আমরা এখন যে যায়গাটায় দাঁড়িয়ে আছি এটা শাহবাগ মোড়। অবশ্য এটাকে আমরা ‘প্রজন্ম চত্বর’ বলতেই বেশি পছন্দ করি। এই প্রজন্ম চত্বরেই আমাদের জাতিসত্ত্বার পুনর্জাগরণের শুরু। ভাবছেন, তিরিশ লাখ শহীদ আর সাড়ে চার লাখ (চার লাখ আটষট্টি হাজার১) নির্যাতিত নারীর মূল্যে যে দেশ স্বাধীনতা পেল তার মূল চেতনা ঢাকা পড়ে যায় কিভাবে? দোষ চাপানোর জন্য রাজনৈতিক নেতাদের নীতিহীনতা, অপরিণামদর্শীতা ও ক্ষমতালিপ্সু মনোভাব এর কথা বলা যায়। কিন্তু এতে করে নিজেদের রাজনৈতিক অসচেতনতা ও ইতিহাসবিমুখতার দায় এড়ানো যায় না।
আমি তবে প্রজন্ম চত্ত্বরের কথাই বলি- যখন কাদের মোল্লা’র ফাঁসির দাবিতে আবালবৃদ্ধবনিতারা জড়ো হয় এই চত্ত্বরে। কাদের মোল্লা পাক বাহিনীর এদেশীয় দোসরদের একজন যারা ’৭১-এ বাংলার ইতিহাসে জঘন্যতম নারকীয় হত্যাকান্ড চালিয়েছিল। কাদের মোল্লা ১৯৭১ সালের ২৪শে এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে মিরপুরের আলোকদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৩৪৪ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে; এছাড়াও ’৭১-এ আরো হত্যাকান্ড, ধর্ষণ ও অপরাধে জড়িত ছিল। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই এসব দোসরদের বিচার শুরু করে যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত দেশটি। কিন্তু জাতির জনককে হত্যা করার পর তা চাপা পড়ে যায়; ধর্মনিরপেক্ষ জাতি পরিণত হয় ধর্মীয় রাষ্ট্রে আর তার ছায়ায় পুনর্বাসিত হয় সেই সব নরপশুরা তাও এক বীর মুক্তিযোদ্ধার হাত ধরে; ধর্ম হয়ে পড়ে তাদের কুক্ষিগত।
ইহুদিদের খারাপ জাতি বলে গালি দেওয়া হয় কিন্তু তারা পৃথিবীর কোণায়-কোণায় লুকিয়ে থাকা নাৎসিদের বিচারের মুখোমুখি করেছে; আর আমরা চার দশক পরেও এদেশীয় দোসরদের বিচার সম্পন্ন করতে পারিনি; কবে মূল পরিকল্পনাকারী সেইসব পাকিস্তানিদের বিচারের মুখোমুখি করব?
ডানদিকে যে ভবনটি দেখতে পাচ্ছেন, এটি আমাদের ‘জাতীয় জাদুঘর’। জাদুঘরের ইতিহাস আমাদের দেশে খুব বেশি দিনের নয়; ১৯১৩ সালের ৭ই আগস্ট শুরু ঢাকা জাদুঘরের যাত্রা যা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় পরের বছর ২৫শে আগস্ট। আর এই ভবনটি চালু হয় ১৯৮৩ সালের ১৭ই নভেম্বর। এখানে নৃতত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং আধুনিক ও বিশ্ব-সভ্যতা- ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা প্রদর্শনী রয়েছে। এছাড়া এখানে একটি সংরক্ষণাগারও রয়েছে।
পরের ভবনটি ‘সুফিয়া কামাল জাতীয় গণ গ্রন্থাগার (কেন্দ্রীয় গণ গ্রন্থাগার)’- দাঁড়িয়ে আছে বইয়ের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ গ্রন্থাগারে বাংলা-ইংরেজির পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার বইয়েরও সংগ্রহ আছে। আর এর শওকত ওসমান মিলনায়তন প্রায়ই বসে দেশি-বিদেশি চলচিত্রের মেলা।
বাংলাদেশের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ১৯৪৮ সালে আরো কয়েকজন প্রখ্যাত শিল্পীদের সাথে নিয়ে ছবি আঁকিয়েদের জন্য শুরু করেন “Government art Institute” যা পরবর্তীতে পরিবর্তিত হয়ে পরিণত হয় ডানদিকের ‘চারুকলা ইন্সটিটিউট’-এ। আর এর ঠিক রাস্তার উল্টোপাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কোণায় দেখুন ‘ছবির হাট’।
এখানে খোলা আকাশের নিচে চলে তরুণ উদীয়মান চিত্রশিল্পী ও আলোকচিত্রীদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী ও বেচা-বিক্রী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যা আগে রেসকোর্স ময়দান নামে পরিচিত ছিল, বাংলাদেশের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিনের সাথে সবসময় মিশে থাকবে। প্রথম দিনটি ৭ই মার্চ, ’৭১ এর এই দিনেই স্বাধীনতাকামী মুক্তিকামী লাখ জনতা জড়ো হয়েছিল এইখানে তাদের প্রাণের নেতা শেখ মুজিবের কাছ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের ডাক শোনার জন্য। সেদিন এখানে উত্তোলিত হয় পাকিস্তানের পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা। আর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এখানেই আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
