আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্যাশনে স্বাধীনতা

২৬ মার্চ মানেই লাল-সবুজের আলপনা। রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা গেল প্রায় সব দেশীয় ফ্যাশন হাউজেই লাল-সবুজের প্রাধান্য। শুধু শাড়ি বা পাঞ্জাবিতে নয় বরং ফতুয়া, টি-শার্ট, সালোয়ার-কামিজ ও টপসেও মেলে লাল-সবুজের রেখা। সব শ্রেণীর মানুষের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয় পোশাকগুলো। তাই দামও থাকে সাধ্যের মধ্যে।

বাচ্চাদের জন্যেও পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকম পোশাক।

‘রঙ’-এর স্বত্বাধিকারী বিপ্লব বলেন, “স্বাধীনতা দিবস যেহেতু জাতীয় উৎসব, তাই সেই দিনে সবাই দেশীয় কাপড় আর গয়না পরবেন বলেই আশা করি। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় পতাকার রং দু’টি- লাল ও সবুজ। এর সঙ্গে আসতে পারে সাদা-হলুদ, কালো-সাদা। কী ধরনের পোশাক পরবে সেটা আসলে বয়সের উপরেও নির্ভর করে।

‘অঞ্জনস’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহীন আহম্মেদ বললেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবসের মূল আকর্ষণ ফতুয়া। এতে রংয়ের ক্ষেত্রে এসেছে ভিন্নতা। গরম মাথায় রেখে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাকে হালকা রংয়ের ছোঁয়া দেওয়া হয়েছে। সাদা কাপড়ের উপর লাল-সবুজের মিশ্রণে ফুটে উঠেছে স্বাধীনতা দিবসের আত্মকথন। ফতুয়া ছাড়াও পাঞ্জাবি ও শাড়ি পাওয়া যাবে।

কে ক্র্যাফটের পাঞ্জাবি, শাড়ি ও সালোয়ার কামিজ।

মেঘ’য়ের টি-শার্ট।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘কে ক্র্যাফট’-এর আয়োজন ব্যাপক। তাদের সব পোশাকে পাওয়া যাবে স্বাধীনতার থিম। এসব পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টপস, শর্ট কামিজ, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাক।

স্বাধীনতা দিবসের বেশিরভাগ অনুষ্ঠান দিনে এবং খোলা মাঠে হয়। তাই গরমের কথা মাথায় রেখে সুতি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সাদা কাপড়ে পতাকার রং থেকে লাল-সবুজের ছোঁয়া নিয়ে এর সঙ্গে বিভিন্ন রংয়ের মিশ্রণে এক একটি পোশাক হয়ে উঠেছে স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি।

কাটিং, প্যাটার্ন ও ডিজাইনের ক্ষেত্রে বরাবরের মতো কে ক্র্যাফটের বৈচিত্র্য প্রকাশ পেয়েছে। ফতুয়া, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট প্রভৃতি যৌক্তিক মূল্যসীমার মধ্যেই পাওয়া যাবে।

‘চরকা’র স্বত্বাধিকার জাভেদ কামাল বলেন, “এবার স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে লাল-সবুজের সমন্বয়ে চরকা তৈরি করেছে বিভিন্ন ডিজাইনের ফতুয়া, কুর্তা, শাড়ি ও পাঞ্জাবি। জামদানি ও ফ্লোরাল মোটিফ প্রাধান্য পেয়েছে এ পোশাকগুলোতে। সঙ্গে অ্যাপলিক ও প্যাচওয়ার্কের প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে  ব্লক, মেশিনওয়ার্ক ও কারচুপির কাজ। ”

লাল-সবুজের নান্দনিকতায় ‘নগরদোলা’র স্বাধীনতার পোশাক সম্ভারে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ছেলেমেয়েদের ফতুয়া এবং বাচ্চাদের সব ধরনের পোশাক।

মা-বাবার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে করা হয়েছে বাচ্চাদের পোশাক। এসব পোশাকে কারুকাজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে হাতের কাজ, এম্ব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, কারচুপি ও অন্যান্য কাজ। পোশাকে রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজয়ের প্রচলিত লাল-সবুজের পাশাপাশি অন্যান্য রংও এসেছে। পোশাকের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ক্রেতাসাধারনের ক্রয় ক্ষমতা ও সাধ্যের মধ্যে। পাওয়া যাবে নগরদোলার সবগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে।

