অনেক দিন থেকেই ফর্মহীনতায় ভুগছিলেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। বোলিংয়ে দুর্দশা, ব্যাটেও রান ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশে এসে দুই দুটি হেরে যাওয়া ম্যাচে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দিয়ে নায়ক বনে গেলেন। এখানকার দর্শকদের কাছ থেকেই পেয়েছেন অভাবনীয় সাড়া। বাংলাদেশের খেলার দিন যেখানে গ্যালারিতে লাল-সবুজ পতাকা দেখা যায় না বললেই চলে সেখানে পাকিস্তানের ম্যাচের দিন চাঁদ-তারা পতাকায় সয়লাব স্টেডিয়াম।
নিজের দানবীয় ব্যাটিং এবং দর্শকের এই ভালোবাসা অভিভূত 'বুমবুম'। কাল মিরপুরে অনুশীলন করতে এসে জানালেন তার মুগ্ধতার কথা। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে জয়টাকে খানিকটা কূটনৈতিক রূপ দেওয়ারও চেষ্টা করেন আফ্রিদি। তিনি বলেন, 'দুইটা ম্যাচেই জয় পাওয়া পাকিস্তানের জন্য খুবই দরকার ছিল। কেন বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া দরকার ছিল তার অনেক কারণ আছে।
তবে তা আমি এখানে বিস্তারিত বলতে পারব না। শুধু এটুকু বলব আমার জন্য এবং আমার দেশের জন্য দুই দেশের বিরুদ্ধে জয় পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। '
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে আফ্রিদি যখন ব্যাট হাতে নামেন, তখন ম্যাচটা প্রায় হাত ছাড়াই হয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু মাত্র ২৫ বলে ৫৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে পরিস্থিতি বদলে ফেলেন। শেষ পর্যন্ত জিতেই যায় পাকিস্তান।
আফ্রিদি বলেন, 'আমি আগেই বলেছি এই সিরিজটা আমাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরপরেই শুরু হচ্ছে টি-২০ বিশ্বকাপ। আমি ভালো সময়ই ফর্মে ফিরেছি। যখন আমাদের দরকার ছিল ১০২ রান তখন ভীষণ চাপে ছিলাম আমরা। ওভারে ৯-১০ করে রান দরকার ছিল।
কিন্তু সেদিন আমার ভেতর কেমন যেন আলাদা আত্মবিশ্বাস ছিল। আমার মনে হয়েছে আমি পারব। তার আগের ম্যাচেই আমি ভীষণ চাপের মধ্যেও ভালো ব্যাটিং করেছি। তাছাড়া আমি যে স্থানে ব্যাটিং করি সেখানে সবসময়ই চাপ থাকে। শেষ পর্যন্ত আমি পেরেছি।
'
ফাইনালেও কি এমন বিধ্বংসী রূপে দেখা যাবে আপনাকে? এমন প্রশ্নে আফ্রিদি বলেন, 'এটা বলা কঠিন যে, প্রতিদিনই ভালো ব্যাটিং করব। কিন্তু আমার আসল লক্ষ্য বোলিংয়ের দিকে নজর দেওয়া। তবে আমি আমার দলের জন্য এবং আমার নিজের জন্য পরিস্থিতি বুঝে ভালো ব্যাটিং কিংবা বোলিং করতে প্রস্তুত। আমার ভালো লাগছে এই ভেবে যে, আমি আমার দলের জন্য কিছু দিতে পেরেছি। '
খেলোয়াড় মাত্রই ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই।
তবে আফ্রিদির জীবনে উঠা-নামা একটু বেশি-ই ছিল। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারতের জহির খানের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হয়েছিলেন। অথচ ওই বছরের মাঝামাঝি কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে অবসর নেন ক্রিকেট থেকেই। তারপর আবার ফিরেছেন। বাজে পারফরম্যান্সের জন্য দল থেকেও বাদ পড়েছেন।
তবে বার বারই ফিরে এসেছেন দাপটের সঙ্গেই। সেই দিনগুলোর কথা রোমন্থন করতে গিয়ে আফ্রিদি বলেন, 'ভালো পারফরম্যান্স করলে পাশে সবাই থাকে। কিন্তু খারাপ সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। নিজেকেই সংগ্রাম করতে হয়। যখন আমি ব্যর্থ হই তখন নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করি।
নিজে নিজে নতুন চ্যালেঞ্জ নেই এবং সফল হই। তাই ব্যর্থতার সময়টায় নিজে আরও বেশি শাণিত করি। ' নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বুমবুম বলেন, 'আমার লক্ষ্য ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ খেলা। দেশের জন্য ভালো কিছু করতে চাই। এখন আমি ফিট।
আমার জীবটাই ক্রিকেটের জন্য। নিয়মিত খেলা চালিয়ে যাওয়াই আমার টার্গেট। ' ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ জয়ের কথাও বলেন আফ্রিদি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।