এইখানেই যে যায়গাটিতে সাক্ষরিত হয়েছিল পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ সেখানে জ্বলছে শাশ্বত বাংলার শিখা চিরন্তন।
উৎসবমুখর বাঙালি জাতি সুযোগ পেলেই মেতে উঠে উৎসবে আর উৎসবের দিনেরও অন্ত নেই- বাংলা নববর্ষ, ইংরেজি নববর্ষ, বসন্ত, বইমেলা, ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদি। কিন্তু এখানে উৎসবের কোন উপলক্ষ লাগে না, প্রতিটা দিনই এখানে উৎসবের, প্রাণের, আনন্দের, উল্লাসের- এটাই টিএসসি। কিন্তু উৎসবমুখর এই মুখগুলোই প্রতিবাদী হয়ে উঠে যখন দেখে তাদের ক্যাম্পাসে চলে ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাস। আর এই প্রতিবাদের প্রতীক হচ্ছে ‘সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য’।
মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান ভিবাগের ছাত্র মঈন হোসেন রাজু ১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ সন্ত্রাস বিরোধী মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার স্মরণে নির্মিত হয় এই ভাস্কর্যটি। আর ঐ কোণায় দেখুন, আমি সুস্থ গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখি যখন কোণের ঐ স্থাপত্যটির দিকে তাকাই, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ ডাঃ মিলনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত এটা।
চলুন বামদিকের রাস্তাটি ধরি। ডানে দেখছেন বাংলা একাডেমি ভবন; বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষ্যে এই একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বসে মাসব্যাপী লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মিলন মেলা ‘একুশের বইমেলা’। বাংলা একাডেমির উল্টো দিকে দেখুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতরে দেখা যাচ্ছে রমনা কালী মন্দির। পাঁচশতবর্ষী মূল কালি মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ধূলোর সাথে মিশিয়ে দেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চের প্রথম প্রহরে। সে রাতে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করে ৮০-১০০ আশ্রমবাসীকে করে আর ধরে নিয়ে যায় ১২ জন যুবতীকে যারা আর কোন দিন ফিরে আসেনি। ২
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশের অপূর্ব এই স্থাপত্য নিদর্শনটি হল ‘তিন নেতার মাজার’; এখানে শায়িত আছেন বাংলার তিন প্রখ্যাত নেতা- এ,কে, ফজলুল হক (১৮৭৩-১৯৬২), হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (১৮৯২-১৯৬২) এবং খাজা নাজিমুদ্দিন (১৮৯৪-১৯৬৪)।
স্মৃতি সংরক্ষণে বোধ করি আমাদের বেশ অনীহা, নতুবা অর্ধ-নিমগ্ন নৌকার মত কেন অযত্নে পড়ে থাকবে এই ‘ঢাকা গেইট’; অনেক সময় হয়তো খেয়ালই হয়না যে এটি এক সময় স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে স্বাগত জানাত আগন্তুকদের; আর হ্যাঁ, আমরা এতক্ষণ যে পথটাতে হাঁটলাম তা ঐ সময় ঢাকার মূল অংশের বাইরে ছিল।
দোয়েল চত্বরের ওপারে লাল শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটি হল কার্জন হল। শতবর্ষী এ ভবনটি নির্মিত হয়েছিল ঢাকাকে প্রাদেশিক রাজধানী করার পর নতুন রাজধানীর নগর ভবন (টাউন হল) হিসেবে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু শরীফউদ্দীন আহমদ এক প্রবন্ধে লিখেছেন এ ধারণাটি ভুল। এটি নির্মিত হয় ঢাকা কলেজের পাঠাগার হিসেবে।
