আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজত ও জাওয়াহিরি : টকশোবাজির পূর্বকথা

ভালো আছি

আইমান আল জাওয়াহিরির চেতনার সঙ্গে আমাদের মিল কতখানি, সেটা প্রমাণের আগে উপলব্ধি করা উচিত, কাজটা কিন্তু বেশ ভালো মাথার । জাওয়াহিরি কি এতোটা মাথামোটা যে, তিনি না বুঝেই একটা রেকর্ড ছেড়ে দেবেন, যার গুণে বাংলাদেশের মুসলিমদের জীবন আরো একটু বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠবে ? কিছুদিন আগে পাকিস্তানি তালেবানের ‘বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার হুমকি’ শীর্ষক ভূয়াঁ নিউজ যারা তৈরি করেছে, তার থেকে এই কাজ আরেকটু ভালো মাথা দিয়ে তৈরি- সন্দেহ নেই ।

এভাবেই একটু একটু করে এদেশের প্রাক্টিসিং মুসলিমদেরকে আরো ঘরকুনো করে ফেলা হবে । হেফাজতকে প্রথমে ধরতে হবে, কারণ আগেই বলেছি, এক তো রগকাটা বা রাজাকারের তকমা তার গায়ে লাগানো যাচ্ছে না । এমনকি গতটার্মে জেএমবির নৃশংস হামলার সময়ও কওমিপন্থীদের জঙ্গি প্রমাণ করা যায় নি ।

তো এবার কাজটা বাইরের থেকে করা হচ্ছে, করতেই হবে । আর এটাই উপযুক্ত সময়, যেহেতু হেফাজত আজকাল বিশ্রামে আছে । মনে রাখবেন, বিশ্রামই শক্তি ।

আপনি বইমেলায় জায়গা পাবেন না, আপনি ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবেন না, মাহফিল করতে পারবেন না, মসজিদের ইমাম থাকতে কিংবা মুয়াজ্জিন হতেও পারবেন না, সরকারি যে কয়টা চাকরির সুযোগ একটু একটু অর্জন করেছিলেন, তা এবার হারাবেন, টিটকারি, উপহাস, বিদ্রুপ, মিথ্যা অপবাদ গায়ে লাগতেই থাকবে আপনার । সবার নয়, শুধু আপনার ।

কারণ কেউ কেউ কিন্তু ঠিকই এসব সুবিধের একটাও হারাবে না; সবগুলোই পাবে । আপনি পাবেন না । এই যে আপনি পাবেন না, আবার অনেকে পাবে- এই বিভাজনটা কিভাবে তৈরি করা যায় ? একটা দাগের প্রয়োজন । সেটা হেফাজত । কেনো হেফাজত ? তার কারণ সৃষ্টি হবে এইসব জঙ্গিবাদের আঁচ লাগিয়ে লাগিয়ে...ইতোমধ্যেই টকশোতে সে আঁচ উঠে এসেছে ।

যদিও আটাশ মিনিটের এই বক্তব্যে একবার হেফাজত কিংবা ইসলামি কোনো দলের নাম উচ্চারণ করা হয় নি, তবুও লাগবে আঁচ । লাগতেই হবে ।

কী করবেন আপনি ? ক্ষোভে রোষে ফেটে পড়বেন রাস্তায় ? অস্ত্রের সন্ধানে নামবেন ? আত্মঘাতি হবেন ? তাহলে তো আপনি যে সত্যিই জঙ্গি, সেটা আরো বেশি করে প্রমাণ হয়ে গেলো । নিপীড়ন চালানো জায়েয হয়ে গেলো আপনার মা, বাপ, ভাই, বোন আর আপনার সহপাঠী কিংবা বন্ধুবান্ধব সবার উপর । বাঁচতে চাইলে সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত করুন ।

বর্তমানে সরকারি দলের একটা টিকেট বাগিয়ে নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে জান-প্রাণ দিয়ে লড়ে যান । পারবেন না ?

এখন কী করবেন ? জাওয়াহিরির বক্তব্যের নিন্দা জানাবেন ? বলবেন যে, আমাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই ? জিহাদটাও এ দেশ থেকে এভাবে একটু একটু করে গেছে, যাচ্ছে, যেতেই থাকবে । জিহাদ মানে তো এখন গণতান্ত্রিক রাজনীতি । কলম যুদ্ধ । আরো কত কি ! নিজেরা তো পারা যাবে না, তাই বিএনপির মতো একটা ‘মুরুক্ষ’ দল নিয়ে সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে ।

হয়েছে তো । ব্যর্থ হলো । তো এবার সেই শিক্ষা নিয়ে সব ইসলামি দল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন । কিছু আসন জিতবেন । কী হবে তাতে ? কিছুই আগাবে না ।

একটা সূঁতাও ছিঁড়বে না । জেনে রাখুন, যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনও পান, তবু মানবে না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় । দু’দিন ক্ষমতায় থাকার পর আবার ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া হবে । হয়েছে, পৃথিবীর দেশে দেশে । তখন ?

হলফ করে বলতে পারবেন, আমরা উসামা কিংবা আলকায়েদার বিপ্লবী চেতনাকে ভালোবাসি না ? আমি তো ভালোবাসি আর্নেস্ত চে’ গুয়েভারার বিপ্লবকেও ।

কিন্তু আমরা সে পথে যাই না, কারণ সে বিপ্লব আমাদের নয়, আমাদের সমাজবোধের সঙ্গে মেলে না ওসব । তবে নির্যাতিত বহু মানুষের পক্ষে ছিলো সে বিপ্লব, সেটা স্বীকার করতেও কুণ্ঠিত নই মোটেও । এই কথাটুকুও কি গুছিয়ে বলতে পারবেন ?

ইসলাম তো থাকবে । না থাকলে আবার আগুন জ্বলবে না ? তো দপ করে জ্বলতে দেয়া যাবে না । একটু জ্বলবে, তাতে পানি ঢেলে নিভানো হবে, আবার জ্বলতে চাইবে...একসময় জ্বলবে না আর...

তো কী করবেন ? ভাবুন, ভাবুন...খুব ভাবতে হবে...জানি, যেই প্যাঁচে পড়েছেন, কাঁদলেও এখান থেকে বের হতে পারবেন না ।

কারণ আরো আগে ভাবা দরকার ছিলো । তবুও ভাবুন...দোয়াও করতে থাকুন, দেখা যাক আবাবিল পাখি আসে কি না...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.