প্রশাসনিক ও আর্থিক কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটকে পুরোপুরি দ্বিধাবিভক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে আইসিসি। ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম(এফটিপি) অনুযায়ী এখন যেমন এক দেশ, আরেক দেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলছে। ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি আইসিসির সভায় যদি প্রস্তাবটি পাস হয়, তাহলে বাতিল হয়ে যাবে এফটিপি। দেশগুলো হারাবে পরস্পরের বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মতো র্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দেশগুলো।
আর বিশ্ব ক্রিকেটের মাতব্বর হয়ে যাবে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। প্রস্তাবে র্যাঙ্কিংয়ের তলানির দুই দলকে খেলতে হবে কন্টিনেন্টাল কাপ। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কখনো অবনমন হবে না। এই প্রস্তাবের বিপক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য প্রস্তাব নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
আজ বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় আইসিসির প্রস্তাবটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে। এরপরই এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে বাংলাদেশ।
আইসিসির ২১ পাতার খসড়া প্রস্তাব যদি পাস হয়, তাহলে ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টেস্ট খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। প্রস্তাবে অনুচ্ছেদ ছয়টি। চার নম্বর অনুচ্ছেদের তিন নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে 'র্যাঙ্কিং পদ্ধতি'র কথা।
সেখানে বলা হয়েছে ২০১৫-২০২৩ সাল পর্যন্ত টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের ৯ ও ১০ নম্বর দলকে খেলতে হবে আইসিসি কন্টিনেন্টাল কাপ। কন্টিনেন্টাল কাপে খেলে আইসিসির সহযোগী শীর্ষ আট দল। সর্বশেষ এই টুর্নামেন্টে খেলেছে আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নামিবিয়া, কানাডা, কেনিয়া ও নেদারল্যান্ডস। বর্তমানে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১০। এর ফলে পরবর্তী কন্টিনেন্টাল কাপে খেলতে হতে পারে বাংলাদেশকে।
অবশ্য ৯ নম্বর র্যাঙ্কিংয়ে থাকা জিম্বাবুয়েকেও খেলতে হবে বর্তমান র্যাঙ্কিং অনুযায়ী। প্রস্তাব অনুযায়ী কন্টিনেন্টাল কাপের চ্যাম্পিয়ন দল সুযোগ পাবে চ্যালেঞ্জ সিরিজ খেলতে। চ্যালেঞ্জ সিরিজটি হবে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বর দলের বিপক্ষে। দুই টেস্টের হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে দল দুটি। ২০১৫-২০২৩ সময়কালে কন্টিনেন্টাল কাপ হবে মাত্র দুটি।
ফলে র্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা বাংলাদেশকে হয়তো কন্টিনেন্টাল কাপেই খেলতে হবে। এই বিষয়টা গভীর ভাবনায় ফেলেছে বিসিবিকে। তাই আজ জরুরিভিত্তিতে বৈঠকে বসছেন পরিচালকরা। আইসিসির প্রস্তাব নিয়ে বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, 'এটা অনেক স্পর্শকাতর বিষয়। এখনই কিছু বলা যাবে না।
আগামীকাল (আজ) বিসিবির বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর আমাদের অবস্থান জানাবো। 'অবশ্য দিন কয়েক আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আইসিসির প্রস্তাব প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বলেও জানিয়েছিলেন, আইসিসির অপরাপর দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার পর মন্তব্য করব। কেননা এখনো আমরা কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনা করিনি।
তাই এ বিষয়ে কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। বিসিবি আজ সভা করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে। তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টি-২০ বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করার জন্যই হয়তো এখনই কোনো হার্ডলাইনে যাবে না বাংলাদেশ। অবশ্য ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি আইসিসির সভায় বিষয়টি ভোটাভুটিতে গেলে পাস না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি প্রস্তাবটি। কেননা ইতোমধ্যেই পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রস্তাবের বিপক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।