আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মালয়েশীয় উড়োজাহাজটি আর নেই?

তারা বলছেন, শনিবার প্রথম প্রহর থেকে নিখোঁজ বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটির এতক্ষণ আকাশে ওড়ার সক্ষমতা নেই। আর উড়োজাহাজটি কোথাও নামলে তা কারো না কারো রাডারে ধরা পড়ত।

“যেহেতু এটি ল্যান্ড করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি, ফলে ধরে নিতে হবে উড়োজাহাজটি আর নেই,” বলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পরিচালক (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল) আজাদ জহিরুল ইসলাম।

কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী বিমানটি ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে ভেঙে পড়েছে ধরে এখন তদন্ত চলছে বলে মালয়েশিয়ার এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স একদিন আগেই জানিয়েছে।

কুয়ালালামপুর থেকে ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর দিয়ে বেইজিং রওনা হওয়া মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটি ওড়ার ৪১ মিনিটের মধ্যে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

রাডার স্ক্রিন থেকে উড়োজাহাজটি হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার পর নয়টি দেশের নৌ ও বিমানবাহিনীর ৪০টি জাহাজ ও ৩৪টি বিমান সাগরের বিশাল এলাকাজুড়ে গত তিন দিন ধরে তল্লাশি চালালেও এমন কিছু পায়নি, যা বিধ্বস্তের প্রমাণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়।

বেবিচক পরিচালক জহিরুল  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডিপারচারের পর থেকে ল্যান্ডিংয়ের আগ পর্যন্ত যে কোনো উড়োজাহাজের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ইউনিটের।

“ফ্লাইট নম্বর এমএইচ-৩৭০ (নিখোঁজ উড়োজাহাজ) এর ক্ষেত্রে বলা যায়, যদি পাইলট কোনো বিপদে পড়তেন তার হাতে যথেষ্ট সময় ছিল যোগাযোগ স্থাপনের। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, হঠাৎ করেই উড়োজাহাজটি সিগন্যাল পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ”

ট্রাফিক কন্ট্রোলের দায়িত্বে থেকে বাংলাদেশে বোয়িং ৭৭৭ এর ওঠা-নামার নিয়ন্ত্রণে অভিজ্ঞ জহিরুল বলেন, “একটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের ফ্লাইং আওয়ার ১৭ ঘণ্টা;অর্থাৎএতক্ষণে উড়োজাহাজটির কোথাও না কোথাও ল্যান্ড করার কথা।

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তিনটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ছাড়াও বিদেশি বিভিন্ন  এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ নিয়মিত হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওঠা-নামা করে।

নিখোঁজ বিমানের ভুয়া পাসপোর্টের দুই যাত্রী থাকায় নাশকতার আশঙ্কাও করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে, যদিও কোনো প্রমাণ এখনো মেলেনি।

সেই সঙ্গে নিখোঁজ হওয়ার আগে বিমানটির মাঝপথ থেকে ফিরতে চাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়ার কথা মালয়েশিয়ার বিমান বাহিনীর প্রধান বলার পর রহস্য ডালপালা মেলেছে।  

জহিরুল বলেন, “হয়ত তাৎক্ষণিক কোনো সমস্যা হয়েছিল, যেটা বিদেশি গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি। কোনো বোমা হামলা বা সন্ত্রাসী হামলাও হয়ে থাকতে পারে।

আসলে উড়োজাহজটির ব্ল্যাক বক্স বা ফ্লাইট রেকর্ডার উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না। ”

বিমানটির রুট বদলের ইঙ্গিত পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “হয়ত উড়োজাহাজটিকে কেউ ফোর্স করেছে কোনো একটি দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। হয়ত পাইলট কোনো সুযোগ পাননি কন্ট্রোল ‍ইউনিটে রিপোর্ট করার। ”

প্রত্যেকটি উড়োজাহাজে একটি ব্ল্যাকবক্স থাকে, যাতে বিমান উড্ডয়ন থেকে শুরু করে সব তথ্যের অডিও রেকর্ড থাকে। যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পর তার সুরক্ষিত ব্ল্যাকবক্সে থাকা রেকর্ড থেকে কারণ স্পষ্ট হয়।

  

মালয়েশিয়ার বিমানটির নিখোঁজ হওয়াকে অনেকের মতো ‘রহস্যময়’ মনে করছেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক পরিচালক কাজী ওয়াহেদুল আলমও।

“বোয়িং ৭৭৭ বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক উড়োজাহাজগুলোর একটি। আর ওই উড়োজাহাজটির বয়স হয়েছিল মাত্র ১১ বছর। তার ওপর শনিবারের আবহাওয়াও ছিল ফ্লাইংয়ের উপযোগী। পুরো ঘটনাটাই রহস্যময়।

তার মতে, নিখোঁজ হওয়ার আগে পাইলটের যোগাযোগের জন্য ‘যথেষ্ট’ সময় ছিল।  

“শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এটি মাটি থেকে ৩৫ হাজার ফুট উপরে ছিল। এর মানে এই যে, নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য পাইলটের কাছে যথেষ্ট সময় ছিল, কিন্তু পাইলট কোনো ধরনের কোনো বিপদ সংকেত পাঠায়নি। ”

এ ঘটনা উড়োজাহাজ চলাচলে নিরাপত্তার বিষয়টি এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের ভাবিয়ে ‍তুলবে বলে মন্তব্য করেন বিমানের সাবেক পরিচালক ওয়াহেদুল।




সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।