‘নিত্য উপহার’ বরাবরের মতোই নিজস্ব ধারায় সাজিয়েছে তাদের স্বাধীনতা দিবসের সংগ্রহ। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার বাহার রহমান বলেন, “এ বছর আমরা খুব বেশি স্বাধীনতা দিবসের পোশাক তৈরি করিনি। তবে বরাবরের মতো এবারও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, ধ্রুব এষ, সব্যসাচী হাজরা, আনিসুজ্জামান সোহেল, মাহাবুবুর রহমান, অনাহিদ জাফরি এবং নিত্য উপহারের ডিজাইন স্টুডিওর কর্মীদের উপস্থাপনায় নতুন ৫টিসহ পুরান প্রায় সব ডিজাইনের টি-শার্ট পাওয়া যাবে।

ওপাস’য়ের পাঞ্জাবি।

বার্ডস আই’য়ের টি-শার্ট।

‘বিবিয়ানা ফ্যাশন হাউজ’য়ের প্রতিটি শাখায় তোলা হয়েছে বাহারি পোশাক। প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লিপি খন্দকার বলেন, “এ বছর স্বাধীনতা দিবসে বিবিয়ানার পোশাকগুলোতে দেশাত্মবোধক গানের কলি দিয়ে লেখা হয়েছে। মাধ্যম স্কিনপ্রিন্ট। সাদা, সবুজ ও লাল রংয়ের ব্যবহার করা হয়েছে। সুতি কাপড়ে তৈরি এই পোশাকগুলোর রংয়ের সঙ্গে মিল রেখে করা হয়েছে হরেক রকমের মাটি, পুঁতি ও মেটালের গহনা।

পাঞ্জাবি, শাড়ি, লম্বা কুর্তি, ফতুয়া, ছেলেমেয়েদের দোপাট্টা ও বিভিন্ন স্টাইলের সালোয়ার— যেগুলোর প্রত্যেকটি আলাদা করে কেনা যাবে। দাম ৫০০ থেকে ১,৪৫০ টাকা।

রাজধানী আজিজ সুপার মার্কেটের বেশ কয়েকটি দোকান এনেছে স্বাধীনতার দিবসের পোশাক।

দেশীয় ফ্যাশন হাউজ ‘মেঘ’। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এবার এনেছে টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, শিশুদের ফতুয়া, ফ্রক।

 

‘বার্ডস আই’ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাজারে এনেছে টি-শার্ট। দাম ২২০-২৮০ টাকা। পাওয়া যাবে

‘ঐতিহ্য ফ্যাশন হাউজ’ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে এনেছে  টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি।

‘স্বপ্নচূড়া ফ্যাশন হাউজ’ ছেলেদের জন্য নান্দনিক নকশায় ক্যাজুয়াল ও ফরমাল হিসেবে পরার মতো শার্ট এনেছে। আছে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবি।

স্মার্টটেক্স এনেছে টি-শার্ট, পাঞ্জাবি ও লং টিউনিক। দাম: টি-শার্ট ৪৫০-৬৫০ টাকা। ফতুয়া ১৪শ’-১৬শ’ টাকা। লং টিউনিক ১৫শ’-১৭শ’ টাকা। পাওয়া যাবে— বসুন্ধরা সিটি, মিরপুর, উত্তরা আর এ কে টাওয়ার এবং রাইফের স্কয়ারে।

‘বাং’ স্বাধীনতা দিবসের রং লাল-সবুজের কথা মাথায় রেখে দৃষ্টিনন্দন ফতুয়া এনেছে। দাম ১,০৯০ টাকা।

আজিজ সুপার মার্কেটের ‘ওপাস’ বুটিক হাউজ নানান রংয়ের নকশায় বেশ কিছু নতুন পোশাক এনেছে। এর মধ্যে আছে পাঞ্জাবি ও ফুলহাতা টি-শার্ট। দাম পাঞ্জাবি ১,০৫০-১,২৫০ টাকা।

ফুলহাতা টি-শার্ট ৩৫০ টাকা।

শুধু মেয়েদের পোশাকের প্রতিষ্ঠান ‘নীপবন’ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এনেছে সালোয়ার-কামিজ ও শাড়ি। এ সব পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্বাধীনতার চেতনা। লাল-সবুজ ছাড়াও বিভিন্ন নকশায় এসব সালোয়ার-কামিজে কাজ করা হয়েছে। মাধ্যম হিসেবে এসেছে এম্ব্রয়ডারি, ব্লক, চুমকির কাজ।

ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, তাঁত, সিল্ক ও চিকেন কাপড়।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।