ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস এখন ছাত্রলীগের দখলে। আর হলগুলোতে কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। জাতীয় রাজনীতির জের ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল এখন অস্তিত্ব সংকটে।
এদিকে ইবিতে ছাত্রসংগঠনগুলো সহিংস রাজনীতি ছেড়ে নতুন কৌশল নিয়েছে। চাকরিপ্রার্থী ছাড়া ছাত্রলীগের কেউ বিতর্কিত কাজে জড়াচ্ছেন না।
গত পাঁচ বছর ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের আধিপত্য থাকলেও এখন তারা গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদের। ছাত্রলীগও ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে। তবে অস্তিত্ব সংকটে পড়া ছাত্রদল কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
মহাজোট সরকার গঠনের পর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তারুণ্যের উদ্দীপনা আসে। আবাসিক হলগুলোতে শিবিরের পাশাপাশি শক্ত অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ।
পান থেকে চুন খসলেই দুই পক্ষে বেধে যেত বিবাদ। দিনভর সংঘর্ষ। তবে হলগুলোতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের দেখা মিলত না। ক্যাম্পাসে মিলত তাদের নীরব উপস্থিতি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হলে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকে ছাত্রদল আর পিছুটান দেয় ছাত্রলীগ।
তবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখে ছাত্রশিবির। একসময় ক্যাম্পাসে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় গত পাঁচ বছর দাপিয়ে বেড়ানো ছাত্রলীগ। আর শিবিরের সঙ্গে সহিংস রাজনীতিতে অংশ নেয় ছাত্রদল। এরপর ক্যাম্পাসে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ, অবরোধ, পিকেটিং সবকিছুতেই সক্রিয় থেকেছে ছাত্রদল।
গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠন করলে ক্যাম্পাসে শিবির-ছাত্রদল দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাস অচল করে রাখে।
৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রদল। তখনো ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের উপস্থিতি মেলেনি। নির্বাচনের পর পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট। ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাজনীতিতেও তারা সক্রিয় হতে থাকে।
অন্যদিকে ছাত্রশিবির নীরবে তাদের কার্যক্রম চালায়। পিছু হটে ছাত্রদল। বাস পোড়ানোর মামলায় আটক হন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম রাশেদ। এরপর কোনো আন্দোলনে নামেনি সংগঠনটি। ইবি ছাত্রদলের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থানের কথা বললেও আমাদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।
আর ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসী আমাদের নেতা-কর্মীদের শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করছে। জাতীয় রাজনীতির অনুকূল পরিবেশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে ক্যাম্পাসে সময় দিচ্ছেন। এক সময় গ্রুপিং থাকলেও এখন সবাই মোটামুটি ঐক্যবদ্ধ। তবে মাঝে মধ্যেই তাদের সব অর্জন চাকরিপ্রার্থী কিছু ছাত্রলীগ নেতা ধূলিসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। চাকরির দাবিতে ক্যাম্পাসে ভাঙচুরসহ তাণ্ডবলীলা চালান তারা।
ইবি ছাত্রলীগের আহবায়ক শামীম খান বলেন, ছাত্রসংগঠনের নামে ক্যাম্পাসে কেউ অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করলে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।