সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান। গতকাল বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিকালে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
সকালে মরহুমের নিজ বাসভবনে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় দেশের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। শহীদ মিনারে মন্ত্রী, রাজনীতিক, আমলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি, ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দীর্ঘ লাইন দিয়ে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান তাকে। কফিন ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। এ সময় স্মৃতিচারণ করে মরহুমের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন তারা। স্মৃতিচারণায় বক্তারা বলেন, হাবিবুর রহমান ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের অনুরাগী ছিলেন, লিখেছেন গবেষণাধর্মী বই।
বাংলা ভাষাকে জীবনভর ভালোবেসেছেন তিনি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাস্তায় নেমেছেন। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের শেষ দিনে তিনি তার তহবিলে উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. কামাল হোসেন, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি, নগরবিদ নজরুল ইসলাম, এশিয়াটিক সোসাইটির সহ-সভাপতি মাহফুজা খানম, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান প্রমুখ। শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা শেষে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের মরদেহ আনা হয় বাংলা একাডেমিতে।
সেখান থেকে দীর্ঘ দিনের কর্মস্থল সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন তার সহকর্মী, বিচারপতি, বন্ধু, আইনজীবীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমান, সাবেক প্রধান বিচারপতি এম তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, এ এফ হাসান আরিফ, ফিদা এম কামাল, মইনুল হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, আনিসুজ্জামান, গোলাম আরিফ টিপু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আজমালুল হোসেন কিউসি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান এবং আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা। সুপ্রিম কোর্ট থেকে মরহুমের লাশ আনা হয় গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। দাফনের সময় বনানী কবরস্থানে মরহুমের স্ত্রী, দুই মেয়ে, জামাতা, শ্যালক, ভাগি্ন ছাড়াও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।