গ্রীষ্মের দাবদাহ সারা দেশের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। প্রতিদিন শত শত ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। গত বুধবার মহাখালী ডায়রিয়া হাসপাতালেই শুধু ভর্তি হয়েছে ৫৩৫ জন। সারা দেশে এ সংখ্যা কয়েক হাজার হওয়ারই কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে গিয়ে দূষিত পানি পান করে মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গরমে খাদ্যে পচন ধরে বেশি। এসব খাদ্য খেয়েও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়রিয়ায় ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শারীরিক অসুস্থতার জন্য সহজে এতে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধসহ শারীরিকভাবে দুর্বল মানুষ। প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে শিশুরা বাইরের শরবত কিংবা দূষিত পানি পান করায় সহজে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, চলতি বছর এ সময়ে গ্রীষ্মের দাবদাহ অন্য বছরের তুলনায় বেশি অনুভূত হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সান্ত্বনা এতটুকু এ বছর। লোডশেডিংয়ের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম। চিকিৎসকদের মতে, ডায়রিয়া হলেই রোগীকে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। সারা দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ যখন বাড়ছে তখন অসাধু ব্যবসায়ীরা মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। বাজারে যেসব খাওয়ার স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে তার একাংশই নকল ও ভেজাল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাওয়ার স্যালাইনের দামও গড়ে ২৫/৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় দূষিত পানি ও খাবার খাওয়ার ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করা সরকারের দায়িত্ব। এ ব্যাপারে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জার ইমাম সাহেব ও পুরোহিত এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। খাবার স্যালাইন যাতে সহজলভ্য হয় সে ব্যাপারে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ডায়রিয়া মোকাবিলায় তা একটি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান বলে বিবেচিত হবে। আশার কথা, প্রশাসন নকল স্যালাইনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে। সম্প্রতি র্যাব সদস্যরা নকল খাবার স্যালাইনের কারখানা আবিষ্কার করে তা সিলগালা করে দিয়েছেন। তবে শুধু অভিযানই যথেষ্ট নয়। অপরাধীদের গ্রেফতার এবং তারা যাতে আইনের ফাঁক গলিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারেও উদ্যোগী হতে হবে। যারা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা খেলে নিজেদের পকেট ভরতে চায়, তারা যাতে পার না পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।