'এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না/ এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না/ এই বিস্তীর্ণ শ্মশান আমার দেশ না/ এই রক্তাক্ত কসাইখানা আমার দেশ না'- এটি আশির দশকে ভারতের জনপ্রিয় কবি নবারুণ ভট্টাচার্যের লেখা 'এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না' কবিতার অংশবিশেষ। দীর্ঘ এক কবিতার মধ্যে উল্লিখিত লাইন কটিতে কবি রাষ্ট্রের কদাকার চেহারার বিরুদ্ধে এক দারুণ প্রতিবাদ তুলে ধরেছিলেন। জানা যায়, সে সময় ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় যে নির্মম হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছিল তারই প্রতিবাদে কবি রচনা করেছিলেন এই প্রতিবাদী কবিতা। সে সময় বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই কবিতাটি। মনে আছে আমাদের দেশে আশির দশকজুড়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রতিবাদ হিসেবে মঞ্চে, পথসভায় রাজনৈতিক কর্মী-আবৃত্তিকাররা নবারুণ ভট্টাচার্যের এই কবিতাটি আবৃত্তি করতেন।
আশির দশক পেরিয়ে গেছে সেই কবে। বিশ্বজুড়ে ঘটে গেছে নানা ঘটনা, নানা পরিবর্তন। আমাদের দেশেও ঘটে গেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা একদমই বন্ধ হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে মানুষের এরকম নির্বিবাদ মৃত্যুর সংখ্যা।
মৃত্যুর মিছিল দেখে মনে হয় যেন পরাস্ত, পর্যুদস্ত আমাদের ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা, সুশাসন। বিনাবিচারে, আইনের আওতায় না এনে, আত্দপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে হত্যা করা হচ্ছে। গুম, খুন, অপহরণ যেন রাষ্ট্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। দোষী বা অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় না এনে, বিচারের মুখোমুখি না করেই তাকে হত্যা করা হচ্ছে।
আর বরাবরই বলা হচ্ছে বন্দুকযুদ্ধের গল্প। গত বছরের পুরো সময়ই সারা দেশে নানা প্রক্রিয়ায় চলেছে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যাকাণ্ড। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের সময় থেকে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যেন আরও ভয়াবহতা লাভ করে। একটি বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের হাতে গড়ে প্রতিদিন একটি করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেককেই বিশেষ বাহিনীর কথা বলে তুলে নেওয়া হলেও তাদের আর খোঁজ মেলেনি।
তারা আর ফিরেও আসেনি। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর শিকার হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যারা পর্যবেক্ষণ বা গবেষণার কাজ করছে সেসব মানবাধিকার সংগঠনের হিসাবে ৫ জানুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত যতজনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বেশির ভাগই সরকারবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। 'ক্রসফায়ার' বা বিচারবহির্ভূত শব্দ এখন আর নতুন নয়। বেশ আগেই এই শব্দের প্রচলন হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্রসফায়ারের সর্বোচ্চ প্রয়োগ চলছে মূলত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর। বিশেষ করে বিএনপি এবং তাদের মিত্রদের ওপর সর্বোচ্চ প্রয়োগ চলছে বললে ভুল হবে না। ফলে কোনো রাজনৈতিক কর্মীই যেন এখন আর নিরাপদ নন। কখনো কখনো ক্রসফায়ারের নির্মম শিকার বা গুম হচ্ছে সাধারণ নিরীহ মানুষও। হত্যা, গুম, খুন এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছদ্মাবরণে অনেককেই অপহরণ করা হচ্ছে। মিডিয়া বা গণমাধ্যম সোচ্চার হলে আবার অপহৃতকে নাটকীয় কায়দার ফেরত দেওয়াও হচ্ছে। চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরী এবং সম্প্রতি ঢাকা থেকে অপহৃত, নিরীহ এক দোকান কর্মচারী মহিউদ্দিনকে অপহরণকারীরা একই কায়দায় ফেরত দিয়েছে। কিন্তু মৃদুল চৌধুরী, মহিউদ্দিন ভাগ্যের জোরে ফেরত এলেও এখনো ফেরত আসেনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জনপ্রিয় নেতা, সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী, মহানগর নেতা চৌধুরী আলমসহ আরও অনেকেই। ১৬ মাস আগে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলীকেও বনানীর একটি রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় বিশেষ বাহিনীর পরিচয় দেওয়া লোকজন।
