আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমুসলিমদের উৎসবে কেন আমার মুসলিম ভাই-বোনেরা ??

ভেজাল ডিসলাইক করি।

ছোট্ট ২টি শব্দ 'অসাম্প্রদায়িকতা' ও 'ধর্মনিরপেক্ষতা'।
কিন্তু এর অর্থ খুবই ভয়াবহ।
অসাম্প্রদায়ীক - অর্থ 'যার কোন সম্প্রদায় নেই'। কিন্তু একজন মুসলিম যদি দাবী করে যে সে অসাম্প্রদায়ীক তবে তার ক্ষেত্রে কতটুকু গ্রহনযোগ্য?
আমি যখন দাবী করি আমি একজন মুসলিম ।

ধর্ম বিশ্বাসের কারনে পৃথিবীর সকল মুসলমান একই সম্প্রদায়ে। অর্থাৎ, নিজেকে ইসলাম সম্প্রদায়হীন ভাবা আর অমুসলিম ভাবা একই।
আবার আমি যখন নিজেকে বাঙালী পরিচয় দিই তখন কি আমি আর অসাম্প্রদায়ীক থাকতে পারি?

ধর্মনিরপেক্ষতা- অর্থ ধর্মের উরধে অবস্থান নেয়া। অর্থাৎ, যিনি কোন ধর্মই মেনে চলেন না। এক কথায় নাস্তিক।

একটা ইনটেরিম পিরিয়ড। এটি ইসলাম নিষ্ক্রিয় করে ফেলার একটি কৌশল যা ধীরে ধীরে কাজ করে।

আর আধুনিকতার সহজ সংজ্ঞা হল -- একজন মুসলিম যখন অন্য মানব রচিত ধর্মগুলোর নোংরামি , বেহায়াপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সেগুলোকে সংস্কৃতির অংশ হিসেবে ধারণ করে/মেনে নেয় ও অন্য ধর্মের তথা মুশরিকদের সাথে পালন করে তখন তা আধুনিকতা বলেই পরিচিতি পায়।
একটি কথা বেশ প্রচলিত যে, ইতিহাসের মোড়গুলো সব তরুণরাই ঘুরিয়েছে! মিথ্যে নয় অবশ্য। ইসলামের স্বর্ণযুগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা সেই টগবগে যুবকদের বীরত্বগাথাই দেখি।

এবার সেই দৃষ্টি একটু আজকের তরুণ তরুণীদের দিকে তাক করি তো! খাও, দাও, ফুর্তি কর আদর্শ ছাড়া আর কিছু নেই! পাশ্চাত্যের কুফফাররা মুসলিম দেশগুলোতে নিজেদের নোংরা প্রবৃত্তিপূজার দ্বীন চাপিয়ে দিয়ে মহান দ্বীন ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য যে কয়টা হাতিয়ার ব্যবহার করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী হল তরুণ- তরুণীদের মূল্যবোধ- নৈতিকতা হরণ। তাদের ভেতর থেকে আত্মসম্মানবোধ আর হায়ার পর্দা হরণ করে সেখানে দেওয়া হয়েছে আধুনিকতার নামে নোংরা কিছু মানসিকতা যা আজকালকার যুগে জাতে উঠার মানদণ্ড!

হলি খেলা পরিপূর্ণভাবেই হিন্দুধর্মীয় উৎসব এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের বসন্তকালীন উৎসব হলি খেলাই পশ্চিমবঙ্গে দোলাযাত্রা কিংবা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। তাহলে একবার ভাবুন, সার্বজনীন নাম দিয়ে বিশেষ একটি ধর্মের আচার অনুষ্ঠান, পুজাকে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়ার অর্থ কি?

হিন্দুদের সাথে হলি খেলা ইসলামে হারাম এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনি যতই বলুন না কেন যে আপনি শুধুমাত্র মজা করার জন্য খেলছেন কিন্তু এর মাধ্যমে অমুসলিম কাজগুলোই নির্দেশিত হয়।


এর অনেক যুক্তি আছে।
প্রথমত, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। ইসলামের কোথাও এ ধরনের খেলার mention নাই।
দ্বিতীয়ত, যারা হলি খেলে , তারা নিজেদের মধ্যে থাকেনা, উত্তেজনার বশে সামনে যাকেই পায় তাকেই রঙ ছুড়ে মারে এবং এ ধরনের উৎসবে অনেকেই নেশা করে মাতাল হয়ে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় যা ইসলামে হারাম। ব্যভিচারের প্রতি আহবান জানানো শয়তানের ক্লাসিকাল ট্রিকগুলোর অপর একটি, যেটাকে কুরআনে “ফাহিশাহ” ৪শব্দের আওতায় আলোচনা করা হয়েছে, শয়তানের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন:
“হে মানুষ! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র বস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার কর আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না।

সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তো তোমাদের নির্দেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজ [ব্যভিচার, মদ্যপান, হত্যা ইত্যাদি] করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলতে যা তোমরা জান না। ” [সূরা আল-বাক্বারাহ, ২:১৬৮-১৬৯]
তৃতীয়ত, ইসলাম একজন মুসলিম ছেলেকে বা মেয়েকে অপরিচিত ছেলে বা মেয়েকে সংস্পর্শ করার অনুমতি দেয়না। আর এ সকল উৎসবে আকৃষ্ট হবার অন্যতম দিক হচ্ছে এটি। পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষকে যে সকল আকষর্ণীয় বস্তু দ্বারা পরীক্ষা করে থাকেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী।

রাসূলুল্লাহ(সঃ) বলেন:
“আমি পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বড় কোন ফিতনা রেখে যাচ্ছি না। ” [বুখারী ও মুসলিম]
চতুর্থত, আমাদের মহানবী (সঃ) মুসলিম ব্যতীত অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনে নিষেধ করেছেন ।

Allah, the All-Wise also says: "Friends on that Day will be enemies one to another, except al-Muttaqoon (i.e. those who have Taqwah)." [43:67]

সবচেয়ে বড় বিষয় হল, পৃথিবীতে মুসলিমদের major duty হল আল্লাহ্‌ এর ইবাদাত করা এবং অমুসলিমদের ইসলামের দাওয়াত দেয়া, তাদেরকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা।
আপনি যদি ভাবেন আপনি তাদের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে অনেক মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন, এতে তারা ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট হবে তবে আপনার চিন্তা ভুল । বরং তারা ভাব্বে আপনি তাদের ধর্মে আকৃষ্ট হচ্ছেন।

এবং তারা তাদের ধর্মটাকেই আপনার কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করবে।
এবং খুব সূক্ষ্মভাবে বিষয়টা দেখলে বুঝা যাবে যে, আপনি তাদের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নিয়ে তাদের ধর্মটাকে support করছেন, তাই পরিষ্কারভাবেই বলতে চাই, অন্য ধর্মকে support করা মানে ‘‘আল্লাহ্‌ এর অংশীদার আছে (নাউজুবিল্লাহ)’’ এই চিন্তা করা।
that means, জেনে হোক না জেনে হোক আপনার দ্বারা শিরক হচ্ছে। আর এই শিরক এমন অপরাধ যে, শিরকের ওপর কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে চিরতরে হারাম করে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন:

“নিশ্চয়ই যে কেউই আল্লাহর অংশীদার স্থির করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন, আর তার বাসস্থান হবে অগ্নি। এবং যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।

” [আল-মায়িদাহ, ৫:৭২]

আরও জানার জন্যে ডঃ জাকির নায়েকের লেকচার শুনতে পারেন এই লিঙ্ক এ-- http://www.youtube.com/watch?v=qFoQv040OXU

আমার অনেক মুসলিম ভাইবোনেরা অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে হিন্দুদের এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন, ছবি তুলেছেন, ফেসবুকে আপলোড করেছেন কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি যে কিভাবে আপনাকে দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে?
অনেকেই উপলব্ধি না করলেও উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান-ধারণার ছোঁয়া।
আর এজন্যই ইসলাম ধর্মে মহানবী মুহাম্মাদ (সঃ) পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উৎসবকে নির্ধারণ করেছেন, ফলে অন্যদের উৎসব মুসলিমদের সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ(সঃ) বলেন:
“প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ রয়েছে, আর এটা আমাদের ঈদ। ” [বুখারি ও মুসলিম]

আল্লাহ বলেন:
‘প্রতিটি জাতির জন্য আমি ধর্মীয় উপলক্ষ নির্দিষ্ট করে দিয়েছি যা তাদেরকে পালন করতে হয়।

’ (আল-হাজ্জ্ব, ২২:৬৭)


এইসব বিষয়কে অনেকে কালচার বলে উপাধি দেয়। আর না মানতে চাইলে বলে অন্ধবিশ্বাসী ,সংকীর্ণমনা ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু হলি খেলা কি বাংলাদেশী কালচার? হিন্দি গান কি বাংলাদেশী কালচার? রঙ মেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সবাই মিলে গোসল করা কি বাংলাদেশী কালচার? একটু ভাবুন, সচেতন হউন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.