আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালবিরোধী প্রচার
মালয়েশীয় টিভিতে গোলাম আযম তনয় নুমান আজমীর বক্তৃতা
বাকী বিল্লাহ
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য দেশে- বিদেশে চলছে গভীর ষড়যন্ত্র। সম্প্রতি গ্রেফতারকৃত যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে নুমান আজমি সেভ গোলাম আজম ক্যাম্পেইন নামক সংগঠনের পক্ষে মালয়েশিয়ার একটি টেলিভিশনে ৬ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড বক্তৃতা দেন। বক্তৃতায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়। বক্তৃতার কিছু অংশ সংবাদে তুলে ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে গোলাম আযমসহ অন্য জামায়াত নেতা ও সাকা চৌধুরীর বিচার প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার লক্ষ্যেই সেভ গোলাম আজম ক্যাম্পেইন প্রচার সেটা নুমান আজমি তার বক্তব্যে পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন।
গোলাম আযমের ছেলের এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যের আরও তথ্য উদঘাটনের জন্য গোয়েন্দা সদস্যরা তদন্তে নেমেছে।
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, গোলাম আযমের ছেলে নুমান আজমি গত ১ জানুয়ারি মালয়েশিয়া পিআরসি টেলিভিশনে টানা ৬ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড বাংলাদেশবিরোধী ও জামায়াতে ইসলামী ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ইংরেজিতে বক্তব্য তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে মালয়েশিয়াসহ পুরো বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বর্তমান সরকারকে সেকুলার ও ইসলামবিরোধী সরকার বলে প্রচার করেন।
নুমান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশকে যে দল শাসন করছে তারা ইসলামবিরোধী।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা দেশে হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করছে। অন্যদিকে তারা নিজেদের শত শত কর্মীকে জেলখানা থেকে মুক্ত করেছে। তারা ক্ষমতায় আসার পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। যা হিউম্যান রাইটস, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাখ্যান করেছে। তার মতে এটা নিরপেক্ষ নয়, সরকারের অনুসারীদের কোর্ট।
সরকার জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় সব নেতাকে গ্রেফতার করেছে। সরকারের অনেক মন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেছেন, এদের কোন অভিযোগ এবং বিচার ছাড়াই ফাঁসিতে ঝুলানো উচিত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে কাঙ্গারু আদালত বলে উল্লেখ করে নুমান বলেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গণআদালতের প্রধান ছিল। সেখানে তিনি জামায়াত নেতাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, ট্রাইব্যুনালের সব বিচারক গভর্নমেন্ট সমর্থক ও অনুসারী।
অভিযুক্তদের কোন মোৗলিক অধিকার নেই। যা দেশে একটা অপরাধীরও আছে। এর কারণ বর্তমান সরকার ইসলামকে ভয় পায়। নুমান আরও বলেন, এই ট্রাইব্যুনালের আরেকটা উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধীদলগুলোকে দুর্বল করা। এ জন্য তিনি মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের সব মুসলমানের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সূত্র আরও জানায়, যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতে ইসলামী নেতাদের এভাবে যাতে ট্রাইব্যুনালে বিচার করা না হয় তার জন্য পদক্ষেপ নিতে টিভি বক্তৃতায় আহ্বান জানান নুমান আজমি।
বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, দেশে প্রতিদিন শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ঘটছে। মানুষের কথা বলার কোন অধিকার নেই। যে কেউ সরকারের সমালোচনা করলে গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশে বড় আকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।
এমনকি গভর্নমেন্টের পক্ষে না গেলে গ্রেফতার করা হয়। এভাবে জামায়াতে ইসলামীর ওপর অত্যাচার করা হয় বলে তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য গোলাম আযমের ছেলে বিদেশি টেলিভিশনে এ বক্তব্য তুলে ধরেছে। ১৯৯৩ সালে সরকার গোলাম আযমকে গ্রেফতার করে। পরে আদালত তাকে ছেড়ে দেয়।
দেশকে বর্তমান ইসলামবিরোধী সরকারের হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানান নুমান আজমি। দেশের পুলিশ ফোর্স, প্যারা ম্যালেটারি গ্রুপ সরকারের মাসলম্যান হিসেবে কাজ করছে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে বলে উল্লেখ করা হয়। গোলাম আযমের ছেলের এই বক্তব্যের সিডি সংবাদে সংরক্ষিত আছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রবাসী ও বিদেশিদের সাপোর্ট পাওয়ার জন্য গোপনে এ সব ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে। এই বক্তব্যের কিছুদিন পর দেশে সেনাবাহিনীতে ধর্মান্ধদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ধরা পড়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।