কিন্তু আজ পর্যন্ত ইলিয়াস আলী আর ফেরত আসেননি। কোনো দিন ফেরত আসবেন কিনা সেটাও অনিশ্চিত। ইলিয়াস আলীর মতো ভাগ্যবরণ করতে হয় বিএনপির আরেক নেতা চৌধুরী আলমকেও। এরকম আরও অনেক উদাহরণ টানা যাবে। ৫ জানুয়ারি পরবর্তীতে আমরা দেখছি বিচারবহিভর্ূত হত্যাকাণ্ড অনেকটা সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা, নীলফামারী, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অনেককেই বিচারের মুখোমুখি দাঁড় না করিয়ে হত্যা হয়েছে। নীলফামারীতে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরের হামলায় যাদের আসামি করা হয়েছিল তাদেরও মৃত্যু ঘটেছে বিতর্কিতভাবে ।
সম্প্রতি বিচারবহিভর্ূত হত্যাকাণ্ড বা ক্রসফায়ার চরমভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি আন্তর্জাতিকমহলের নজরে এসেছে। বিশ্বের অন্যতম মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটওয়াচ বরাবরই বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আসছে। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনো দেশে চলতে পারে না।
হিউম্যান রাইটওয়াচ প্রতিবাদ করলেও সরকার এ বিষয়ে খানিকটা অমনোযোগই পোষণ করছে বলে প্রতীয়মান হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনারও বিষয়টি নিয়ে দারুণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যা বেড়ে যাওয়ার যে খবর পাচ্ছি তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গণমাধ্যম এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দেওয়া তথ্যগুলো যদি সঠিক হয় তবে তা খুবই উদ্বেগের বিষয়। সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যখন আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখা করি তখন তারা এসব বিচারবহিভর্ূত হত্যার বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দেন।
এরপরও আমি সরকারের কাছে এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ এবং দ্রুত তদন্তের আহবান জানাচ্ছি। বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে আইনের শাসন যেন ভূলুণ্ঠিত না হয়। অবিলম্বে এসববিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হতে হবে। ' বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকার সম্পর্কিত ৩১, ৩৩(ক), ৩৩(খ) ও ৩৫(৫) ধারার পরিপন্থী। ধারাগুলোতে নির্যাতন নিষিদ্ধ ও ব্যক্তি স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার কথা বলা হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে মানবাধিকার খর্ব করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে- 'আইনের আশ্রয় লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহার লাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি না ঘটে। ' অর্থাৎ সংবিধানে যে কোনো নাগরিককে আইনের আশ্রয় গ্রহণের অধিকার দেওয়া হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তার জীবনহানি করা যাবে না। দণ্ডবিধির ৯৬-১০৬ ধারা বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজের বা অন্যের জানমাল রক্ষায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে। তবে সেটা তখনই যখন ওই জানমাল বেআইনিভাবে ধ্বংসের উপক্রম হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের বিকল্প না থাকলেও শক্তি প্রয়োগ হবে এখানে ততটুকু যতটুকু দরকার।
এর বেশি নয়। আজকে যারা ক্ষমতাসীন তারা এবং তাদের মিত্ররা একসময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। মহাজোটের অন্যতম দুই সংগঠন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এবং ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান দুই নেতা সব সময়ই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন বলে আমরা দেখেছি। সংসদে দাঁড়িয়েও তারা এ বিষয়ে উচ্চকিত থেকেছেন। স্পষ্টত মনে আছে ১৩ জুলাই ২০১০ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মহান সংসদে বক্তব্য রেখেছিলেন মহাজেটের শরিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
সেদিন তিনি জরুরি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণের বাতিল নোটিসে বলেছিলেন, আইনি সংস্থার বেআইনি তৎপরতা দেশ ও জাতির জন্য বিপজ্জনক। একজন দোষী ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র আদালতের, কোনো ব্যক্তি বা মহলবিশেষের নয়। তিনি বলেছিলেন, পুলিশ এবং র্যাব জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও আসছে। মিথ্যা মামলার মাকড়সার জালে ফেলে ক্রসফায়ার করার যুক্তি খোঁজা হচ্ছে।
