আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাকিবের তথ্যেই ধরা পড়েন শায়খ রহমান

রাকিবুলের সঙ্গে রোববার আর যে দুজনকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, সেই দুজন সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি, এবং জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজানও জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নেয়ার পথে নজিরবিহীন এক ঘটনায় সকালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক কনস্টেবলকে হত্যা করে ছিনিয়ে নেয়া হয় এই তিন জঙ্গিকে। এর মধ্যে রাকিবুল পরে টাঙ্গাইলে ধরা পড়েন। বাকিরা এখনো পলাতক।  

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাকিবুল হাসান গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সিলেট থেকে জেএমবির প্রধান শায়খ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

“জেএমবির উত্থানের পর র‌্যাব খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়। ”

তবে রোববারের ঘটনার মধ্য দিয়ে জেএমবি তাদের অবস্থান নতুন করে জানান দিল বলে মনে করেন পুলিশ র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা, যে সংগঠনটি ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট সারাদেশে একযোগে বোমাহামলা চালিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছি।  

রাকিবুলকে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। তার দুদিন পর শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরপরই ৬ মার্চ গ্রেপ্তার হন সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই।

রাকিবুলের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ থানার ফুলছেন্না গ্রামে, ওই জেলায়ই বাড়ি শায়খ রহমানের।

জিয়াউল আহসান বলেন, “তাকে জেএমবি গঠনের জন্য খূলনা বিভাগের দায়িত্বে দেয়া হয়েছিল। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর এক মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন রাকিবুল। ”

রাকিবুলের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রযেছে। একটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, তিনটিতে যাবজ্জীবনসহ ৭৪ বছর কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে।

বাকি মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে। রোববার পালিয়ে যাওয়া সালাউদ্দিন সালেহীনকে ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল র‌্যাব গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে।    

ঝালকাঠীর বিচারক হত্যার দায়ে ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ  শায়খ রহমান, বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ, ইফতেখান হাসান আল মামুনের ফাঁসি কার‌্যকর হওয়ার পর সালাউদ্দিন সালেহীন, রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ কারাগার থেকেই দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন।

তারা বলেন, সালেহীন ও রাকিবুলরাই পরে বোমারু মিজানকে জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান করে।

২০০৯ সালে ১৪ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার সময় বোমারু মিজান তার স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় অবস্থান করছিল।

আটক অভিযানের সময় তিনি র‌্যাবকে লক্ষ করে বোমা হামলা চালান, যাতে তার স্ত্রীর হাতের কব্জি উড়ে যায়। র‌্যাব তার বাড়ি থেকে গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছিল।

র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেন, ২০০৫ সালে ১৭ অগাস্ট সারাদেশে বোমা হামলা চালানো হয়, সেই বোমাগুলোর মূল কারিগর ছিলেন এই মিজান।  

মিজানের বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটিতে সাজা ৬৩ বছর কারাদণ্ড, একটিতে যাবজ্জীবন।

র‌্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান জানান, মিজানের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করার পর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী র‌্যাব নারী জঙ্গিদের একটি গ্রুপকে গ্রেপ্তার করে, যারা সেসময় সক্রিয় ছিল।

সালাউদ্দিন সালেহীনের বিরুদ্ধে ৪০টি মামলা রয়েছে। তিনটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে এবং ১৩টি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। বাকিগুলোর বিচার কাজ চলছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিনের ময়মনসিংহে সিনেমা হলে বোমা হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।