ক্ষেতা পুড়ি তোর ভালবাসার- ফিরিয়ে দে আগের সহজ জীবন আমার। ।
ক্যাপ্টেন ফিলিপস দেখেন নাই, তবে এই খানে গুতা দিয়ে আগেই রিভিউটা পড়েন অথবা ডাউনলোড করেন । তারপর এই পোস্ট পড়েন।
কাস্টিং
-===-
নায়কঃ খান, কাপুর, সিং এই জাতীয় কেউ।
নায়িকাঃ চোপড়া, কাইফ, মুখার্জী এই জাতীয় কেউ।
অন্যান্যঃ দূর মিয়া হিন্দি সিনেমায় এরা হলো, ফার্নিচারের মত। নাম জেনে লাভ নাই।
এইবার আসেন সিনেমা দেখা শুরু করিঃ
## প্রথমেই আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা সিজ্ঞাপুরের কোন উঁচু একটা বিল্ডিংকে এমনভাবে দেখানো হবে, যে এটা মুম্বাই, দিল্লির কোন পাড়াত বিল্ডিং। যেখানে ইন্ডিয়ান মেরিন সিকিরিউটি অথোরিটির হেড অফিস।
## বিল্ডিঙের ভেতরে বড় কর্তারা খুভ উদ্বিগ্নভাবে পায়চারি করছে। বারবার কাকে যেন ফোন দেয়া হচ্ছে, কিন্তু ফোনটা কেউ রিসিভ করছে না। কেন রিসিভ করছে না, তারা তা বুঝতে পারছেন না।
##কাকে আর ফোন দেয়া হবে। দেয়া হয়েছে নায়ক মশায়কে।
কিন্তু নায়ক তো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।
##কি, প্রশ্ন হচ্ছে-কেন ঘুমাচ্ছে?? আমারে জিগান কিলা?? আইটেম গান লাগবে না?? এইটা ছাড়া সিনেমা হয় নাকি?? কিন্তু সিনেমার কাহিনীটাই যেহেতু এমন যে আইটেম গান ঢুকানোর জায়গা নাই, তাই এইখানেই ঢুকিয়ে দিলাম।
গতকাল রাতে ভাইজান, প্রচুর লাল পানি পান করেছে, আর কয়েক হাজার মেয়েকে নিয়ে এই বলে নেচেছেন যে,
জীবন কিছু না
যৌবন থাকব না
এই সেক্সি কাছে আসনা
## অফিসে যেহেতু দেরি হয়ে গেছে, সেহেতু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নায়কের সাথে খুবই অল্পবসনা একজনের ধাক্কা লেগে যায়। আর পাক্কা তিন মিনিট একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে থাকেন।
লিফটে উঠে একসাথে দুইজন একই বাটন ক্লীক করতে গিয়ে, হাত হাতে স্পর্শ লেগে যায়, আর তারা হাত না সরিয়েই মরিশাস-ভেনিস-স্টকহোম শহরে, বিভিন্ন বন-জজ্ঞলে কখনো কাপড় পড়ে, কখনো না পড়ে (অবশ্যই নায়িকা) শ্রেয়া ঘোষাল বা অন্য কারো গানের সাথে পিটি করবেন।
কতক্ষন?? পাক্কা তিন থেকে সাড়ে পাচ মিনিট।
## নায়ক অফিসে এসে জানবে যে, আমেরিকা অনেক বড় বিপদে পড়েছে। আমেরিকার পতাকাবাহী এক জাহাজের ক্যাপ্টেন, ক্যাপ্টেন ফিলিপসকে সোমালিয়ার জলদস্যু কিডন্যাপ করেছে (কে করেছে, কেন করেছে- সবই অবান্তর প্রশ্ন)। ক্যাপ্টেন ফিলিপসকে এখন কেবল এই নায়ক বাবাজিই উদ্দার করতে পারে। ভারত যেহেতু মহান জাতি তাই তাদের আমেরিকাকে সাহায্য করা কর্তব্য এবং তারা করবেও।
আর এজন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জাতিসজ্ঞের জন্য ৫০ সফল মিশনের নেতৃত্ব দেয়া, মেরিন ইন্ডিয়ার গর্ব, এই নায়ক বাবাজি। (হালার বয়স কত, এখনও বিয়া করে নাই। জাতিসজ্ঞে হের কাম আছিল কি, খালি ফোন ধরা???)
