দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনই সমাজ পরিবর্তন করতে পারে।
গনজাগরণ মঞ্চ। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে মোটামুটি এক রহস্যময় বিষয়। হঠাত উথ্থান ও একইভাবে বিতর্কিত। যদিও বাংলাদেশে এমন কোন বিষয় নেই যা বিতর্কের উর্ধ্বে তবুও দেশের বড় একটা অংশ গণজাগরণ মঞ্চের চেতনা বুকে ধারন করে।
বিভিন্ন ইস্যুতে গণজাগরণ মঞ্চের ভুমিকা সবসময় বিতর্কের পাশাপাশি প্রশংসাও কুড়িয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার দাবীর পাশাপাশি যুদ্ধপরাধীদের শাস্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ায় গণজাগরণ মঞ্চের সাহসী ও দৃঢ় প্রতিবাদ বেশ প্রশংসিত। সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রধান যে অভিযোগটি ছিলো তা হলো ক্ষমতাসীনদের ধ্যান ধারনা ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। ক্ষমতাসীনদের মতো তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ, তারা ভারতের প্রতি অনুগত। তারা এমন কিছুতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনা যা ভারতকে অখুশি করে।
বিএনপি, হেফাজত, জাামায়াত অথবা পাকিস্তান কিছু করলেই তাদের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা যায় কিন্তু ক্ষমতাসীন অথবা ভারতের কোন বিতর্কিত কর্মকান্ডে তেমন কোন জোড়ালো প্রতিক্রয়া দেখা যায়না। সরকার কতৃক কয়েকবার নিগ্রহের শিকার হলেও গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে এখনো সেই অভিযোগটাই রয়ে গেছে। তারা এমন কিছু এখনো করতে পারেনি যাতে তাদের সেই অভিযোগ খন্ডানো যায় অথবা সেরকম সুযোগ এখনো আসেনি।
গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক যে অভিযোগটা উঠে এসেছে তা হলো সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় ‘গুন্ডে’ ছবিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ও অবমাননাকর উপস্থাপনায় তাদের নীরব ভুমিকা। বিষয়টি তাদের সম্পর্কিত পূর্ব অভিযোগ গুলোকেই শক্তিশালী ভিত্তির উপর স্থাপন করে।
গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকারকে এ বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোন বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক একাউন্টেও এ নিয়ে কোন প্রতিবাদ অথবা বক্তব্য নেই। বাংলাদেশকে অবমাননা করায় অনেক ব্যক্তিত্ব প্রতিবাদ করেছেন, ‘গুন্ডে’ সিনেমা কতৃপক্ষ ক্ষমা চেয়েছে, সিনেমাটির নায়ক, নায়িকা ক্ষমা চেয়েছেন। বিএনপিও আজ প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা এখনো নীরব, গণজাগরণ মঞ্চও।
অভিযোগকারীদের বক্তব্য, হয়তো তারা পরে প্রতিবাদ করে দ্বায়িত্ব পালন করবে, কিন্তু তাদের বর্তমান নীরবতা একাত্তরের চেতানধারী ক্ষমতাসীন দল ও জগজাগরণ মঞ্চের আদর্শের সাথে বনেনা। বিষয়টি ভারতের প্রতি অনুগত চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন অনেকেই। শুভানুধ্যায়ীরা আশা করেছিলেনি বিতর্কিত এ বিষয়টি নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ সঙ্গে সঙ্গে জোরালো প্রতিবাদ ও সভা সমাবেশ করবে। ভারতীয় সিনেমার আগ্রাসনে আমাদের সমাজে, পরিবারে যে নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিচ্ছে তা নিয়েও আলোচনা হবে, সচেতনতা তৈরী হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে তাদের ভারতপ্রীতির অভিযোগের একটা জবাবও হতে পারতো।
এ সুযোগটি না নেওয়াতে তাদের বিরুদ্ধে ভারতপ্রীতির যে অভিযোগ ছিলো তা শক্ত ভিত্তির উপর থেকেই যাচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।