Lead us from the unreal to the real; From darkness into light; From death into immortality
; সেদিন ছিল দুপুর এমন,
ঝকঝকে রোদ, অস্থির মন,
আর ঘড়ির কাটায় তখন প্রশ্রয়-
আজকে সকালেই রুপমের এই গানটি শুনছিলাম। বেশ চমৎকার একটা গান। নীল রং ছিল ভীষণ প্রিয়, গানটার নামটাও চমৎকার। আমার প্রিয় রং কাল। তবে নীল ও অনেক পছন্দ।
সময়টা ছিল দুপুর। বেলা ২টা ৪০ এর মত বাজে। খিলক্ষেত থেকে বনানী যাওয়ার জন্যে একটা বাসে উঠলাম। 'বলাকা' নামের বাস। বেশ খালিই ছিল।
দুই একজন দাঁড়ানো। তাদের মাঝে আমি একজন। ভর দুপুর, তার উপর আবার জুমুআ'র নামায কিছু আগে শেষ, তাই রাস্তা বেশ ফাঁকা। র্যাডিসনের সামনে আসতেই প্রচণ্ড এক ঝাঁকি খেলাম। ড্রাইভার মনে হয় দেখতে পায়নি স্পিডব্রেকারটা।
পিছনে বসে থাকা মানুষগুলো চিৎকার করতে থাকল। সাথে হাজারটা গালিগালাজ ফ্রি। আমি সাধারনত এইরকম অবস্থায় ড্রাইভারকে বকাবাজি করাটা অপছন্দ করি। যাইহোক সবাই আবার আগের মত নরমাল হয়ে গেল। ঠিক বনানী কবরস্থানের সংযোগ সড়কে এসে যে কি হল! আবছায়া মনে পড়ে।
আমাদের বাসটা পুরা ১৮০ ডিগ্রিতে গিয়ে সজোরে বাড়ি দিল অন্য একটা মিনি বাসকে। মিনি বাসটা ধাক্কা দিল তার সামনের সিএনজিকে। ধাক্কা খেয়ে সিএনজি চলে আসল রাস্তার মাঝখানে। ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের বাস দুমড়ে মুচড়ে দিল সিএনজিটাকে। আমি দেখতে থাকলাম।
দেখলাম বাস থেকে ধাক্কা সহ্য না করতে পেরে রাস্তায় পড়ে গেলেন একজন। দেখলাম দুমড়ানো সিএনজিটার সামনে থেকে বের হয়ে আছে ড্রাইভারের নিথর দেহ। সিএনজিটায় কোন যাত্রী ছিল না। আমাদের বাসটা তখনও সম্পূর্ণ থামেনি। এলোমেলোভাবে এদিক ওদিক করছে।
তাকিয়ে দেখি ড্রাইভার নেই! গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হতে একটু সময় লাগল। আমার তখন মাথা কাজ করছে না। বাসের ভেতর সবার হুড়োহুড়ি। আমি ধাক্কাধাক্কিতে বের হয়ে এলাম।
বাইরে ঠিক সেই মুহূর্তে অনেক লোক।
একজনকে জিগ্যেস করলাম সিএনজি ড্রাইভার বেঁচে আছে? তিনি উত্তর দিলেন আছে এখনও। কিন্তু বাস ড্রাইভার তো পালাইছে। আমার তখন বোধশক্তি নেই। বাসে হুড়োহুড়িতে, হাতে বাসের দরজায় চাপা খেয়েছি। প্রচণ্ড ব্যাথা।
তখন মাথা কাজ করতে শুরু করল। হাটা ধরলাম পরীক্ষা দিতে।
এটা খুবই সাধারন ঘটনা হয়ত। কিন্তু আমি ওই কয়েকটা মিনিট কিসের ভেতর দিয়ে গিয়েছি আমি জানি। সিএনজি ড্রাইভারটা হয়ত দুপুরের খাওয়া শেষে পান খেতে খেতে গাড়ি চালাচ্ছিল।
তার জীবনে কি হল? ঢাকার পাবলিক বাসগুলোতে এইরকম হরহামেশাই হচ্ছে।
শুনেছি নিজের ভাল নাকি পাগলও বোঝে। তাহলে এইসব ড্রাইভার কি পাগলের চেয়েও অধম? আসলে মানুষের জীবনের মুল্য বুঝতে হলে কমপক্ষে ৫ম শ্রেণি হলেও পাশ করা দরকার। কলার উঁচু করে, গায়ের জোরে বাস চলে কিনা জানি না তবে এভাবে ভাল কিছু নিশ্চিত চলে না। একটা গণ মাইর কর্মসূচী করা উচিত।
পান থেকে চুন খসলেই মাইর। নিজের ট্রান্সপোর্ট নাই দেখে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করি আমরা, মেধাবী হওয়ার জন্যে না। দুর্ঘটনা ঘটলেই তো মেধাবী!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।