আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোচিং এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে

প্রশ্ন : ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ হওয়ার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর করণীয় কি?

উত্তর : আদর্শ, প্রবল মনোবাসনা এবং যথাযথ অনুশীলনই পারে একজনকে তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পেঁৗছে দিতে। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ এবং পারিবারিক ও সামাজিক রীতিনীতি ও অভ্যাস শিক্ষার্থীকে মারাত্দকভাবে প্রভাবিত করে। স্নেহ-মায়া-মমতা দিয়ে সঠিক দিক-নির্দেশনায় অভিভাবক এবং শিক্ষকদের আদর্শবাণীর যথাযথ ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর মনের সুকুমার দিকগুলো বিকশিত হয়। সমাজের প্রতি শ্রেণি ও স্তরে ভালো এবং মন্দ দুটি দিক রয়েছে। একজন ভালো শিক্ষার্থীর উচিত ভালো দিকটি বেছে নেওয়া আর মন্দ দিকটি পরিহার করা।

নিজের ব্যক্তিত্বের মধ্যে নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।

প্রশ্ন : ভালো ফলাফলের জন্য পড়াশোনার নির্দিষ্ট রুটিনের গুরুত্ব কতটুকু? এ ক্ষেত্রে গৃহশিক্ষক বা কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে কি?

উত্তর : ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতে হবে। পাঠ্য সিলেবাস সঠিকভাবে বিন্যস্ত করে নির্দিষ্ট রুটিন প্রণয়ন করা উচিত। সময়মতো পাঠ্যবই শেষ করে বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বিনোদনমূলক বই পড়ারও অভ্যাস করা উচিত। এতে শিক্ষার্থীর মেধার পরিস্ফুটন এবং অন্তর্নিহিত মেধা বিকশিত হয়।

এ ক্ষেত্রে গৃহশিক্ষক সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন। আর কোচিং এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।

প্রশ্ন : সহশিক্ষা কার্যক্রম পড়াশোনায় কি ধরনের প্রভাব ফেলে?

উত্তর : শুধু পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভা ও মেধাকে পুরোপুরিভাবে বিকশিত করতে পারে না। মূল পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মানসিক উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন- বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়, যুক্তিতর্কের মাধ্যমে নিজের বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস পায়।

আবার নাচ-গান ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের বিনোদন প্রদান করে। যার ফলে পাঠ গ্রহণের ক্লান্তি ও একঘেয়েমি দূর হয়।

প্রশ্ন : তথ্য ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিভাবে সহায়ক হতে পারে?

উত্তর : বর্তমান বাংলাদেশ থ্রিজির বাংলাদেশ। শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে একটি ইংরেজি শব্দের অর্থ কি এবং তা কোন ধরনের তা খুব সহজেই বের করতে পারে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান-কাল-পাত্র সম্পর্কে খুব সহজেই ধারণা লাভ করতে পারে।

বিভিন্ন জ্ঞানমূলক তথ্য ডাউনলোড দিয়ে অসাধারণ প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে। কাজেই তথ্য ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ পড়াশোনার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হতে পারে, যদি শিক্ষার্থীরা এর সঠিক ব্যবহার করে। তবে তথ্য-প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক সম্পর্কে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

প্রশ্ন : সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাসের হার বেড়েছে। শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে কি?

উত্তর : শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃজনশীল পদ্ধতি প্রণয়নে পাসের হার যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি শিক্ষারও উন্নতি হচ্ছে।

গতানুগতিক মুখস্থবিদ্যার পরিবর্তে সৃজনশীল শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর চিন্তাশীলতা, বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও দক্ষতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মেধা যাচাই ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে শিক্ষা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ লাভ করেছে। কাজেই সৃষ্টিশীল এবং গঠনমূলক প্রশ্ন প্রণয়ন ও শিক্ষার্থীর উত্তর প্রদান শিক্ষার মানকে অনেক উন্নত করেছে। এটা সময়ের চাহিদা এবং দাবিও বটে।

প্রশ্ন : শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে ইংরেজিতে বেশি দুর্বল।

তা কাটাতে করণীয় কি?

উত্তর : যে কোনো ভাষায় দক্ষতা অর্জনের চারটি ধাপ থাকে। তা হলো- শোনা, বলা, পড়া এবং লেখা। অনুশীলন মানুষকে দক্ষ করে। বেশি বেশি অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। শ্রেণিকক্ষ, মিটিং, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা সব জায়গায় ইংরেজির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

ইংরেজি ক্লাসে শিক্ষকরা জোড়ায় কাজ, দলীয় কাজ ইত্যাদির মাধ্যমে অনুশীলন অব্যাহত রাখবেন। অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ - বাসায় প্রতিদিন যাতে ইংরেজি চর্চা অব্যাহত থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন।

প্রশ্ন : শিক্ষার্থীদের বিপথগামিতা রুখতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের করণীয় কি?

উত্তর : 'টিনএজার' শিক্ষার্থীরা বেশি বিপথগামী হয়। তাদের বিপথগামিতা রুখতে অভিভাবকমণ্ডলী পরিবার এবং সমাজে তাদের আচার-আচরণ লক্ষ্য করবেন। তারা বাসায় নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান প্রদান করবেন এবং ছেলেমেয়ের বন্ধু-বান্ধবের অভিভাবকদের সঙ্গেও সর্বদা যোগাযোগ বজায় রাখবেন।

শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে গঠনমূলক পরামর্শ প্রদান করবেন।

প্রশ্ন : বিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন?

উত্তর : বিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে আমি সর্বদা সচেষ্ট। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তথা সহশিক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়ন করেছি। প্রতিদিনের পাঠদান নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন : শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আপনার পরামর্শ কি?

উত্তর : আমার পরামর্শ হলো- ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-নির্বিশেষে আমরা বাঙালি জাতি। আসুন আমরা সবাই মিলে এক হয়ে কাজ করি। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুস্থ-সুন্দর, মাদকমুক্ত, ইভটিজিংমুক্ত একটি জাতি উপহার দিতে পারি। শুধু একজন ব্যক্তির দ্বারা দেশ ও জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। সবাই মিলে ঐক্যের বন্ধন তৈরি করে জাতি, সমাজ তথা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করতে হবে।

শিক্ষার বর্তমান অবস্থা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আরও ভালো হবে তার গঠনমূলক পরামর্শ সাংস্কৃতিক ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করতে হবে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।