##নায়কে মিশন ব্রীফ করার জন্য দেয়া হয়েছে আরেক ভারতরত্নকে। উনাকে চিনেন নাই?? আরে ওই যে লিফটে ধাক্কা লাগলো।
ওনারা আবার ভীষ্ণ ফাকিবাজ।
তাই ব্রীফ করা বাদ দিয়ে ওনারা আবার বিশ্বভ্রমনে বেড়িয়ে পড়বেন। গান গেয়ে, নেচে কুদে পাচ মিনিট পড়ে উনাদের বিশ্বভ্রমণ শেষ হবে।
গান কয়টা হয়েছে?? তিনটা!! মনে রাইখেন। আরো দুইটা না হলেও কমচেকম একটা গান ঢুকাইতে হবে!!
## বিশাল এক জাহাজ নিয়ে নায়ক আর নায়িকা ক্যাপ্টেনকে উদ্ধার করতে বের হয়েছে। মাঝ সাগরে চাদের আলোয় উনারা বাসর রাতের গল্প করবে।
নায়কঃ তোমারে পাইয়া আইজকা আমার জীবন ধন্য!
নায়িকাঃ হ! তুমারে পাইয়া আমিও ধন্য। আল্লাহ্ যা করে ভালোর লাইজ্ঞাই করে। গত মাসে ব্রেক আপটা না হইলে, এই রাত কেমনে কাটাইতাম।
এইসব খাজুরা আলাপ করতে করতে ওনারা সাগর-নদি-পাহাড়-মরুভুমি তে রোদে-বৃস্টিতে নাচন কুর্দন করবেন। গানটা কিন্তু শেষ হবে, বেডে।
বাচ্চারা এই গান দেখা তোমাদের কাজ না। খেলতে যাও।
হায়!! সকালে দেখা যাবে, একটা চাদর ছাড়া বাকি সব কাপড় কোথায় যেন উধাও। মনে হয় সোমালিরা নিয়ে গেছে।
##সকাল হলে দেখা যাবে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ নেমে আসবে নায়কে আটকানোর জন্য।
আফ্রিকার সব মানুষই কি জাহাজ ছিনতাই শুরু করলো নাকি??
কিন্তু নায়ক একাই সবড্ডিরে সামাল দেয়। শাবাস! তোর বাপের নাম আব্বাস। কখনো আকাশে উড়ে, কখনো সাগরে ঝাপিয়ে পড়ে তিনি তাদের মারতে থাকবেন। ওনার এক থাপ্পড় খেয়ে দস্যুরা মুক্তিবেগে আকাশে উড়ে চলে যাবে আর ফিরে আসবে না। কেউ কেউ পাতাল ভেঙ্গে সাতালে চলে যাবেন।
ওইটা কি ঊড়ে আসছে?? উনিশ ইঞ্চি মর্টার! এইবার নায়ক তু তো গেয়া। ধুর মিয়া দেখেন তিনি কি করেন। তিনি বাম হাত দিয়ে দশ টুকরা করে দশ হাজার মেইল দূরে পাঠিয়ে দেবেন মর্টারকে।
##অবশেষে নায়ক জিম্মি জাহাজের কাছে পৌছেন। কিন্তু সেখানে কেউ নেই।
সেখানে তিনি দেখবেন তার সামনে একটা মনিটর অটোমেটিক অন হয়ে যায়। যেখানে একটি মেয়ে তাকে দশ কোটি ডলার মুক্তিপণ নিয়ে ক্যাপ্টেনকে উদ্বারের নির্দেশ দেয়।
##পরে দৃশ্যে দেখা যায়, নায়ক একটা গাড়ি নিয়ে প্রায় উড়ে যাচ্ছেন আর গুন্ডাগুলোকে পেটাচ্ছেন। পেটাতে পেটাতে উনি পোঁছে যান এক পোড়া বাড়িতে। সেখানে তিনি বাকী গুন্ডাদের পিটিয়ে ভাঙ্গা দেয়াল আরো ভেঙ্গে ফেলেন।
তারপর উদ্বার করেন ক্যাপ্টেন ফিলিপ্সকে।
আর ক্যাপ্টেন এতে আবেগে কেদে ফেলেন, বলেন বাবা আমি তুমারে কাছে চির কৃতজ্ঞ। আইজ থেইক্কা আমি তুমার গোলাম। মেরে ভগবান তুমারা মঙ্গল করেঙ্গা। (জানি হিন্দি ভুল।
আমি কিন্তু হিন্দি পারি না)।
এরপর নায়িকা দৌড়ে এসে নায়ককে বলে, লও বম্বে ফিরে গিয়ে ১০০ গ্রাম পাঠার মাংশ কিনে সফল মিশনটাকে সেলিব্রেট করি। কতদিন কচি পাঠার জোল খাই না।
ডেডিকেটেড টুঃ শ্রীনিবাসন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।