ল্যামবরগিনির স্টিয়ারিং আপনার হাতে; হাতিরঝিলের রাস্তায় রেসে নেমেছেন আপনি৷ হাতিরঝিলের দৃষ্টিনন্দন রাস্তায় চক্কর দিচ্ছে আপনার গাড়ি৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পেঁৗছাতে পারলেই বিজয়ী আপনি৷ সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়েও হতে পারে একচক্কর রেস৷ মন চাইলে ঝিলের পানিতে নেমে পড়তে পারেন স্পিডবোট নিয়ে৷ দুরন্ত গতিতে ছুটে পার হতে হবে কয়েকটি র্যাম্প৷ পাখির চোখে হাতিরঝিলকে দেখতে চাইলে চালাতে পারেন বিমান৷ এত কিছু করা যাবে একটি কম্পিউটার গেমে৷ দেিশ প্রতিষ্ঠান ম্যাসিভ স্টার স্টুডিওর একদল তরুণ প্রযুক্তিবিদ হাতিরঝিলের পটভূমিতে তৈরি করেছে ‘হাতিরঝিল ড্রিম বিগিনস’ নামে কম্পিউটার গেম৷ ঢাকার কম্পিউটার বাজারে আজ থেকেই পাওয়া যাবে এক সিডির এই গেম৷
শুরুটা যেমন
গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ম্যাসিভ স্টার স্টুডিও একটি গেমস নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে৷ মাত্র ছয় মাসে তারা নির্মাণ করেছে হাতিরঝিল ড্রিম বিগিনস৷ প্রথমে আটজনের দল নিয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি৷ এরপর হয় ২১ জনের একটি পূর্ণাঙ্গ দল৷ দলের সবাই বয়সে তরুণ৷ পাঁচটি ভাগে ভাগ হয়ে দলের সদস্যরা এখনো কাজ করছেন৷ দলে আছেন নকশাকার, গ্রাফিকস ও অ্যানিমেশন নির্মাতা, প্রোগ্রামার, শব্দ প্রকৌশলীরা৷
ম্যাসিভ স্টার স্টুডিওর প্রধান নির্বাহী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে স্বপ্ন দেখছিলাম, বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়, এমন একটি কম্পিউটার গেম বানাব৷ স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করার একটা বিষয় খুঁজছিলাম৷ হাতিরঝিল প্রকল্প সম্পন্ন হতেই মনে হলো, এটা নিয়েই তো গেম তৈরি হতে পারে! এই গেমের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি৷ কম্পিউটারের পর আমরা তৈরি করব এর অ্যানড্রয়েড সংস্করণ, যেটি খেলা যাবে স্মার্টফোনে৷’
গেমটির প্রধান ডেভেলপার ফারহান মাহমুদ বলেন, ‘এটি নির্মাণে আমরা গুগল স্কেচআপ প্রো, মায়া, থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স ও ব্লেন্ডার সফটওয়্যার ব্যবহার করেছি৷ শব্দ সংযোজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি অডেসিটি ও ওপেন সোর্স সাউন্ড সফটওয়্যার৷ রেন্ডারিংসহ অধিকাংশ কাজই করা হয়েছে ব্লেন্ডার সফটওয়্যার দিয়ে৷’ গেমটির প্রধান লেভেল ডিজাইনার নুর-ই আরাফাত জানান, এতে রয়েছে ৩১টি লেভেল৷ একটি শেষ না করে অন্য লেভেলে প্রবেশ করা যাবে না৷ লেভেলগুলোয় নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া আছে৷ খেলতে না চাইলে বিআরটিসির বাস বা প্রাডো গাড়িতে করে ঘুরে বেড়ানো যাবে হাতিরঝিলে৷ এ ছাড়া পার্কিং নিয়েও আছে অন্য রকম একটি খেলা৷’ হাতিরঝিল ড্রিম বিগিনস গেমে স্পিডবোট নিয়েও খেলা যাবে৷ ওড়া যাবে বিমানে৷
দেশি এ গেমটির মাধ্যমে উঠে এসেছে রাজধানীর হাতিরঝিলের সৌন্দর্য৷ গ্রাফিকসও চমৎকার৷ গেমটিতে রয়েছে র্যাম্পিং, র্যাংক-ভিত্তিক বিভিন্ন রোমাঞ্চকর আবহ ও হেলিকপ্টারের সঙ্গে ঝুলন্ত রাস্তা৷ গেমটির সব লেভেলে রয়েছে পর্যায়ক্রমিক ধারাবাহিকতা৷ গেমটির দাম ১৫০ টাকা৷
বয়স তার মাত্র ১৩
হাতিরঝিলের এ গেমটি নির্মাণে যে ২১ জনের দল রয়েছে, সেটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য মাশরুর মাহমুদ৷ গেমটি নির্মাণে রয়েছে তার নানা রকম অবদান৷ শব্দ সংযোজন, গ্রাফিকস ও লেভেল তৈরিতে কাজ করেছে সে৷ ধানমন্ডি সরকাির বয়েজ স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে মাশরুর৷ বয়স ১৩ বছর৷ বড় ভাই ফারহান মাহমুদের কাছেই প্রযুক্তি শিক্ষার হাতেখড়ি৷ পঞ্চম শ্রেণী থেকে কাজ করছে প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে৷ সে প্রথম আলোকে বলে, ‘ভবিষ্যতে গেম নির্মাতা হতে চাই৷ প্রোগ্রামিং বিষয়টাও শেখার চেষ্টা করছি৷’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।