বেলা এখন এগারোটা অভাগা এই দেশে বেকারের সংখ্যা কত? - এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর দেয়া না গেলেও জানা যায় বেকারের হার প্রায় ৪০% যারা কোন না কোন ভাবে বেকার। সরকারী হিসাবে এই হার হচ্ছে মাত্র ৫%। সরকারী হিসাবে যারা কোন না কোন ভাবে কাজ করেন - যেমন যিনি টিউশনি করেন, দৈনিক মজুরীতে কাজ করেন (মানে কাজ আছে তো বেতন আছে, কাজ নেই তো বেতন নেই এরাও কিন্তু বেকার নয়), হোম মেকার যেমন কারো বিবাহিত স্ত্রী যিনি বাসায় রান্না করেন তিনিও বেকারের হিসাবে যুক্ত হবেন না। সমস্যা হচ্ছে গরীব মহিলারা কিন্তু কাজের খোঁজ করেন, যদিও তাদের বেকার হিসাবে ধরা হয়না। আমাদের অন্যান্ন পরিসংখ্যানের মত সরকারী এ হিসাবও ত্রুটিযুক্ত।
এবার আসুন বেকার সমস্যা সমাধানের কাজ কি শুধু সরকারের - উত্তর হচেছ অবশ্যই না, তবে সরকারকে এ সমস্যা সমাধানে বড় নিয়ামকের ভূমিকা পালন করতে হয়। একটি দেশে সরকারই সবকিছু নয়। জনগণকেও নিজের দায়িত্ব নিতে জানতে হয়, শিখতে হয়। সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে আপনি যাতে আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন সে সুযোগ তৈরি করে দেয়া। সরকার তার দায়িত্ব পালন করেন আর্থিক খাত, বানিজ্যিক এবং সেবা খাতের সুষ্ঠু ব্যাবস্হাপনার মাধ্যমে জনগনের জন্যে সম অংশগ্রহনের বা অংশের সুযোগ নিশ্চিৎ করার মাধ্যমে।
সম অংশগ্রহনের সুযোগ এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তার নীতি এবং কর্মকান্ডের মাধ্যমে জনগণের সবাই যেন সমান সুযোগ পায় সে নিশ্চয়তা দিবে, পাশাপাশি পশ্চাদপদ জনগোষ্টির জন সুযোগ তৈরি করে দিবে বিশেষ সুযোগ দানের মাধ্যমে।
একটি সমাজে বেকারত্বের অভিশাপ হচ্ছে যাবতীয় সামাজিক সমস্যার মূল। জনগণ যদি সমান সুযোগ না পায়, বেকারত্বের অভিশাপের সাথে সামাজিক বন্চনাও অধপতিত সামাজিক সমস্যা গুলোকে আরও প্রকট করে তোলে।
বেকারত্বের অভিশাপে যাতে ভূগতে না হয়, তার জন্যে প্রথমে নিজের ক্যরিয়ারকে ভবিষ্যত মুখি করে গড়ে তুলতে হয়।
ছাত্র অবস্হায় ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ি নিজেকে গড়ে তোলা হচ্ছে নিজের দায়িত্বের অংশ। অবশ্য একজন ছাত্র যাতে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাষ্ট্রের কাজ হচ্ছে সে অনুযায়ী সার্বিক সহযোগিতা করা। সরকার তার নীতি, পরিকল্পনা, এবং কাজের মাধ্যমে একজন ছাত্রকে মানব সম্পদ রুপে গড়ে তোলে।
এ ক্ষেত্রে সরকারে ভূমিকা এবং আপনার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে, আপনি অবশ্যই একজন মানব সম্পদে পরিণত হবেন - কারো কাছে চাকুরির জন্যে ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিতে হবেনা। তার পরও সমস্যায় পড়তে পারেন যদি সরকারের আর্থিক নীতি, বাজার ব্যবস্হাপনার নীতি, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নীতি গুলো যদি ঠিক ভাবে কাজ না করে।
এ ক্ষেত্রে সরকারের কাজ হচ্ছে সবার জন্যে সমান সুযোগ তৈরি করে দেয়া। সরকার পরিচালনায় কোন একটি নীতিতে বিচ্যুতি ঘটলে, বা বৈষম্য করা হলে, সার্বিক অব্যবস্হাপনা তৈরি হবে। এই সার্বিক অব্যবস্হাপনা সামাজিক বিশৃংখলা তৈরি করবে। বাংলাদেশে বর্তমান সামাজিক বিশৃংখলার তথা বেকারত্বের জন্যে আমাদের সবারই দায় এবং দায়িত্ব আছে।
হিসাব করে দেখুনতো আমরা কে কতটুকু নিজের দায়িত্ব পালন করছি, আর সরকারই বা কতটুকু কাজ করছে আমাদের অধিকার রক্ষায়? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।