আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাস্তব জীবনে Final Destination (২য় পর্ব)

সত্য তখনই দাম পায়, যখন তার পাশে মিথ্যা নামক অদৃশ্য বস্তুটি স্থান পায়......

"Final Destination" সিনেমার কথা মনে আছে আপনাদের? যেখানে আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায় কয়েক জন, কিন্তু মৃত্যু কিন্তু তাদের পিছু ছাড়ে না। শেষ পর্যন্ত জয় হয় মৃত্যুর। আজ আপনাদের এরকম কয়েক জনের সম্পর্কে জানাবো যারা মৃত্যুর হাত থেকে সম্পূর্ন অক্ষত ভাবে রক্ষা পেয়েও শেষ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষা করতে পারে নাই মৃত্যুর হাত থেকে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক,



১৯৭৭ সালে The University of Evansville এর পুরুষ বাস্কেটবল দলের খেলোয়ার সকলেই প্লেন ক্রাশে মারা যায় শুধু মাত্র একজন প্লেয়ার বাদে। সে অসুস্থ থাকার কারনে দলের সাথে যোগ দিতে পারে নাই।

এই প্লেন ক্রাশের ঠিক দুই দিন পরে বেঁচে যাওয়া একমাত্র প্লেয়ার গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যায়।

প্লেন্টির দূর্ঘটনা ঘটে ১৩ই ডিসেম্বর ১৯৭৭ সালে। Douglas DC-3 বিমান যার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বর N51071 রানোয়ে থেকে উড্ডয়নের সময় যান্ত্রিক গোলোযোগের কারনে ক্রাশ ল্যান্ডিং করে, এর ফলে বিমানের সকল যাত্রী নিহত হয়। আর বিমানের যাত্রী হিসেবে ছিল The University of Evansville এর পুরুষ বাস্কেটবল দলের সকল সদস্য। যারাও এই দূর্ঘটনায় মারা যায়।

বাস্কেট বল দলের একমাত্র বেঁচে থাকা প্লেয়ার UE এর প্রথম বর্ষের প্লেয়ার David Furr প্রাক্টিসকালীন সময়ে পায়ে আঘাত পাবার কারনে দলের সাথে Middle Tennessee Blue Raiders এর বিরুদ্ধে খেলতে যাবার অনুমতি পায়নি।

২ সপ্তাহ পরে David Furr আর তার ১৬ বছরের বয়স্ক ছোট ভাই দু'জনে একটি প্রীতি বাস্কেটবল ম্যাচ খেলে ফেরার সময় মাতাল গাড়ি ড্রাইভারের গাড়ির সাথে সংঘর্ষের ফলে মৃত্যুবরণ করেন। এর ফলে The University of Evansville এর পুরুষ বাস্কেটবল দলের সকল সদস্যের মৃত্যু হয়।



২০০৭ সালে একজন ইতালিয়ান মহিলা Air France Flight 447 প্লেনে চড়তে পারেন নাই কেননা তিনি দেরি করে এয়ারপোর্টে এসেছিলনে। আর সেই কারনেই বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি কেননা Air France Flight 447 প্লেনটির ছিল ওটাই শেষ ওড়া।

এই দূর্ঘটনার ঠিক দুই সপ্তাহ পরেই ইতালিয়ান মহিলাটি গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যান।

Johanna Ganthaler তার স্বামি Kurt এর সাথে ব্রাজিলে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু ব্রাজিল থেকে ফিরতি ফ্লাইট Air France Flight 447 তাদের আসার আগেই উড়াল দিয়ে দেয় Rio de Janeiro Airport থেকে। Air France Flight 447 টি টানা চার ঘন্টা আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে উড়ে চলে প্যারিসের উদ্দেশ্যে, চার ঘন্টা পরে দূর্ঘটনায় পতিত হয় আর তাতেই প্লেনের ২২৮ জন যাত্রী মৃত্যুবরণ করে।

আর এই যাত্রা থেকে বেঁচে যাবার ২ সপ্তাহের মাথায় Johanna Ganthaler গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান।

যদিও তার স্বামী এখনও বেঁচে আছেন।



২০১১ তে পিতা এবং কন্যা চার বছর আগে প্লেন ক্রাশ থেকে বেঁচে ফিরার পর পুনঃরায় প্লেন ক্রাশে মারা যান।

৭০ বছর বয়স্ক Elzie (Bud) Warren এবং তার মেয়ে ৫২ বছর বয়স্ক Phyllis Jean Ridings দু'জনে একটি পরীক্ষামূলক প্লেন টেক্সাসে উড়াচ্ছিলেন, যখন তাদের ককপিট সম্পুর্ন ধোঁয়ায় আচ্ছাদিত হয়ে যায়। টেক্সাসের এয়ারপোর্ট থেকে আধা মাইল দূরে প্লেনটি সম্পূর্ন আগুলের কুন্ড আঁকারে ভূপাতিত হয়। বাবা মেয়ে দু'জনেই Experimental Aircraft Association এর সদস্য ছিলেন আর তারা উড়াচ্ছিলেন Ravin 500 মডেলের প্লেন।

এটি পৃথিবীরে মাত্র ২০ জন মানুষ এ পর্যন্ত উড়িয়েছেন।

২০০৭ সালে দূর্ঘটনার পরে বেঁচে যাবার পরে Phyllis Jean Ridings বলেছিলেন, "I give all the credit to God and my father's flying skills, He saved our lives"।

মৃত্যুর হাত থেকে কে রক্ষা করবে বলুন? শেষমেষ মৃত্যুর জয় হল।



মে ২০১৩, অক্লাহোমার ওয়েল্যান্ড মোর অঞ্চলে আঘাত আনে প্রায় এক মাইল দীর্ধ ঘূর্নিঝড়। যা প্রায় লন্ডোভন্ডো করে দেয় সম্পূর্ন এলাকা।

কিন্তু এই বিধ্বস্ত ঘূর্নিঝড়ের পরেও বেঁচে যায় পাঁচ বছরে ছোট এক বালক আর তার বাবা মা। এই দূর্যোগ শেষ হলে তার মা বাবা তাদের পরিচিত Lynn Geiling এর বাসায় বাচ্চাকে রেখে যায়। Lynn Geiling এর বাসা ছিল জেসিভিল অঞ্চলে যা ওয়েল্যান্ড মোর অঞ্চল থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে। মা বাবা তাদের হারানো বাড়ি পুনঃরুদ্ধারের জন্য সন্তানকে রেখে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে।

পাঁচ বছলের ছেলের জন্য অপরিচিত বাড়ি, অপরিচিত লোক আর সব থেকে বড় কথা মা বাবা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে হওয়ায় অনেকটা হতাশায় ভুগছিল।

এ কারনেই কোন এক কারনে ছোট ছেলেটি হঠাত করেই রেগে যায় আর ভীষন ভাবে চেল্লাতে থাকে Lynn Geiling এর উপর। এসময় পরিবারের পোষা কুকুর যেন হঠাত করেই মালিকের উপর ৫ বছরের ছেলের চিৎকারকে হয়ত মনে করে বসে মালিকের উপর হামলা হিসেবে। আর এসে হামলে পরে ছোট বাচ্চাটির উপরে। Lynn Geiling অনেক চেষ্টা করে কুকুরের হাত থেকে বাচাঁতে পারলেও রক্তাক্ত ছেলেটি বাচাঁতে সক্ষম হয়নি। এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরে ডাক্তার বাচ্চাটিকে মৃত ঘোষনা করে।



পূর্বের পর্বঃ বাস্তব জীবনে Final Destination (১ম পর্ব)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।