেও পেটতো চালাইতে হবে!!... ওদের দির্ঘস্বাস যেন হ্রদয়ের কুঠুরিতে জোড়ে জোড়ে প্রকম্পিত হতে থাকলো….
টিভির খবরে প্রায়ই দেখি বিকেএমইএ, বিজেএমইএ,বিটিএমইএ সহ এফবিসিসিআইয়ের সভাপতিরা প্রায়ই ব্রিফিং করেন এবং বলেন আমাদের রপ্তানী শিল্প ৫০% ঝুকির মধ্য রয়েছে...এভাবে আর কিছুদিন চললে হয়তো কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। বিদেশী অর্ডার কমে গেছে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্হিরতায় ভিয়েতনাম, মিয়ানমার এবং বিভিন্ন দেশে অর্ডার দিচ্ছে। সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারার কারনে কোম্পনীগুলিকে বিপুল অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে।



হয়তো তারই বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে এখন। দেশের সর্ববৃহৎ রপ্তাণীমুখি এই শিল্পর সাথে আঙাঙীকভাবে জড়িয়ে আছে এদেশের লক্ষ কোটি শ্রমিকের রুটি রুজী। এভাবে দিনের পর দিন এই শিল্প যদি ধংস হয়ে যায় তাহলে অর্থনীতির চালিকা শক্তি ভেঙে পড়বে….বাড়বে বেকারত্বের দির্ঘলাইন। বেড়ে যাবে চুরি,ডাকাতী-চিনতাইয়ের মত অপরাধ।

শহরের যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা আছেন তারাও অনেকটা গুটিয়ে সুটিয়ে থাকেন।

সন্ধ্যার পর তাদের রাস্তায় দেখা যায়না…শীতের সময়ে স্বল্পতম দিনের দের্ঘ্যর কারনে সন্ধ্যায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা প্রকৃতির আধাঁরে দুস্কৃতিকারীদের ভয়ে আনেকটা আতংগ্রস্হভাবেই তারা বাসার চার দেয়ালের মাঝে নিজেদের বন্দি করে রাখেন।
একেতো হরতাল অবরোধে ব্যসসা বাণিজ্য লাটে ওঠার দশা! অন্যদিকে পাড়া মহল্লার খেটে খাওয়া মানুষজন কাজ না পেয়ে এইসব ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা-পয়সা ধারের জন্য ছুটেন!!.. সবমিলে কেমন যেন নৈরাশ্য আর অরাজকতার চিত্র এখন গ্রাম থেকে শহরের অলি-গলিতে।

যারা পরিবহন সেক্টরে কাজ করেন অর্থাৎ মোটর শ্রমিক বা মোটর মালিক উভয়েরই অবস্হা বেগতিক!!.. ঈদের পরে সবমিলে নাকি ৮ দিন তারা কাজ করার সুযোগ পেয়েছে!! বাকী দিনগুলি কোনরকম বাসের মালিক কতৃক খোরাকীর ১০০ টাকা আর
নিজের পরিচিতজনদের থেকে ধার-দেনা করে দুমুঠো অন্ন জোগাড় করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন…..

কৃষক এবং কৃষিপণ্যর কথা??...
পরিবহন ব্যবস্হা ভেঙে পড়ার কারনে কৃষকের বাম্পার উৎপাদন হওয়া শীতকালীর সবজীর বর্তমানে ক্রেতা নেই বললেই চলে!!...
মাঝে মাঝে কৃষক নিজেই কিছু সবজী ভ্যন ভাড়া করে শহরের দিকে নিয়ে আসেন একটু নায্য দামের আশায় কিন্তু অভ্যান্তরীন চাহিদা কম এবং বাহিরের জেলায় পণ্য পরিবহনের সমস্যার কারনে পাইকারী আড়ৎগুলিতে পানিরদামে (নামমাত্র মূল্যে) বিক্রী করে কপালে হাত দিয়ে বাড়ি ফেরেন!!.. এই হচ্ছে কৃষকের অবস্হা!!...
অনেক কৃষক ক্ষুব্ধ হয়ে উৎপাদিৎ বাহারী সবজী গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন।

সেদিন দেখলাম একজন লোক বস্তা ভর্তি সবজী কিনে ভ্যনে চড়ে বাড়ি ফিরছেন।
জিজ্ঞাসা করলাম কি কি কিনলেন??.. কত করে কেজি??...
বস্তার মুখ খুলে দেখালেন বড় বড় সাইজের বেগুন মাত্র দুইটাকা সের!! বাঁধাকপি চারটাকা সের!! আর ফুলকপি পাঁচটাকা সের!! বললাম কোথা থেকে এত সস্তা দামে কিনলেন ভাই??
বললেন বেড়াডাঙা রাস্তার পাশে গৃহস্হরা সবজী নিয়ে বিক্রী করছে সেখান থেকেই কিনলাম।



সর্বোপরিভাবে দেশের অর্থনীতি আজ বিপযস্ত!! বিধস্হ!!...
কৃষক, শ্রমিক,ব্যবসায়ী থেকে শিল্পমালিক শ্রমিক,পরিবহন মালিক-শ্রমিক থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি নাগরিকের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে….
না পারছে কেও হাত পাততে না পাড়ছে এ যাতনা সহ্য করতে…..
বিশেষ করে যাদের ঘামের চাকায় সচল ছিল দেশের অর্থনীতি তারাই আজ অর্থের অভাবে ভবিষ্যতের দিনগুলি নিয়ে শন্কিত!!.. না জানি আবার র্দুভিক্ষর করাল গ্রাস যেন ছুতে না পারে আমাদের অর্থনীতিকে।
আর দিনে দিনে দির্ঘ থেকে দির্ঘতর হচ্ছে বেকারত্বের অভিসাপ!!....
এ সংখ্যা যে কতদূর দির্ঘায়িত হবে তা আগামী ভবিষ্যৎই তা বলে দিবে।


২০১৩ শেষ হয়ে ২০১৪ সালের নতুন সুর্য উদিত হয়েছে বাংলার আকাশে।
ভেবেছিলাম বিগত বছরের সকল গ্লানি আর হতাশা থেকে মুক্ত হবে জাতী।
পরিবর্তনের নতুন সুর্য আলো ছড়াবে প্রতিটি জনপদে প্রতিটি বাসস্হান-কর্মক্ষেত্রে…সেখানে নতুন বছরের শুরুতেই দেশ এক টালমাটাল অবস্হায়!!...
কবে বদলাবে আমাদের রাজনীতির সংস্কৃতি আর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ??..
যেখানে গনতন্ত্র পাবে এক প্রাতিষ্ঠানিক রুপ….আমাদের সকলের মধ্য গনতান্ত্রিক চর্চা সমুন্নত হোক।



মনে প্রাণে প্রার্থনা করি…..আমাদের অর্থনীতির চাকা যেন থমকে না দাড়ায়…কেটে যাক রাজনৈতিক অস্হিরতা….সবাই ফিরে পাক হাসি-খুশিভরা মনে কাজ করার উদ্দ্যেমতা…দেশটা আবারো ঘুরে দাড়াক এই প্রত্যাশাই করছি অবিরত। ।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।