১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে, ঢাকা কলেজের ক্লাস নেয়া হতে থাকে এখানে। ৩ তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ ভবনটি ভাষা আন্দোলনের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। আসুন এই ডানদিক দিয়ে শহীদ মিনারে যাই।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার- ভাষা আন্দোলনের প্রতীক। প্রথম শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন ভাষা শহীদ শফিউর এর পিতা ১৯৫২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি (২৩ তারিখ বিকাল হতে ২৪ তারিখ ভোর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এটা নির্মাণ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা)।
২৬ তারিখ পুলিশ এটি ভেঙ্গে দেয়। পরে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা আরেকটি শহীদ মিনার তৈরি করে সেটাও ভেঙ্গে দেওয়া হয় একসময়। এই শহীদ মিনারটির নকশা করেন চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমান কিন্তু মূল নকশার অনেক কিছু বাদ রেখেই ১৯৬৩ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয় এটি। কিন্তু এটাও ভেঙ্গে দেয় পাকবাহিনী ১৯৭১-এ। এভাবে বারবার ভেঙ্গে দেওয়া হয় শহীদ মিনার- বাংলাদেশের মেরুদন্ড কিন্তু বাংলাদেশ আবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
১৯৭২ সালে পুননির্মাণ করা হয় এটা।
ভাষা আন্দোলনই সর্বপ্রথম আমাদের মাঝে উপলব্ধি আনে যে পাকিস্তান আমাদের জন্য একটা ভুল ব্যাতীত আর কিছু ছিল না। তাই ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রথম বুনিয়াদ। ভাষা আন্দোলন আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার, মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার অনন্য উদাহরণ; ভাষা আন্দোলনকারী রাষ্ট্র হিসেবে ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব অনেক। দেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষাকে মর্যাদা দেওয়া এবং টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ তাই ভাষা আন্দোলনের যথার্থ শিক্ষা।
বামদিকের রাস্তাটি মোড়টা পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকে পৃথক করেছে। মোড় থেকে একটু সামনেই ডানদিকে জগন্নাথ হল এর প্রধান ফটক। হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ও উপজাতি ছাত্রদের আবাসনের জন্য এই হলটি চালু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নেই। প্রতিবছর স্বরস্বতী পূজার সময় এখানে সর্বস্তরের মানুষের ভিড় জমে। তবে এই হলের নামের সাথে মিশে আছে এক বিভীষিকাময় ইতিহাসের।
“অপারেশন সার্চলাইট” এ ২৫শে মার্চ রাতে যেসব লক্ষ্যে পাকবাহিনী হত্যাকান্ড চালায় জগন্নাথ হলও তাদের একটি। এ রাতে তাদের নৃশংসতায় ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীসহ ৫৭ জন প্রাণ হারায়। ৪ স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবর এই হলে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এক ভবনের ছাদ ধ্বসে গিয়ে ছাত্র-অতিথি-কর্মচারী মিলে ৩৯ জন নিহত হয়।
জগন্নাথ হল ছাড়িয়ে আসতেই ফুলার রোডের মাথায় স্বাধীনতার সংগ্রাম চত্বর।
এখানের মূল ভাস্কর্যটি দেশের সর্ববৃহৎ এবং ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়কে তুলে ধরা হয়েছে। মূল ভাস্কর্যকে ঘিরে এখানে বাংলার বিখ্যাত ব্যাক্তির প্রতিকৃতি সম্বলিত আরো ভাস্কর্য সংযোজিত হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন বঙ্কিমচন্দ্র, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জগদীশ চন্দ্র বসু, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত, ড. মো. শহীদুল্লাহ, শিল্পী সুলতান, জিসি দেব, সুভাস বোস প্রমুখ। এছাড়া বাংলার বাইরের কামাল আতাতুর্ক, মহাত্মা গান্ধীসহ আরো অনেকের প্রতিকৃতি আছে এইখানে। সবগুলোরই ভাস্কর হলেন শামীম শিকদার।
৫
