আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টাকা ছাড়া যেভাবে আমি আমার একটেল রিচার্জ করতাম। আপনারা চাইলে রবি রিচার্জ করতে পারেন।

আমি বাংলাদেশের দালাল| বর্তমান রবি মিয়া আগের কালের একটেল এটা সবাই প্রথমে জানলেও আমি জানছি অনেক পরে যখন একটেল আর চালাই না। কারণ যে গার্লফেন্ড একটেল চালাইতো ৬ মাস প্রেম করার পর বয়স হিসাব কইরা দেখি সে আমার ছোট আপার সমান। তারপর দুইজনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই দিকে চলে গেছি। হে তার একটেল বন্ধ কইরা দিছে আর আমারটা ভাইঙ্গা ফালাইছি। সময়টা ২০০৪-২০০৫ হবে।

ছাত্রজীবন, মেসে থাকি। ময়মনসিংহের চড়পাড়া মোড়ের কাছে। বাড়ি থেকে চাল দেয় আর প্রতি মাসের খরচ দেয় ১২০০ টাকা। এই টাকা দিয়েই বাসা ভাড়া, খাওয়া, বুয়া, মোবাইল, সিনেমা, নতুন সিডি কেনা ইত্যাদি চলত। কলেজের খরচ খুব একটা ছিলো না।

বৃত্তি পেতাম। খুব কষ্টে দিন পার করছি। তাই বলে মোবাইল খালি থাকত না। ৩০০ টাকার নিচে চলে আসলেই মনে হতো টাকা নাই। তখন আমার ৪/৫ টা সিম ছিলো।

বেশী ব্যবহার করতাম একটেল আর ইজি গোল্ড। তখন গ্রামীনের ফ্লেক্সি লোড চালু হয়েছে আর একটেলে ইজি লোড। ইজি লোড এ দোকানীকে টাকা দিলে দোকানী কাগজের একটা নাম্বার হাতে ধরিয়ে দিত। রিকোয়েষ্ট করলে রিচার্জ ও করে দিতো। তো আমার মাথায় খেলতে থাকল, যেহেতু হাতে তেমন টাকা-পয়সা থাকে না কিভাবে মোবাইলে রিচার্জ করবো।

তখনকার দোকানীরা বর্তমানের মতো ডিজুস টাইপ ছিলো না। এতো কিছু বুঝতো না মোবাইল ফাংশন। ফাংশনই বা আর কি ছিলো - বাজারে দামী মোবাইল ছিলো সিমেন্সের এম৬৫। যেভাবে কাজটা করতামঃ ২টা একটেল সিম নিতাম। আমার বন্ধুর সিমেন্স একটা সেট ছিলো আর আমার নকিয়া ১১০০।

দুটোই নিতাম। সিমেন্সের কমলা ব্যাকলাইট বিশিষ্ট ছোট সেট। দামীগুলো হবে না। একটা কাধে ঝোলানো ব্যাগ নিয়ে বের হতাম। সাতে ৪০০/৫০০ টাকা নিতাম।

প্রথমে সিমেন্স সেটে একটা একটেল সিম নিয়ে তাতে পরপর ৩ বার উল্টা পাল্টা পিন নাম্বার দিয়ে রিচার্জ করার চেষ্টা করতাম। ফলে অফিস থেকে ওই নাম্বারে রিচার্জ করা ব্ন্ধ করে দিতো ১২ ঘন্টার জন্য। আর সিমেন্স সেটের ডায়াল করা নাম্বার মুছে দিতাম। তারপর দোকানি গিয়ে ৩০০ টাকার ইজি লোড চাইতাম। দোকানীর দিকে মোবাইল এগিয়ে দিয়ে বলতাম রিচার্জ করেন।

আর আমি মানিব্যাগ থেকে দোকানীর সামনে টাকা বের করে গোনে তার দিকে বাড়িয়ে দিতাম (কেউ হাতে নিতো, কেউ নিতো না)। দোকানী আপনমনে রিচার্জ শুরু করতো। কিন্তু রিচার্জ হতো না। ২/৩ বার ট্রাই করতো; অনেক সময় ২টা নাম্বারও ট্রাই করতো। তখন দোকানীই বলতো ভাই আপনার সেটে নয় সিমে সমস্যা, রিচার্জ হয় না।

বলে সেট আর টাকা নিয়ে থাকলে টাকা ফেরত দিতো। আর আমি দ্রুত সেই দোকার ত্যাগ করে একটু দুরে গিয়ে সিমেন্স সেটের নাম্বারটা দেখে অন্য মোবাইলে রিচার্জ করে নিতাম। এভাবে একদিনে এক এক এলাকায় ১৫০০-৩০০০ টাকা রিচার্জ হলে বাসায় চলে আসতাম। সিমেন্স সেট কেন ব্যবহার করতামঃ একমাত্র তখনকার কমদামী সিমেন্স সেটগুলিতেই রিচার্জ করার নাম্বারটা থাকত। অন্য কোন সেটে কোন নাম্বার লিখে শেষে # দিলে সেই নাম্বার থাকত না।

মুছে যেত অটো। তারপর গার্লফ্রেন্ড চলে গেল আর নাম্বারটাও ভেঙ্গে ফেলেছি। মাঝে মাঝে কাষ্টমার কেয়ার থেকে ফোন দিয়ে অনেক আলাপ করতো আমার সাথে। শেষে জিজ্ঞেস করতো আমি সিম ব্লক করে কি করি। আমি বলতাম আমি মেসে থাকি তো।

এখানে অনেক ধরনের ছেলে থাকে। আমি একটু টয়লেটে গেলেই ওরা সেট নিয়ে নাড়াচাড়া করে। তখন হয়ত কেউ কেউ ট্রাই করে দেখে কিভাবে রিচার্জ করতে হয়। আপনারা বেরসিকের মতো আচরণ করে দেন ব্লক কইরা। কাস্টমার কেয়ার বলে আমরা কিন্তু আপনার সিম একবারে পার্মানেন্টলি বন্ধ করে দেবো।

আমি বলতাম "আমি আপনাদের সম্মানিত কাষ্টমার। যদি বন্ধ করে দেন তাহলে আপনাদের বেতনের টাকা আসবে কোথা থেকে। আর আমার গার্লফ্রেন্ড রাগ করবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.