আমার কিছু বলার নাই।
আমার বয়স তখন ১২ কি ১৩ বছর। ছোট মামা তখন আমাদের এখানে পড়াশুনা করতেন। মামা-ভাগ্নে একসাথে স্কুলে যেতাম। মামা আমার থেকে ১ ক্লাশ বা ২ ক্লাশ উপরে পড়তেন(তার বয়স যদিও ক্লাশের তুলনায় বেশি ছিল)।
ছোট মামার মেজাজ-মর্জি বিষয়ে আমার ধারণা ছিল বলেই সবসময় তাকে সমীহ করে চলতাম,ভয় পেতাম। কিন্তু কি কারণে একদিন মুখ ফসকে বলে ফেললাম,“মামা,তুমি নাকি কারে ভালোবাসো?”ব্যস,এতটুকু বলেই আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম আমি কি বলেছি। কিন্তু বুঝে তো আর লাভ নেই,এখন আমার পরিণতি কী হয় সেটা দেখার পালা। অধিক রাগে মামাও প্রথমে স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
তারপর আস্তে আস্তে শক্তি সঞ্চয় করে রবি’র স্লোগানের মতো জ্বলে উঠলেন আপন শক্তিতে। লাঠি অথবা স্কেল জাতীয় কিছু একটা নিয়ে আমাকে ধাওয়া করার প্রস্তুতি নিলেন। অবস্থা বুঝে আমিও দিলাম দৌড়,একেবারে গ্রামীনফোনের স্লোগানের মতো ‘চলো বহুদূর’ টাইপের দৌড়। দৌড়ে বেশি দূরে যেতে হলোনা। মামার দৌড়ের কাছে আমি নবজাতক।
আমার ঘাড়ে ধরে চিৎকার করে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রায় এরকম বললেন,“হতচ্ছাড়া,এবার কই যাবি?হাঁদারাম কোথাকার.........বাপের মতো হইছস!............টাইন্না কান ছিরে দেই?.........ধইরা.........মাইরা......আজকে তুই শেষ......কত্তো সাহস......”ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি তখন ভয়ে বেহুঁশের মতো হয়ে গেছি আর প্রহার পর্বের অপেক্ষা করছি। এমন সময় কি করে যেন একটা বুদ্ধি পেয়ে গেলাম। কেঁদে বললাম,“মামা,আমি তো আসলে বলতে চেয়েছিলাম তুমি আমাদেরকেও তো ভালোবাস,নানাভাই আর নানুকেও তো ভালোবাস। ”এই কথা শুনার পর মামা আমাকে ছেড়ে দিলেন,যদিও তিনি সবকিছুই বুঝতে পারছিলেন।
পরের দিন আমাকে ডেকে নিয়ে তার ভালোবাসার মানুষটির নাম বলে দিলেন। কিন্তু আমি অবাক হলাম না। কারণ এতে মামার দুইটা লাভ হলো,আমার অভিমান ভাঙ্গানো গেলো এবং একি সাথে চিঠি আদান প্রদানের মতো মহান কাজে আমি নিয়োজিত হয়ে পড়লাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।