ঈশ্বরই জ্ঞান , জ্ঞানই আত্মা। মানুষ মাত্রই জ্ঞানী। আমি মানুষ,আমার ঔরসে জন্মায় দেবতার কারিগর।
নাস্তিক - যে নাস্তিক তার নিজস্ব যুক্তি থাকে । বিজ্ঞান অথবা অন্য যে কোন বিষয়ের যুক্তিতে সে তার একটা বিশ্বাস বা যুক্তি দাড় করায় ।
একজন নাস্তিক ধর্মে বিশ্বাস করে না কিন্তু ধর্ম নিয়ে অযথা গুরুত্বহীন কথাও বলেনা। সে যে সকল যুক্তি দেখায় তা কিছু ক্ষেত্রে বা কিছু প্রেক্ষাপটে হয়ত যুক্তি সঙ্গত । কিন্তু কোন ভাবেই সে ধর্ম কে খাটো করেনা । সে যদি ধর্ম কে খাটো করেই দেখত তাহলে ধর্মকে অবিশ্বাস করার অখণ্ড যুক্তি দাড় করাতোনা। অর্থাৎ শত্রু বা বিপক্ষ হলেও সে তা গুরুত্বের সাথেই নেয়।
একজন নাস্তিক কখনই ধর্ম বিরোধী ঢোল নিয়ে নামেনা। সে শুধু তখনই ধর্মের বিপক্ষে যুক্তি দেখায় যখন ধর্মের পক্ষে কোন যুক্তি তাকে দেখানো হয়। অর্থাৎ কোন কারণ ব্যতিরেকে সে ধর্মের বিপক্ষে কথা বলেনা ।
একজন খ্রিস্টান বা হিন্দু বা অন্য যে কোন ধর্মের ব্যক্তির তার ধর্মের পক্ষে যুক্তি আছে। ঠিক তেমনি যে নাস্তিক তারও ধর্ম না মানার পেছনে কিছু যুক্তি আছে ।
অতি উদারতাবাদ বা অতি রক্ষণশীল প্রেক্ষাপট এই নাস্তিকতার অন্যতম কারণ গুলোর মধ্যে প্রধান কারণ। আমি ব্যক্তিগত ভাবে একজন আস্তিক এর পক্ষে আমার কিছু যুক্তিঅবশ্যই আছে। আমার এই মন্তব্যটি হয়ত আস্তিকতার প্রেক্ষাপট থেকে প্রভাবিত হতে পারে । নাস্তিক অর্থ যে সে শুধু ইসলামের বিপক্ষে কিন্তু অন্য ধর্মের পক্ষে তা নয় সে সকল ধর্মেরই বিপক্ষে। যদি কেউ শুধু নির্দিষ্ট কোন ধর্মের বিপক্ষে কথা বলে সে ক্ষেত্রে তা নাস্তিকতা নয় বরং অন্য কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
কারণ একজন নাস্তিক সে যে কোন ধর্ম ব্যবস্থার বিপক্ষেই তার অবস্থান।
ধর্মান্ধ - অতি আস্তিক এবং অতি নাস্তিক এরা উভয়ই ধর্মান্ধ বা পাগল গোত্রীয়। এদের মানসিক ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। এরা উভয়ই ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থার ক্ষতির ৪০ ভাগ করে থাকে । কারণ এরা ধর্মের পক্ষে এবং বিপক্ষে এত বেশী অবস্থান নেয় যা সমাজ ব্যবস্থায় প্রচণ্ড বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে ।
সমাজের মানুষের প্রচণ্ড বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায় । এরা নিজেদের সর্ব শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ভাবে এবং এই জ্ঞান অন্যের মাথায় না ঢুকলে অন্যের গলা দিয়ে বাঁশ ভরে জোর করে তাদের অতি মূর্খ জ্ঞান ভরার প্রাণপন চেষ্টা চালায় । যে চেষ্টা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হাস্যকর ও বিফল হয়। এক সময় তারা সমাজের হাসির পাত্র হয়ে দাড়ায় । মহান আল্লাহ বলেছেন , তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করোনা।
সবার ভাবনার পথ এক নয় । প্রত্যকের নিজস্ব কিছু ভাবনা রয়েছে । এটা তাদের মাথাতেই থাকেনা । তারা ভাবে আমি যা বুঝি তাই ঠিক অন্যে তা মানবেনা কেন ? তারা কোন ভাবেই অন্যের ভাবনার স্বীকৃতি দিতে চায়না। এদের ভাবনা বা বিশ্বাস প্রচণ্ড একপেশে যা যে কারও পক্ষেই অন্ধভাবে মেনে নেয়া যথেষ্ট কঠিন ।
ধর্ম বিদ্বেষী - এরা হচ্ছে মানবতার আসল ও অন্যতম শত্রু। এরা সমাজের শতভাগ ক্ষতি করে যা খুব সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে অত্যন্ত সুচারু পরিকল্পনা মাফিক করা হয় । সাধারণ মানুষ তাই এদের অবস্থান নিয়ে বেশ ধোঁয়াশার মধ্যে থাকে । এরাই হচ্ছে ইসলামের ভাষায় মোনাফেক । নবী (সঃ) বারা বার এদের বিষয়ে সতর্ক করেছেন ।
