আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেয়ার বাজার: ট্রেইলিং স্টপ

oracle.samu@googlemail.com

প্রফেশনাল কাজের জন্য পড়াশোনার বাইরে বই-পিডিএফ পড়ার অভ্যাস ভায়াবহ ভাবে কলে গেছে ইদানিং কালে। চিত্যবিনোদনের জন্য পড়া - এটা এখন প্রায় স্বপ্ন আমার জন্য। শেয়ার বাজার নিয়ে আমার অসম্ভব আগ্রহ ও খুব একটা কাজে দিচ্ছিলনা শেয়ার সম্পর্কিত বইপত্রে চোখ রাখতে। মাস খানেক আগে প্রায় নিজের উপর জোর খাটিয়ে 'Stock Investing for Dummies' পিডিএফটি পড়া শুরু করলাম। জানা অনেক বিষয় গুল ঝালাই হবার পাশাপাশি নতুন একটা টেকনিক শেখা হল, যার নাম ট্রেইলিং স্টপ।



যারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছেন তাদের অনেকেই ঠিক বুঝতে পারেন না যে কত দামে তার হাতে থাকা শেয়ারটি বিক্রি করবেন। তাই আমি শেয়ার কেনার সময়ই একটা টার্গেট ঠিক করে তার অপেক্ষায় থাকতাম। অভিষ্ট দাম পেলেই বিক্রি ! ফলে শেয়ার হাত ছাড়া করার পরই দাম অনেক বেড়ে যাবার ঘটনা ঘটেছে বেশ কবার। এমন অবস্থায় আফসোসে হাত কামড়ানো ছাড়া কোন উপায় নাই - দাম বাই জোনের বাইরে কিনে ধরা খাবার সম্ভবনা আছে আবার দাম ও ধীরে ধীরে বাড়ছে অর্থাৎ চেয়ে দেখা ছাড়া কোন উপায় নাই।

এই অবস্থা থেকে বাচার একটি ৯০ ভাগ সফল উপায় হল ট্রেইলিং স্টপ সেল অর্ডার।

ধরুন ১০০ টাকায় কেনা একটি শেয়ারে আপনার সেল টার্গেট হল ১৩০। সে অনুযাই বিক্রির পড় দাম সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায় উঠল। ফলে আপনি অতিরিক্ত ৪০ টাকা লাভ থেকে বন্চিত হলেন, ভাবুন যদি আপনি শেয়ারটি ১৫৩ বা ১৬২ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন ! শুধু মাত্র জতিশী ও অতিভাগ্যবানদের পক্ষেই শেরারটি ১৭০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। তাই আমরা ১৩০ এর চাইতে ১৫৩/১৬২ পেলেই আল্লহকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।

এখন আমি আপনাদের এই উপায় যা আমাদের ১৫৩/১৬২ পেতে সাহায্য করবে তার বিবরণ দিচ্ছি।

ট্রেইলিং স্টপ - নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে আমাদের শেয়ার মূল্য কে ট্রেইল বা অনুসরন করতে হব, যা আমরা সবাই করি কিন্তু ঠিক উপায়ে করি না। অস্ভাবিক অবস্থা না হলে কোন শেয়ারের দামই টানা বাড়ে না। ২-৪ দিন বাড়ে ১-২ দিম কমে আবার বারে অর্থাত উঠা-নামার মধ্যে উঠার গতি বেশি বলেই দাম বৃদ্ধি পায়।

এবার আমাদের উদাহরনটিতে ফিরে যাই, ১০০ টাকার শেয়ারটি যখন ১২০ টাকায় পৌছে তখনই আমাদের টেনশন শুরু কারন সেল টার্গেট আর ১০ টাকা দূরে। এই অবস্থায় আপনি ১০% ট্রেইলিং স্টপ প্রয়োগ করুন।

ফলে আপনার নতুন সেল টারগেট হল 120X0.9=108। ১০৮ টাকা হলে আপনি বিক্রি করে দিবেন। দাম কমে ১২০ থেকে ১১৫ হল। শে্যারটির দাম ১৩০ টাকা হবার কোন নিশ্বয়তা কিন্তু নাই হতে পারে ১২০ টাকাই এ বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ মূল্য হতে পারে এ ক্ষেত্রে আপনি ১০৮ টাকায় শে্যারটি সেল করে লাভ সহ বেরুতে পারবেন না হলে ১৩০ টাকার আশায় লোকশানে পড়বেন। কিন্তু যদি শেয়ারটি ১১৫ টাকা থেকে ১২৫ টাকায় আসে তখন আপনি আরেকটি সেল টারগেট পাবেন 125X0.9=113।

এভাবে ১৩০ এ ১১৭, ১৪০ এ ১২৬ টাকা আপনার সেট টারগেট হল। যেহেতু দাম এখন ১৪০ মানে আপনার টার্গেটের চাইতে ১০ টাকা বেশি সেহেতু আপনি আরো আক্রমনাত্বক হলেন ট্রেইল পারসেন্টেজ ১০ থেকে ৫ এ নিয়ে আসলেন। ফলে ১৪০ এ 140X0.95=133 , ১৬০ এ ১৫২ আর ১৭০ এ ১৬২। আর যার আক্রমনাত্ব না হয়ে ১০% স্হির ছিলেন তারা ১৫৩ টাকা সেল টারগেট ঠিক করবেন। শেয়ারের দাম ১৭০ থেকে এবার পড়তে শুরু করল ১ দিন বাড়ে টো ৩ দিন পরে এই অবস্থায় দাম ১৬২ বা ১৫৩ তে আসলেই সেল করুন।

১৩০ এর চাইতে কি ১৫৩ বা ১৬২ অনেক বেশি আকর্ষনীয় নয় ? আমার কাছে নিশ্বিত ভাবেই বেশ আকর্ষনীয়। ইউটিউবে সার্চ করলেই এই টেকনিকের অনেক সুবিধা-অসুবিধা পেয়ে যাবেন। তখন ১০% ও ৫% ট্রেইলিং স্টপ সেট করার মাজেজা আরো ভাল বুঝবেন। তবে বিশেষগ্ঙরা কিন্তু ৮% ই স্হীর থাকতে উৎসাহীত করেন আর আমার পড়া বইটির লেখক ১০% কেই অনুসরন করতে উৎসাহ দিয়েছেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.