মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া ব্লকটা খুব মজার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চলার সময় এখানে হঠাত্ করেই আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে কোনো কিংবদন্তির। কিংবদন্তিটিকে আপনি পেয়ে যেতে পারেন একান্ত ব্যক্তিগত কোনো মুহূর্তে। হয়তো তিনি চা-কফির কাপে চুমুক দিচ্ছেন অথবা মাঠে ধারাভাষ্যের কাজ শেষ করে লিফট দিয়ে ওপরে উঠছেন। লিফটে দাঁড়িয়ে কোনো কিংবদন্তি যখন বিরস বদনে তাঁর গন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন, সেটা সত্যিই এক দেখার মতো বিষয়।
আজ লিফটে যেমন হঠাত্ দেখা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ার খেলা, ওয়ার্ন ভাষ্যকার হিসেবে এসেছেন। প্রেসবক্সের পাশেই ধারাভাষ্য কক্ষ। দেখা তো হতেই পারে। কিন্তু তার পরও একেবারে সামনা-সামনি দেখে রোমাঞ্চ জাগল।
তিনি মাঠ থেকে ওপরে ধারাভাষ্য কক্ষে যাচ্ছিলেন। দোতলায় লিফট থামতেই বিরক্তিটা আর চেপে রাখতে পারলেন না। মুহূর্তেই যেন একটা ফ্লিপার ছুড়ে দিলেন, ‘কী ব্যাপার, কী শুরু করলে তোমরা? প্রতি তলায় লিফট থামবে নাকি!’ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে উত্তর দেওয়া হলো, ‘জ্বি, আমি তিন তলায় যাব। ’ শুনে ওয়ার্ন এমন একটা ভাব করলেন যেন লিফটে ওঠার অনুমতি দিয়ে ‘দয়া’ করলেন!
লিফটের দরজা বন্ধ হতেই ওয়ার্নের আরও একবার বিরক্ত হওয়ার পালা। লিফট নিচের দিকে যাচ্ছে, ‘আরে আরে আবার নিচে যায়?’ বলেই থেমে গেলেন তিনি।
নিচ থেকে আরও কয়েকজন উঠলেন লিফটে। এবার কথার ঝাঁপি খুলে দিলেন ওয়ার্ন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা সবাই সাংবাদিক?’ সবাই একসঙ্গে সম্মতিসূচক উত্তর দেওয়ার পর বললেন, ‘খুব বাজে অবস্থা। মাঠে গরমে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ’ বলেই নিচু হয়ে ক্লান্ত হওয়ার ভান করলেন।
তাঁর ফরসা চেহারায় লালচে আভাও বলে দিচ্ছিল ঢাকার গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত এই ক্রিকেট কিংবদন্তির।
লিফটের ভিড় থেকে হঠাত্ প্রশ্ন, ‘ওয়ার্ন তুমি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছো?’ প্রশ্নটা শুনে যেন একটু থমকে গেলেন তিনি। মনে হয়, সিগারেট খাওয়া নিয়ে নিজের বিতর্কিত অতীত হঠাত্ই তাঁর চোখের সামনে ভেসে উঠল। ২০০০ সালের দিকে একটি ধূমপানবিরোধী সংস্থার সঙ্গে বিরাট চুক্তি সই করার পরও ধুমিয়ে সিগারেট খাওয়া চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিপক্ষে।
প্রশ্নটা একটু হজম করেই আবার সেই আগের ওয়ার্ন।
এবার গুগলি, ‘আরে ধুর, সিগারেট বন্ধ করা যায় নাকি? আমি এখনো চালিয়ে যাচ্ছি। ’
লিফট থেমেছে তৃতীয় তলায়। উপস্থিত সাংবাদিকদের গন্তব্য লিফট থেকে বেরিয়েই বাঁ দিক, মানে প্রেসবক্স। ওয়ার্ন ঘুরলেন ডান দিকে। ধারাভাষ্য কক্ষে।
সাংবাদিকেরা অবাক করতে চেয়েছিল তাঁকে। তিনিই অবাক করে দিয়ে গেলেন সবাইকে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।