ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখলাম। আবার অনলাইনে একটা খবর পড়লাম। দুটোই হুবুহু তুলে দিলাম। লিংকসহ...
ফেসবুকের পোস্টঃ
তথ্যমন্ত্রী ও নিজামীর ছবি এবং কিছু কথা
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাথে মতিউর রহমান নিজামীর মোলাকাতের ছবি নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। ঐদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একমাত্র সাংবাদিক হিসেবে সত্য কথাটি বলা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করছি।
ঐদিনের সঠিক তারিখটি মনে নেই। তবে ঘটনা ছিল পাকিস্থান হাইকমিশনে। বোমা হামলায় নিহত পাকিস্থানী নেত্রী বেনজীর ভুট্ট্রোর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শোক থাতা খোলে পাকিস্থান হাইকমিশন। আমি তথন আরটিভির রিপোর্টার। আমাকে এ্যাসাইনেমন্ট দেয়া হয় সকালে পাকিস্থানী হাইকমিশনে যাওয়ার।
অফিস থেকে বলা হয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যাবেন। পাকিস্থান হাইকমিশনে গিয়ে দেখলাম কোন রিপোর্টার নেই। সাংবাদিক শুধু আমি। এজন্য একটু খারাপ ও বোধ করলাম অফিস এমন গুরুত্বহীন এ্যাসাইনমেন্টে আমাকে পাঠানোর জন্য। কিছুক্ষণ পরেই লক্ষ্য করলাম মতিউর রহমান নিজামীর ব্যক্তিগত সহকারী খোরশেদ আলম আসছেন।
তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে জানালেন নিজামী কিছুক্ষণের মধ্যে আসছেন। তিনি আসার পর দ্বিতীয়তলায় পাকিস্থানী হাইকমিশনারের সাথে সাোফায় বসে কথা বলছিলেন। আমি এবং ক্যামেরাম্যান দুজনেই উপরে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম হাসানুল ইনু এবং মইনুদ্দীন খান বাদল আসলেন। দোতলায় উঠার সিড়ির ধাপ কয়েকটা বাকি থাকতেই ইনু সাহেব বলে উঠলেন
স্লামুআলাইকুম নিজামী ভাই, কেমন আছেন?
নিজামী বসা থেকেই ইনু সাহেবের সাথে হাত মেলালেন।
সাথে সাথে বাদল সাহেবের সাথেও।
কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় করে নিজামী সাহেব শোক খাতায় সাইন করতে গেলেন। সাইন করে চলে যাওয়ার সময় আবার সোফায় বসে থাকা ইনু এবং বাদল সাহেবর সাথে হাত মেলালেন। বাদল সাহেবের পিঠ ও চাপড়ালেন নিজামী সাহেব।
এটা এভাবেই শেষ হতে পারতো
যাওয়ার আগে বাদল সাহেব আমার হাত ধরে বলে গেলেন
'রাজাকারের সাথে ছবিটা ভাই দেখাইও না'
আমি কোন জবাব দিলাম না
অফিসে এসেই আমাদের তখনকার ভারপ্রাপ্ত চিফ নিউজ এডিটর শাহনেওয়াজ দুলাল ভাই জানালেন, বাদল ভাই ফোন দিয়েছিল নিজামীর সাথে মোলাকাতের ছবিটা যেন না দেখানো হয়!!
আমি কিছুটা বোকা বনে গেলাম
তাদের প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার মানুষ মনে করতাম
একটু হোচট খেলাম
দুলাল ভাইকে বললাম,
কেলাকুলি করতে পারে আর দেখাতে সমস্যা।
এ প্রসেঙ্গ বলে রাথি আরটিভির তখনকার চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু ভাই আমাদের বলেছিলেন দুই নেত্রীর ব্যক্তিগত বিষয় ছাড়া যে কোন তথ্য প্রকাশে কোন বাধা নেই। কিন্তু এই দুই নেতার আবদারে বিব্রত বোধ করেছিলাম।
যাই হোক দুলাল ভাইয়ের সাজেশন চাইলাম।
উনি বললেন, আচ্ছা, স্টোরি করেন, তবে পারলে ঐরকম ছবিগুলো বাদ দিয়ে দিয়েন।
দুলাল ভাইয়ের আদেশে চেষ্টাও করেছিলাম।
তবে ফুটেজ কম থাকায় অনেক দৃশ্য বাদ দিতে পালাম না। দুপুরে নিউজটি গেলও রাতে আর দেখলাম না!!!
আজ ইনু সাহেব তথ্যমন্ত্রী!!!!!!!!! ছবি নেয় অনেক কথা হচ্ছে। মনটা খুব পীড়া দিচ্ছিল সত্য প্রকাশে। তাই লিখলাম। এই সব কিছুর সত্যতা পাওয়া যাবে আরটিভিতে থাকা ফুটেজে।
আজ এই ফুটেজ এতো গুরুত্ব পাবে , আগে ভাবিনি!!!
