আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বকাপের সাক্ষী তাঁরাও

বিশ্বকাপের চট্টগ্রাম পর্ব শেষ। কিন্তু রেশ রয়ে গেছে এখনো। এর জন্য আফসোস কারও কারও মনে—এত তাড়াতাড়ি কেন যে শেষ হয়ে গেল মহাযজ্ঞটি। তাঁদের মনে ও মগজে এখনো গুনগুন করছে ‘চার-ছক্কা হইহই...’।
বিশ্বকাপকে ঘিরে নানা স্মৃতি এখন সদ্য অতীত।

সেই স্মৃতি রোমন্থন করছেন এখন অনেকে; বিশেষ করে এই আয়োজনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন যাঁরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামের বিভিন্ন অংশে স্বেচ্ছাসেবক পদে কাজ করা কিছু তরুণ-তরুণী। এই স্বেচ্ছাসেবকেরা বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। তাঁদের পদচারণ ছিল প্যাভিলিয়ন, মিডিয়া বক্স, টিকিট ব্যবস্থাপনা, আইসিসির স্টল—এসব স্থানে। এ রকম অন্তত ২০০ কর্মী ছিলেন।


অনেকটা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে করা এই কাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছেন তাঁরা। তাই এত বড় আয়োজন শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের এখন মন খারাপ। খুব খারাপ লাগছে। এত দিন কী আনন্দের মধ্যেই দিন কেটেছে! কত নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয়। গল্পগুজব।

আনন্দ-উল্লাস। বললেন এইচএসসি উত্তীর্ণ প্রতীতি চৌধুরী।
প্রতীতি মডেলিংও করেন। কাজ করেন বিভিন্ন ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানে। যখন বিশ্বকাপে কাজ করার প্রস্তাব পেলেন, তখন লুফে নিয়েছেন।

প্রতীতির মতো মিডিয়া বক্সে কাজ করেছেন ১৫ জন তরুণ-তরুণী।
জাহিদুল ইসলামের দায়িত্ব ছিল প্রতিদিন নগরের জুবিলি সড়ক থেকে সাংবাদিকদের তুলে মিডিয়া বাসটিকে স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া। ব্যবস্থাপনা বিষয়ের স্নাতকের এই শিক্ষার্থী নাট্যকর্মীও। উত্তরাধিকার নাট্য সংগঠনের কর্মী জাহিদ বলেন, ‘বিশ্বকাপে কাজ করার অভিজ্ঞতাটি দারুণ! বাবু (সাইফুল ইসলাম, মিডিয়া ম্যানেজার) ভাই যখন প্রস্তাবটি দিলেন, তখন সানন্দে রাজি হয়ে যাই। এখানে দেশ-বিদেশের অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হয়।

বেশ ভালোই। ’
মিডিয়া বক্সে স্কোর কার্ড দেওয়া, ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেওয়াসহ ছোটখাটো নানা কাজ করতে হতো তাঁদের। কেউ বিবিএ, কেউ বা এমবিবিএস, কেউ স্নাতকের শিক্ষার্থী তাঁরা।
অনিন্দ্য চৌধুরী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছেন। ছুটিতে চট্টগ্রাম এসে লেগে গেলেন বিশ্বকাপে।

ক্রিকেটভক্ত অনিন্দ্য বলেন, এখানে কাছ থেকে খেলা দেখা যায়। পাশাপাশি অনেক আনন্দ হয়। সবার সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। তাঁদের মধ্যে অনেকে আগে থেকে বিভিন্ন ইভেন্টে কাজ করছেন। যেমন সাবিনা ইয়াসমিন ও রাজিয়া সুলতানা।

সাবিনা মহসিন কলেজে স্নাতকে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কাজের পাশাপাশি সবাই মিলে খেলা দেখা যায়। দেশি-বিদেশি অনেকের সঙ্গে আলাপচারিতা হয়েছে। মজাই লেগেছে কাজটি। ’
চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনে কথা হচ্ছিল আরও কয়েকজনের সঙ্গে।

রাজিয়া বললেন, ‘বিশ্বকাপ চট্টগ্রামে আজ শেষ। খারাপ লাগছে। এমন আনন্দঘন একটি পরিবেশে ভালোই ছিলাম সবাই। ’
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খেলা দেখার চেয়েও আরও একটি বাড়তি পাওয়া ছিল তাঁদের। সেটা নামীদামি সব ক্রিকেটারকে কাছ থেকে দেখা।

এ ছাড়া ঘরের মাঠে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ তো বলাই বাহুল্য।
এই স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মাঠে ঢুকে ছবিও তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মিডিয়া বক্স, স্টেডিয়াম এলাকায় পদচারণার স্মৃতিওহ্ন ক্যামেরাবন্দী করতে ভোলেননি তাঁরা। এসব ছবি সঙ্গে সঙ্গে স্থান পেয়েছে তাঁদের ফেসবুক ওয়ালে।
ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী জুবাইর ইসলামের ভাষায় এ এক নতুন অভিজ্ঞতা—‘আগে ইভেন্টে কাজ করেছি।

তবে এখানে সম্পৃক্ত হতে পেরে নতুন অভিজ্ঞতা হলো। ’ তাঁদের এই স্বেচ্ছাশ্রম একেবারে মূল্যহীন নয়। এর বিনিময়ে কিছু সম্মানীও ছিল। তাঁদের অনেকের কাছে এটা রথ দেখা আর কলাবেচার মতো। তবে টাকার চেয়েও ইয়াসিন, শায়লা, মঞ্জুরুল, হুমায়ুন, মেহেদী, ইমতিয়াজ, ওয়াজেদদের কাছে বড় ছিল বিশ্বকাপের সাক্ষী হওয়া।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.