আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঠাকুরগাঁওয়ে চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

মাটির প্রকৃতি ও জলবায়ুতে সুবাসিত চা উৎপাদনে ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্ত এলাকায় বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে ব্যক্তি উদ্যোগে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম নিটোলডোবায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ করে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এক শৌখিন উদ্যোক্তা।

ঠাকুরগাঁও জেলার জমি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২৫০ থেকে ২৮০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে। মাটি, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য পরিবেশগত অবস্থা চা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুল আহসানের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া এবং আটোয়ারী উপজেলার সীমান্তবর্তী জমির মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করেন।

ওই বিশেষজ্ঞ দলের মতে এ দুই জেলার জমিতে যে পরিমাণ জৈব সার আছে তা সিলেটের জমির তুলনায় বেশি এবং তা চা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এছাড়া এখানকার মাটির প্রকৃতি বেলে দো-অাঁশ ও বেলে কাদা দো-অাঁশ হওয়ায় তা চা চাষের খুবই অনুকূলে। এখানকার জমির অম্লত্ব সীমার মধ্যে রয়েছে এবং মাটির স্তর রয়েছে সহায়ক।

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাগর নদীর তীরে অবস্থিত ১০ হাজার একর উঁচু জমিতে চা চাষের সম্ভাবনা নিশ্চিত করেন বিশেষজ্ঞ দল। বিশেষজ্ঞ দলের মতে, পাশের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলায় ২০০০ সাল থেকে চা চাষ শুরু হয়েছে।

২০০২-০৬ সালে সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে চা চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ইতোমধ্যে সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে ১১টি এস্টেট, ১১টি জোত চাষি ও ১৭৮টি ক্ষুদ্র চা উৎপাদনকারী ৮৬৮ একর জমিতে চা চাষ করেছে। শুধু তাই নয়, কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট তাদের উৎপাদিত চা পাতা প্রসেসিং করে আর্গানিক মিনা চা নামে বাজারজাত শুরু করেছে। টিটিসিএল চা প্রসেসিং কারখানা স্থাপন করে শীঘ্রই চা বাজারজাত করতে যাচ্ছে। এতেই শেষ নয়, সেখানে আটজন চাষি ও টিটিসিএল চা চারার নার্সারি গড়ে তুলেছে।

টিটিসিএল ১২ লাখ চারা বিভিন্ন চাষিকে সরবরাহ করেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া এলাকাতেও দুটি চা চারার নার্সারি গড়ে উঠেছে। সিরাজুল ইসলাম ও ময়নুল হক নামে দুই ব্যক্তি কুজিশহর ও মধুপুর গ্রামে চা চারার নার্সারি গড়ে তুলেছেন। সেখানে উৎপাদিত চারা পঞ্চগড় জেলায় সরবরাহ করে আসছেন।

 

চা বোর্ডের বিশেষজ্ঞ দলের মতামতের ভিত্তিতে পঞ্চগড়ে চা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পরীক্ষামূলক চা বাগান গড়ে উঠেছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের পুত্রবধূ কানিজ ফাতেমা ওরফে শ্যামা ওই উপজেলার নিটলডোবা গ্রামে ২০ একর জমিতে চায়ের বাগান গড়ে তুলে এলাকাবাসীর সামনে নতুন আশার সঞ্চার করেছেন। এ চা বাগানে শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ এখানকার ১০ হাজার একর উঁচু জমিতে চা চাষের উপযুক্ততা রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঠাকুরগাঁওয়েও চা চাষের সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞ দলের মতে, এখানকার জমিতে উৎপাদিত চা যেহেতু সুবাসিত তাই এখানে চা চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা গেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বৈদেশিক অর্থ আয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে।

এতে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন সাধিত হবে।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.