তিনি (সঃ) বলেছেন , শেষ জামানায় এমন কিছু ব্যক্তির আগমন ঘটবে যারা ধর্ম নিয়ে প্রচণ্ড গোলযোগ তৈরি করবে কিন্তু মূলত তাদের অন্তর হবে অত্যন্ত কালিমা লিপ্ত । এরাই হচ্ছে ধর্মকে ব্যঙ্গ করা অসুস্থ নীচ মানসিকতার কিছু ব্যক্তি । এরা মূলত কোন ধর্মেইই বিশ্বাস করেনা । এরা কোরআন এর সংস্কার চায় এরা নবী (সঃ) সমালোচনা করে ভুল হাদিস দেখিয়ে । কিন্তু ধর্মের ও আল্লাহর দোহাই দিয়ে এরা রাজনীতি করে ।
এদের সম সাময়িক কর্মকাণ্ড যেমন- কোরআন ও মসজিদ পোড়ানো , কোরআন হাতে নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নামা ( ঠিক একই পন্থায় আলী (র) এর সময় এদেরই পূর্ব পুরুষ মোনাফেকের দল কোরআন বর্শার মাথায় বেঁধে যুদ্ধ ক্ষেত্রে নেমেছিল)এদের মূল উদ্দেশ্য ধর্মকে বিতর্কিত করা । এবং গোলযোগ তৈরি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করা।
কিছু অতি ছাগল দুর্বল ভাবনা প্রকৃতির কিছু প্রজাতি যারা কারণে অকারণে ধর্মকে ব্যঙ্গ করে । ভাবে এতে অন্য মানুষ তাকে কত তাত্ত্বিক বা জ্ঞানী ভাবে । মূলত যে কোন বিষয় নিয়েই ব্যঙ্গ করে নিজেকে নিম্ন মানের জোকার হিসেবে প্রমাণ করে।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার সবচেয়ে বেশী অংশ কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস করে । তাহলে অবশ্যই এর পেছনে কিছু যুক্তি আছে । । এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি থাকতে পারে কিন্তু তা নিয়ে ব্যঙ্গ করা অবশ্যই হীনমন্যতা ও দুর্বল ভাবনার পরিচয়। ধর্ম কখনোই ব্যঙ্গ করার কোন বিষয় নয়।
পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস করে । এই ধর্ম বিদ্বেষীরা পুরো পৃথিবীতেই বিরাজমান। এরা পৃথিবীর যে জায়গাতেই থাকে সেখানেই যে ধর্মই রয়েছে তার বিরোধিতা করে। খ্রিস্টান হলে যীশু বিরোধী ,হিন্দু হলে রাম কৃষ্ণ বিরোধী , মুসলমান হলে রাসুল (সঃ) বিরোধী । এরা ধর্মকে পুঁজি করে ধর্মের লেবাসে উদারতাবাদের যুক্তি দেখিয়ে এই ধর্মের বিরোধিতা বা বিদ্বেষ করে ।
এতে সাধারন মানুষ শতভাগ প্রতারিত হয় বা ধোঁকা খায়। ফলে পুরো সমাজ ভ্রান্ত হয়ে নানা ভাগে ভাগ হয়ে যায় আর তখনই এরা সুযোগ নেয় এবং সমাজ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে( রাজনীতির একটি ধারার মত ডিভাইড অ্যান্ড রুল অর্থাৎ ঐক্য ভাঙো এবং নিজে ক্ষমতা নিয়ে শাসন করো) এরা মূলত ধর্ম নে কোন মাথা ব্যথা নেই তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্ষমতা বা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করা । এদের প্রকৃতি বা ধর্মই হচ্ছে নিজের স্বার্থ হাসিল তা যে কোন পন্থায় ।
সমাজের মূল অশান্তি বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে মূলত ধর্ম বিদ্বেষী ও ধর্মান্ধরা । নাস্তিকের চেয়ে এরা সমাজের অনেক বেশী ক্ষতি করে।
একজন নাস্তিক পুরো সমাজকে প্রভাবিত করেনা। তার আলোচনা ও তর্কের ক্ষেত্র খুবই সীমিত । সে রাস্তায় নেমে জনে জনে ধরে তর্কে জরায় না বা নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জান বাজি ধরা যুদ্ধেও নামেনা। তার নাস্তিকতা তর্ক পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ধর্ম বিদ্বেষী (মোনাফেক ও মূর্খ ব্যঙ্গকারীর দল) আর ধর্মান্ধ অতি উৎসাহী পাগলগুলোই সমাজে নানা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ।
কারণ তারা তাদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধে নামে । যা মূলত সমাজে ধর্মীয় অস্থিরতার মূল কারণ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।