যৌবন আর ব্লগের হিট সারাজীবন থাকে না। যৌবন শেষ হয়ে গেলে যেমন আছে ভায়াগ্রা, তেমন ব্লগের হিট কমে গেলেও হিট বাড়ানোর জন্য আছে নানা উপায়। সেই ব্লগের জন্মলগ্ন থেকে হিট ব্লগাররা মনে আনমনে আপনমনে এসব উপায় এপ্লাই করে আসছেন। আসুন তবে জেনে নিই কিভাবে ফিরে পাবেন ব্লগের হারানো হিট।
উপায় নম্বর ০১:
সেরা ব্লগারদের নিয়ে পোষ্ট দিন।
সেখানে আপনার পছন্দের অপছন্দের (আপনার দরকার হিট বাড়ানোর, পছন্দ অপছন্দ বাছাই করার টাইম আছে?) ব্লগারদের নিয়ে একটা পোষ্ট দিন। ভুলেও পোষ্টের শিরোনামে লিখতে যাবেন না যেন “আমার প্রিয় সেরা বিশ ব্লগার”। এই উপায়টা নিয়ে পরে বলছি। আপনি পোষ্টের শিরোনাম দিবেন এরকম “সামুর সেরা বিশজন ব্লগার”। এবার প্রত্যেক ব্লগার নিয়ে ভালো ভালো কথা লিখুন দু চার লাইনে।
তারপর আর কোন কাজ নেই, কেবল হিট গুনুন মশাই। এবার আসুন, কেন ঐ শিরোনাম দিতে মানা করেছি। আপনার পছন্দ কথাটা বললে কারো কিছু বলার নেই। কিন্তু যখনই বলবেন সামুর সেরা তখন সবার বলা আছে। সবাই আসবে, কমেন্টস করবে, ক্যাচাল করবে, আলোচনা করবে।
আর আপনার পোষ্ট হিট হবে। এরকম পোষ্টে কিছু নতুন নিক এসে আপনার লিষ্টে অমুক তমুকের নাম নাই কেন জানতে চাইবে। আমি কিন্তু বলছি না এসব নিক অমুক তমুকের মাল্টি নিক। চাইলে আপনার পোষ্টে আপনিই আপনার মাল্টি নিয়ে আপনার পক্ষে ঝাপিয়ে পড়ুন!
সাবধানতা: সেরা বিশ ব্লগারের মধ্যে আপনার সন্দেহের মধ্যে যেসব মডু পড়ে তাদের নাম রাখবেন। এতে পোষ্ট নির্বাচিত পাতায় যাবে সহজেই।
নির্বাচিত পাতায় না গেলে পরবর্তী এই পোষ্টের সিকুয়্যাল লিখে আরও কিছু নাম ঢুকিয়ে দিবেন। আর এসব পোষ্টে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ব্লগের গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্লগার বাদ না পড়ে। তাহলে হিটের সাথে সাথে চোদনও খেয়ে যাবেন।
উপায় নম্বর ০২:
ব্লগার বিশ্লেষন। গুটি কয়েক ব্লগারকে বেছে নিন।
তাদের উপর বিশ্লেষনধর্মী পোষ্ট লিখুন। ব্লগার বিশ্লেষনে আপনাকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ওজনদার ব্লগার বেছে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সামান্য পরিশ্রম করে কিছু পোষ্ট পড়তে হবে (মিয়া এতগুলা হিট পাইবেন, একটু না হয় শ্রম দেন)। সবার ভালো ভালো দিক বলুন। আর গুরুত্বপূর্ণ একজনকে সেই মাপের সমালোচনা করে ভাসিয়ে দিন।
ব্যস আপনার পোষ্ট হিট। আপনার সে পোষ্টের প্রথম চারটা কমেন্টস নিচে দিয়ে দিলাম।
কমেন্ট নম্বর ০১: অসাধারণ একটি পোষ্ট। আজকাল এমন বিশ্লেষন চোখেই পড়ে না। ব্লগার মফিজকে নিয়ে যা বললেন তা পুরোপুরি ঠিক।
মানবজাতির ক্রমবিকাশে তার অমুক পোষ্ট বিশেষ বিশেষ পুরুস্কার পাবার দাবিদার। এই পোষ্ট দিয়ে আপনিও প্রমাণ করে দিলেন আপনি অসাধারণ (এইটা হইলো প্রথম কমেন্টকারীর ধান্ধা, তারও ইদানীং হিট কম, সেও এরকম বিশ্লেষনী পোষ্ট দিবে, সেখানে আপনারে নিয়ে বিশ্লেষন করবে। আপনি তখন হাইসেন না আবার)
