আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতীয় পার্টির বিপর্যয় যে কারণে

নেতৃত্বের বিরোধ, সংশয়, প্রার্থী দিতে না পারাসহ নানা কারণে চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় সংসদে রওশন এরশাদ ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মধ্যে নেতৃত্বের বিরোধ জিইয়ে রেখেছেন পার্টির কয়েকজন নেতা। তারা চান, পার্টিতে রওশনের কর্তৃত্ব। তবে সারা দেশে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চান এরশাদকে। নেতৃত্বের এই দ্বন্দ্ব নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করছে। এর প্রভাব পড়েছে দলে। ভোটের রাজনীতিতে তাই পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা বলেন, এরশাদ ও রওশনের টানাপড়েনের কারণেই মূলত দলটির তৃণমূল পর্যায়ে এ অবস্থা। এরশাদ বা রওশন কেউই তাকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি। তাই তিনি দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হয়েও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন অরাজনৈতিক হওয়ায় এতে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হয়েছে এটাও বলা যাবে না। জাতীয় নির্বাচনের ধোঁয়াশাই এখনো কাটেনি। তারই প্রভাব পড়েছে উপজেলা নির্বাচনে। এ জন্য অনেকেই এ নির্বাচনে অংশ নেননি।

জানা যায়, জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপজেলা পদ্ধতির প্রবর্তক হলেও গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ৯৭টি উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির একজন মাত্র চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন। তিনি হলেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গোলাম শরিফ রঞ্জু। এর আগে গত নির্বাচনেও তিনি জাপা থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ১১৫টি উপজেলা নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির একজন মাত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান হয়েছেন। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রাশিদুল ইসলাম। নির্বাচনে দলের এমন শোচনীয় পরাজয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করেছে। কারণ, জাতীয় পার্টর্ি এ নির্বাচনের শুরুতে ঢাকঢোল পিটিয়ে মনোনয়ন দিয়েছিল। নেতা-কর্মীরা ভেবেছেন, এরশাদ তার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা নির্বাচনে জয়লাভের আশায় প্রার্থী দিয়েছিলেন। নেতা-কর্মীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন এ নির্বাচনে নজরকাড়া ফল করে ত্রিধারায় বিভক্ত ভঙ্গুর দলকে পুনর্গঠন করে চাঙ্গা করা হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। ২১২টির মধ্যে দুটি মাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান ও ৪টি ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী জাপার নেতা-কর্মীরা এখন হতাশ। এমনকি জাপার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুর বিভাগের কোনো উপজেলায়ও জিততে পারেননি জাপা প্রার্থীরা।পার্টির ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বলেছেন, স্বামী-স্ত্রীর মান-অভিমানে জাতীয় পার্টি এখন তছনছ হতে চলেছে। তাদের ক্ষমতা ও দ্বন্দ্বের নেতিবাচক প্রভাব এখন পড়ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ওপর। সংসদ নির্বাচনে নানা নাটকীয়তা শেষে জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দল হলেও উপজেলা নির্বাচনের এ ফলাফলে এরশাদ ও রওশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলে নানা বিতর্ক উঠেছে। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, প্রথম দফায় ১২ জনকে দলীয় সমর্থন দিলেও দ্বিতীয় দফায় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কাউকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। তাই ফলাফলে এ অবস্থা। তবে ফল বিপর্যয়ের বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, উপজেলা নির্বাচন অরাজনৈতিক। এ নির্বাচনের ফলাফলে কোনো দলের জয়-পরাজয় নির্ভর করে না। আমরা পার্টিকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.