জীবনকে ভালোবাসি, তার চেয়েও বেশী ভালোবাসি মেয়েকে।
ব্লগে রুশানকে চেনেনা এমন খুব মানুষই আছেন মনে হয়। ব্লগে আমার ভালভাবে সক্রিয় হওয়া বলতে গেলে তখন থেকেই। আর ব্লগের প্রতি ভালবাসার জন্মটাও তখন থেকেই। অবাক হয়ে তখন দেখেছি মাঝে মাঝেই কোনও না কোনও সাহায্য মূলক পোস্ট আসতো আর কিছু মানুষ সেখানে যথাসাধ্য সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতো।
যার বা যাদের সাহায্যের জন্য পোস্ট আসতো তাদেরকে অনেকে চিনেওনা বা তাদের ব্যাপারে সব কিছু জানেওনা। তবুও তারা নিজের মানবিক গুণাবলীর বিচারে নির্দ্বিধায় সাহায্য করে থাকেন। এই ভালো মানুষগুলোর দেখা এখনো পাওয়া যায়, আর ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি আমাদের দেশে ভালমানুষের সংখ্যাই বেশী। দেশের যে কোন বিপর্যয়ে বা নিজেদের বিপদেও আমি দেখেছি কিছু মানুষ কোন কিছু না ভেবেই অন্যের উপকারে এগিয়ে আসে।
মনোবিজ্ঞানী আব্রাহাম মাসলোর থিওরি অনুসারে মানুষের আচরণ কিছু চাহিদা দ্বারা প্রভাবিত হয়। বাংলা করতে গিয়ে দেখলাম প্রকৃত ভালো বাংলা খুঁজে পাচ্ছিনা তাই ইংরেজিতেই দিতে হল।
1. Physiological needs
2. Safety needs
3. Belongingness & Love needs
4. Esteem needs
5. Cognitive needs
6. Aesthetic needs
7. Self Actulization
8. Transcendance
সবার বোঝার সুবিধার জন্য ছবি দিলাম।
যে মানুষগুলো অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসেন, এই Need hierarchy Model অনুসারে সবচেয়ে উঁচুতে তাদের অবস্থান। পরবর্তীতে এই মডেলকে রিভাইজ করে ৫টি স্টেজের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়।
৭ তারিখে শান্তা নামের ১১ বছরের একটি মেয়ের সাহায্যের জন্য একটি পোস্ট আসে সামুতে।
১১ বছরের এক মেধাবী কিশোরীর বাঁচার আকুতি : শুনবে কি??
আমিনুর ভাইকে আমি এই পোস্টের ব্যাপারে জানাই যেন শান্তার জন্য আমরা সম্মিলিত ভাবে কিছু করতে পারি। আমিনুর ভাই পোস্ট দেখার পর নিজে উদ্যোগী হন বরাবরের মত। কিন্তু তার ২/৩ দিন পর আরমান আমাকে ফোনে জানায় মেয়েটা মারা গিয়েছে। আমি খবরটা শুনে স্তব্ধ হয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ।
জানিনা কেন এতো খারাপ লাগছিলো মেয়েটার জন্য। আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আমরা সবাই অসহায় জানি। তবুও আমার বারবার মনে হচ্ছিল শান্তার জন্য যদি টাকার ব্যবস্থা আরও আগে করা যেতো তাহলে হয়তো শেষ ফাইটটা করা যেতো। আর তখন হয়তো এতো দ্রুত ও মা বাবার কোল খালি করে চলে যেতোনা। সেদিন রাতেও অনেক মন খারাপ ছিল।
অনেক কথা ভাবতে ভাবতে আমার হঠাৎ মনে হল আমাদের দেশে এমন শান্তা বা তার অভাবী পরিবারের মতো পরিবারের অভাব নেই। তাদের জন্য যদি আমরা কিছু করতে পারি তাহলে কেমন হয়। একটা ব্যাঙ্ক একাউন্ট যদি করা যায় যেখানে অন্তত ১০০ মানুষ যারা অন্যের বিপদে এগিয়ে আসতে সর্বদাই প্রস্তুত থাকে, তারা প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা (৫০০/ ১০০০) সেই একাউন্টে জমা করবে। এই টাকাটা আমরা শান্তার মতো কারো বিপদে কাজে লাগাতে পারবো সাহায্যের আবেদন পাওয়ার সাথে সাথেই। টাকা জমা হওয়ার জন্য আর তখন হয়তো আমাদের এক মাস বা পনেরো দিন অপেক্ষা করতে হবেনা।
ব্লগারদের মধ্য থেকে যে কোন দুজন একাউন্টের পরিচালনা বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজের দ্বায়িত্বে থাকতে পারেন। যার বা যাদের সাহায্যের প্রয়োজন হবে তারা সেই দুজনকে জানালে ওনারা সংশ্লিষ্ট অন্যদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সাহায্যের ব্যাবস্থা করে দিতে পারবেন। এগুলো আমার একান্তই নিজস্ব কিছু ভাবনা। অনেক নেতিবাচক ব্যপার আসতে পারে এই বিষয়ে। তবে আমার মনে হয় মানুষের জন্য ভালো কিছু করার ক্ষেত্রে শুধু আমাদের সদিচ্ছার প্রয়োজনটাই সবচেয়ে বেশী।
আজ তিতির আপুর পোস্ট দেখলাম একজন ডাক্তার আপু ৪ লক্ষ টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারছেনা। জানিনা আপুটার জন্য এই টাকার পরিমাণটা জমা হতে কতদিন লাগে আর ততদিনে আপুর শারীরিক অবস্থা কি হয়। আশা করি জয়ন্তী আপু খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন। মানবতার জয় হোক আরেকবার।
সবাই ভালো থাকুন এই দোয়া করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।