আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বসন্ত শেষে জ্বর-ডায়রিয়া

বসন্তের শেষভাগে আবহাওয়ায় শুরু হয় পরিবর্তন। ফলে দেখা যায়, শেষ রাত এবং ভোর রাতে তাপমাত্রা কমে যায় এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রার এই ওঠানামার ফলে কিছু কিছু ভাইরাস শরীরের ওপর আক্রমণের সুযোগ পায়। আবহাওয়ায় তাপমাত্রার এই দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে যারা খাপ খাওয়াতে পারেন না তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরসহ সর্দি-কাশিতে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে জ্বরের এই প্রকোপ নতুন কিছু নয়, সাধারণের কাছে এটি 'ফ্ল'ু হিসেবে সমধিক পরিচিত।

এসব রোগী মূলত জ্বর, কেউ কেউ মাথাব্যথা, সর্দি, অরুচি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসছেন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। সেই সঙ্গে কোনো কোনো শিশু আক্রান্ত হচ্ছে কাশিতে। এ সময় ঠাণ্ডা সর্দির কারণে কান বন্ধ হতে পারে। কান বন্ধের সঙ্গে কানে ব্যথাও থাকে।

এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তা না হলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে যেতে পারে। যেহেতু দুপুর বেলা এখন বেশ গরম পড়ছে তাই সবাই ধরে নিয়েছে শীত চলে গেছে। তাই রাতের বেলা অনেকেই শীত নিবারণের ব্যবস্থা রাখছেন না। সন্ধ্যায় হালকা গরম পড়ার কারণে অনেকেই সাধারণ কাপড় চোপড় পরিয়ে শিশুদের রাতে ঘুম পাড়াচ্ছেন।

কিন্তু ভোর রাতে যখন তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে তখন শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যাচ্ছে। ফলে আক্রান্ত হচ্ছে জ্বরসহ শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে। অনেক সময় শিশুদের প্রচণ্ড সর্দি লেগে যাচ্ছে। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হতেও দেখা গেছে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে জ্বর ততটা তীব্রভাবে দেখা যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় প্রথমেই জ্বর কমানোর ব্যবস্থা হিসেবে যথাযথ মাত্রায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে সারা শরীর মুছে দেওয়া অর্থাৎ স্পঞ্জিং করা উচিত। জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত এই স্পঞ্জিং চালিয়ে যেতে হবে। ২/১ ঘণ্টার মধ্যে উচ্চতাপমাত্রার জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে প্রতি বছরই চৈত্রের শুরুতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে এবং আশ্বিনের পর তা কমতে থাকে। এবার বৃষ্টি কম হওয়ার ফলে ডায়রিযার প্রকোপ আগেভাগেই দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া নগরীর পানি সংকটও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত কয়েকদিনের গরমে পিপাসা মেটাতে গিয়ে অধিকাংশ লোকজনই যত্রতত্র দূষিত পানি পান করে থাকেন। মূলত দূষিত পানি এবং বাজারের খোলা খাবার ও শরবত পান করার কারণেই বছরের এই সময়টাতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। শুধু ডায়রিয়াই নয়, দূষিত খাবার ও পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন- টাইফয়েড, হেপাটাইটিসসহ বিভিন্ন ধরনের পেটেরপীড়ার প্রকোপও বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সময় ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য বিশুদ্ধ খাবার ও পানীয় গ্রহণে সচেষ্ট হতে হবে এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ার স্যালাইন কিংবা ছোট্ট শিশুদের ক্ষেত্রে রাইস স্যালাইন খেতে হবে।

সেই সঙ্গে শীঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা নিতে হবে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ, ঢাকা। ফোন: ০১৫৫২৩০৮৬২৩

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।