আজব মানুষ আমরা, আজব আমাদের কাজকর্ম। আজ মেন পড়ে আরটিভির তখনকার ইশতিয়াক রেজা ভাই ও সোহেল মাহমুদ ভাইয়ের কথা। ওনারা প্রায়ই বলতেন বাঙ্গালী বে..জাতি। ( বুঝে নিয়েন ... কি ছিল) এসব কর্মকান্ড দেখলে সত্যিই তা সঠিক মনে হয়।
লিংকঃ http://www.facebook.com/muhammad.n.alam.18
এবার অনলাইনের সংবাদঃ
দৈনিক আমারদেশঃ
খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে ইনু : নিজামী আমার পায়ে ধরতে চেয়েছে
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু করজোড়ে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন বলে বিএনপি চিয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেছেন, ‘নিজামী আমার পায়ে ধরতে চেয়েছিল।
তবে আমি তাকে আমার পা ধরতে দিইনি। পরে হাত ধরে মাফ চেয়েছিল। আমি মাফ করিনি। বিচারের মুখোমুখি করেছি। আর উনার (খালেদা জিয়া) হাতে ধরেছিল, তাই পাশে বসিয়েছেন।
’
অনলাইন সংবাদপত্র নতুন বার্তা ডটকম জানায়, গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে ‘ড. মহানামব্রত স্মারক বক্তৃতা, গুণীজন সম্মাননা ও কৃতী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ড. মহানামব্রত ফাউন্ডেশন ফর পিস অ্যান্ড সলিডারিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, গতকাল যাত্রবাড়ীতে পথসভায় বক্তৃতায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু করজোড়ে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন। এই ইনু ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইবি) নির্বাচনের কাউন্সিলর (সদস্য) পদে নির্বাচনে হেরে গেছেন। ’ এ সময় ব্যাপক করতালি ও স্লোগানে বেগম জিয়ার বক্তব্যকে স্বাগত জানান পথসভায় উপস্থিত ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার হাতে ওই ছবিতে দেখা গেছে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সোফায় বসা অবস্থায় রয়েছেন। তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে সামনের দিকে ঝুঁকে আছেন যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে সোচ্চার তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ড. মহানামব্রত ফাউন্ডেশন ফর পিস অ্যান্ড সলিডারিটির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন ঝিনাইদহের কে. সি. কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নৃপেন্দ্র লাল দাস।
উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র প্রয়োজন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু মুখে গণতন্ত্রের কথা বলি, নিজের জীবন ও সমাজে তার বাস্তবায়ন করি না।
সমাজতন্ত্রের কথা বলি, তবে নিজ গৃহকর্মীকে নির্যাতন করি, আর রাস্তায় রিকশাওয়ালার সঙ্গে তুই তোকারি করি। এভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না। ’
ইনু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান কম নয়। পেছনে তাকালে পুরুষদের থেকে নারীদের অবদান উপরে। মুক্তিযুদ্ধে পুরুষদের দুটি যুদ্ধ ছিল—একটি দেশরক্ষা অন্যটি প্রাণরক্ষা।
তবে নারীদের দেশরক্ষা ও প্রাণ এবং ইজ্জতের রক্ষার লড়াই। পুরুষরা পাকিস্তানের দালাল হয়েছে। নারীরা প্রাণ দিয়েছে কিন্তু মাথানত করেনি। নারীরা দালাল হয়নি। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সংগঠনের পরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন ড. আমিনুল ইসলাম, জগন্নাথ হলের সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Click This Link
বার্তা অনলাইনঃ
জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে করমর্দনের কথা স্বীকার করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইনু এ কথা বলেন।
ইনু বলেন, “আমার এবং নিজামীর করমর্দন বা হাত ধরার ছবি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে নিজামী বসে আছেন-এ ধরনের ছবি খালেদা জিয়া দেখিয়েছেন, এ ছবি দুটিই সঠিক, ভুল নয়। নিজামী আমার সঙ্গে করমর্দন করেন, এ সময় আমি তার সঙ্গে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ করিনি। ”
ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে ইনু বলেন, “ঘটনাটি ৯০’র দশকের, তিনি মাফ চেয়ে আমার হাত ধরেছিলেন।
”
খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত আক্রোস থেকে এ ছবি দেখিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত আক্রোস নেই। ”
মন্ত্রী বলেন, “উনি যতই আমার সঙ্গে করমর্দন করুক আর না করুক, তার দুহাতে হাতকড়া পরানোর রাজনীতি থেকে এক চুলও সড়ে আসিনি। এর প্রমাণ এ ছবি দেখানোর পর থেকে এত বছরে নিরসলভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছি। অবশেষে মহাজোট সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে এবং নিজামী সাহেবসহ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করেছেন। ”
করমর্দনের বিষয়ে ইনু বলেন, “উনি আমার হাত ধরেছেন, উনি মাফ চাওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু যুদ্ধাপরাদীদের মাফ করার আমি কেউ নই, একমাত্র জনগণই এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সুতরাং ওই হাত যে হাত দিয়ে আমাকে ধরেছিল সে হাতে হাতকড়া পরানোর রাজনীতি আমি করি এবং সে রাজনীতি এ মুহূর্তে সফলতার সঙ্গেই করে যাচ্ছি। ”
ইনু বলেন, “যে হাত দিয়ে নিজামী আমার হাত ধরেছিল সে হাত দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার হাতও ধরেছিল, কিন্তু খালেদা জিয়া সে হাতে হাতকড়া পড়ানোর রাজনীতি না করে নিজামীদের তার পাশে রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে নিয়েছেন। ”
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।