উঠিয়ে নেওয়ার সময় পরিবারের সদস্য এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, র্যাব-পুলিশ তা করছে। জাসদ সভাপতি সেদিন আরও বলেছিলেন, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমরা কেউই এ প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে পারি না। মহাজোটের নির্বাচনী অঙ্গীকার বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হবে। এর জবাব সবাইকে দিতে হবে। পুলিশ হেফাজতে থাকা ব্যক্তিটি কোনোভাবেই যাতে পুলিশের নির্যাতনে মারা না যায়, তার কোনো শারীরিক, মানসিক ক্ষতি না হয় তা নিশ্চিত করা আইনের বাধ্যবাধকতা।
সমাজের অন্ধকার দূর করতে হলে আগে অশুভ কর্মকাণ্ডের মূলোৎপাটন করতে হবে। ক্রসফায়ার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বিচারবহির্ভূতত হত্যাকাণ্ড সমস্যার সমাধান দেবে না। আরও মনে আছে ওয়ান-ইলেভেন পিরিয়ডে যখন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আন্ডারগ্রাউন্ড নেতা মোফাখখার চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছিল তখন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রকাশ্যে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। সংসদে এবং সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই ক্রসফায়ার ইস্যুতে কথা বলেছেন। এই তো কদিন আগে যুবলীগ নেতা মিল্কী প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হলে অন্যতম আসামি তারেককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু মুহূর্তেই ক্রসফায়ারের শিকার হন তিনি। ওই সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাটকের কারণে দুটো তাজা প্রাণ ঝরে গেল। অথচ আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্ষমতাসীন দল এবং তাদের মিত্ররা এখন নীরব। শুধু নীরবই বলব না, কেউ কেউ আবার ক্রসফায়ারের পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরছেন। এই তো কদিন আগে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বিবিসির একটি সংলাপে সেরকম বক্তব্য পেশ করলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হন।
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষেরই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সংবিধানে স্পষ্টত বলা হয়েছে- বিচারের বাইরে বা বিচারবহির্ভূতভাবে কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। বিচার ব্যতীত কাউকে হত্যা করা যাবে না। অতীতে ক্রসফায়ার, গুম ও নিখোঁজ সংস্কৃতির উৎপত্তিকালে দেখা যায় নিহতদের অধিকাংশই ছিল 'বিশেষ ধারার' রাজনৈতিক কর্মী। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের রাজনৈতিক কর্মীকেও এর শিকার হতে হয়।
কিন্তু এখন খুন ও গুমের বিচারবহির্ভূত শাস্তির হার ও ধরন এতটাই নৈরাজ্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে, রাজনৈতিক দলের সদস্যদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাধারণ মধ্যবিত্ত সবাইকে তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে। লিমনের মতো সাধারণ একজন তরুণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যে কতটা অমানবিকতার শিকার হতে হয় তা সবারই জানা। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮-এর সাধারণ নির্বাচনকালে নির্বাচনী ইশতিহারে পরিষ্কার ঘোষণা করেছিল, ক্ষমতাসীন হয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করবে তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন বহুবার। তবে লক্ষণীয় যে, সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেনুফেস্টোতে ক্রসফায়ার বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে কিছু বলা হয়নি, বরং ইদানীং ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা নানানভাবে ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত অন্যান্য হত্যা পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন।
কিন্তু মানুষ হত্যার এই দানবীয় প্রক্রিয়া বন্ধ না করলে একদিন শাসকগোষ্ঠীও যে এই প্রক্রিয়ার ফাঁদে পড়বে না তার গ্যারান্টি কোথায়। নিজেদের স্বার্থেই তাদের মানবাধিকারের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
kirondebate@gmail.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।