কমেন্ট ০২ : পোষ্ট ভালো লেগেছে। বিশ্লেষন ভালো হয়েছে। তবে ব্লগার অমুককে নিয়ে আপনার মন্তব্য ব্যাক্তি আক্রমন মনে হয়েছে।
আশা করি ওই অংশটুকু রিমুভ করবেন।
কমেন্ট ০৩ : খাপোর বাচ্চা (এইগালি আমি বুঝি না, খাপোর পর বাচ্চা ক্যামনে হয় আমারে বুঝান) বিশ্লেষনের বালটা করছস। করিম নাই ক্যান? রহিম কী তোরে পোন্দাইছিলো? অমুকের সাথে তোর কীসের এত চুলকানী। (ভয়পাবেন না, আপনার পোষ্ট হিট হওয়া শুরু হয়েছে। মনে রাখবেন পোষ্ট হিট তখনই হয় যখন পোষ্টে মাল্টি নিক ঢুকা শুরু করে)
কমেন্ট ০৪ : দুর্দান্ত বিশ্লেষন, প্রিয়তে নিলাম।
একশোটা প্লাস (যাদেরকে ভালো বিশ্লেষন করেছেন উনি তাদের একজন, উনার আজকে ঈদ। ফেসবুকের ইনবক্সে পরিচিত সবাইকে দিয়ে বেড়াবে আপনার পোষ্টের লিংক। পারলে প্রিন্ট করে লেমেনিটিং করিয়ে রাখবে)
সাবধানতা : যে ব্লগারের সমালোচনা করবেন আগে দেখে নিবেন ব্লগে তার প্রভাব কেমন? প্রভাব ভালো হলে তার সমালোচনার পথ না বাড়িয়ে মুক্তহস্তে প্রশংসা করে দিন। আখেরে হিট ভালো মিলবে।
উপায় নং ০৩ :
প্রিয় ব্লগারের লিষ্ট এবং তারা কেন প্রিয় এই ব্যাপারে ডিটেইলস লিখে সবাইকে উৎসর্গ করে দিন।
আপনি ভাবতে পারেন প্রথম উপায়ে এই শিরোনামে পোষ্ট দিতে মানা করেছিলাম কেন? যদি মানা না করতাম তবে উপায় নং ৩ কিভাবে লেখা হতো? আর আপনি আরেকটা পোষ্ট বেশী কিভাবে দিতেন?
মূলকথায় আসি, প্রিয় ব্লগারের তালিকায় যতবেশী পারেন ব্লগার রাখবেন। মনে রাখবেন যদি ৫০ জন প্রিয় ব্লগার রাখেন তবে ৫০ গুণন ৪ মিনিমাম দুইশো হিট একদম নিশ্চিত। যাদের নাম আছে তারা প্রথমবার পড়ে কমেন্টস দিয়ে যাবে, দ্বিতীয়বার আসবে আপনার রিপ্লাই দেখবার জন্য,তৃতীয়বার আসবে আর কে তার সম্পর্কে কী বলেছে দেখার জন্য, চতুর্থবার আসবে আপনার পোষ্টের হিট দেখতে। আগ্রহীরা এর থেকে বেশীও আসতে পারে। অতএব আপনার পোষ্ট হিট।
এসব পোষ্ট হিটের পাশাপাশি মানুষের প্রিয়তেও যাবে।
সাবধানতা : অনিয়মিত কোন ব্লগারকে এই লিষ্টে রাখবেন না। কারণ সে এসে আপনাকে হিট দিয়ে যাবে না। আপনার চাই হিট। আর প্রিয় নারী ব্লগারকে নিয়ে লিখতে গিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
অতি উৎসাহে আবার বলে ফেইলেন না “অমুক আপুকে খুব ভালো লাগে, কী সুইট সুইট ফন্টই না লিখেন, আপুমণি আই লাভ ইউ”। হিটের সাথে কট খেয়ে ফিট হয়ে যাবেন কিন্তু।
উপায় নং ৪:
আশা করি উপরের তিনটি উপায় কাজ হবে। যদি না হয়, যদি অঘটন ঘটে যায় তবে আশা হারাবেন না। আপনাকে হিট হতে হবে, হিট ছাড়া হট হওয়া যায় না।
অতএব কোন কিছু না ভেবে আমার মত হিট হওয়ার উপায় নিয়ে কিছু একটা লিখে ফেলুন। শিরোনাম কী দিবেন আমার পোষ্টের শিরোনাম দেখে শিখে নিন।
বি:দ্র: আমার লাষ্ট পোষ্টের হিট কম, দুঃখিত তাই ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।