বামে দেখতে পাচ্ছেন সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হল, তারপরে আছে জহুরুল হক হল। ১৯৭১ পাকবাহিনীর আরেকটি লক্ষ্য ছিল এই জহুরুল হক হলটি; ডঃ কে,এন, মুনিম এর মতে প্রায় ২০০ ছাত্র হত্যা করা হয় এখানে। ৬
ফুলার রোড ধরে এগোলে এর আরেক মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি’র বাসভবনের ঠিক বাইরেই বুদ্ধিজীবি চত্বর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদদের স্মরণে তৈরি করা হয় বিশালাকৃতির এই স্মৃতিফলকটি। ৭
ডানদিকে ভিসি’র বাসভবনের সীমানা পেরোলেই রোকেয়া হল।
পাক-বাহিনীর নৃশংসতার অন্যতম সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী হলটি। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর মাধ্যমে ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ যে গণহত্যা শুরু হয় তাতে শুরুতে এই হলটিও আক্রান্ত হয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্চার কে, ব্লাড তার ‘The Cruel Birth of Bangladesh’ বইটিতে বর্ণনা করেছেন, “Fire was started at Rokeya Hall (girls' dormitory) and, when the students tried to escape, the military started firing. From the conversation of military control room and army unit 88, a total of 300 students death was estimated.”৮
নির্যাতনের এখানেই শেষ হয়নি, যুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়েই চলেছে অকথ্য নির্যাতন। Genocide in Bangladesh বইতে ‘কল্যাণ চোধুরী’ লিখেছেন-“However, on 7 October at about 8 p.m. Major Aslam and his men raided the hostel. The soldiers broke open the doors, dragged the girls out and stripped them before raping and torturing them in front of the helpless superintendent. The entire thing was done so openly without any provocation, that even the Karachi-based newspaper, Dawn, had to publish the story, violating censorship by the military authorities.”৬
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছিল সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ। তাদের এই সম্মিলিত প্রতিরোধ ও আক্রমণের জন্যই একটি প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনী পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়।
সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ তৈরি করেন ‘অপরাজেয় বাংলা’; রোকেয়া হলের উল্টো পাশে কলা অনুষদে ঢুকতেই চোখে পড়ে এই ভাস্কর্যটি।
এই পথ জড়িয়ে আছে আমাদের শত শত ঘটনাবলীর সাথে; নিষ্ঠুরতা আর নির্যাতনের সাক্ষী হয়ে আছে এই পথ; প্রতিবাদে বার বার গর্জে উঠেছে এই পথ; সৃষ্টি করেছে ইতিহাস; তৈরি করছে ভবিষ্যৎ। তাই চলুন এই পথে একটু হাঁটি।
পরিশিষ্টঃ এই লেখাটা লিখতে গিয়ে দেখেছি পরিচিত অনেক কিছু সম্পর্কেই বিস্তারিত জানি না; এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পরিচয়টুকুই জানি না, যদিও সামনে দিয়ে যাওয়া হয়েছে অনেকবার। তাই একে-ওকে জিজ্ঞেস করে বা ইন্টারনেটে খুঁজে বের করতে হয়েছে।
ইন্টারনেটে খুঁজতে গিয়ে দেখলাম তথ্যগুলো চড়ানো-ছিটানো, তাও বিভিন্ন ব্লগে ও অনলাইন পত্রিকায়। নির্দিষ্ট একটা ওয়েবসাইট থাকলে খুব সহজেই তথ্যগুলো জানা যেত। নিদেনপক্ষে এই এলাকার বিভিন্ন ভাস্কর্য ও স্থাপনা সম্বলিত একটা ওয়েবসাইট থাকলে ভালো হয়।
সূত্রঃ
১. http://www.somewhereinblog.net/blog/tanmoytahsanblog/29061376
২. http://www.mayerdak.com/root/ramna.htm
৩. http://bn.wikipedia.org/wiki/কার্জন_হল
৪. http://jhaac.ca/jagannathhall.html
৫. http://www.banglanews24.com/fullnews/bn/272890.html
৬. http://en.wikipedia.org/wiki/1971_Dhaka_University_massacre
৭. http://sharshongbad.com/details.php?page=newsDetials&newsId=10353
কুণ্ঠিত পান্থ
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।