চাপাতি পড়ছে বিশ্বজিতের গায়ে।
বিশ্বজিতের তরতাজা তরুণ শরীরে কুড়ালের ঘাইয়ের মতো
একটানা পড়ছে চাপাতির কোপ। চারপাশ থেকে ওকে কোপানো হচ্ছে
ছোরা, লোহার রড, মোটা চেইন আরও নানা ধারালো অস্ত্র দিয়ে।
বিশ্বজিৎ - আঠারো কি বিশ বছরের এক সদ্য তরুণ।
ওর গায়ে একটা মায়াময় ফুল শার্ট তারুণ্যের গন্ধে যেটি প্রতিদিন মাতাল হয়ে যায়।
সে শার্টটি গরম তাজা রক্তে ভিজে যেতে থাকে।
বিশ্বজিতের দুরন্ত দেহের বিশুদ্ধ রক্ত ফিনকি দিয়ে ছুটতে থাকে।
বিশ্বজিতের হালকাপাতলা দীঘল শরীরে আর মাথাভরা ঘন চুলে
ক্রিকেটের মাঠের বেয়াড়া বাতাস ঝাঁপিয়ে পড়ে রোজ।
সেখানে কোপ পড়ছে। চাপাতির কোপ।
বিশ্বজিতের দীঘল শরীর বেঁকে যাচ্ছে।
বিশ্বজিতের ঝাঁকড়া চুলের ভেতর থেকে গলগল করে বেরিয়ে আসছে সতেজ ব্রেন
বিশ্ব’র স্বাপ্নিক মগজ ছিটকে পড়ছে শাকিলের হাতে
বিশ্ব’র উষ্ণ জ্বলজ্বলে রক্তে হোলি খেলছে নাহিদ-কাইউম-কিবরিয়া
বিশ্ব’র শ্যামল দেহকণা গেঁথে যাচ্ছে শাওন-রাজন-ইউনুস-মজনুর ছুরির ফলায়
বিশ্ব’র সেলাই-পটু আঙুলগুলো টুকরো হয়ে যাচ্ছে মজনু-সাইফুলের রডের ঘায়ে
বিশ্বজিতের চিৎকার গেঁথে যাচ্ছে জনতার দেয়ালে।
বিশ্বজিতের রক্তাক্ত পায়ের ছাপ চাপাতি-কোপানো ঘর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে
নিরাপদ মাটিতে দৌড়ে যেতে চায়।
কিন্তু বিশ্বের বাহু দুটো উল্টে দেয়া হয়। ভেঙে দেয়া হয় হাঁটু।
বিশ্ব দৌড়াতে পারে না। বিশ্ব’র পেছন থেকে সামনে থেকে ওপর আর নীচ থেকে
চারপাশ থেকে কোপ পড়তে থাকে।
চাপাতি পড়ছে বিশ্বজিতের গায়ে
রড পড়ছে বিশ্বজিতের গায়ে
চেইন পড়ছে বিশ্বজিতের গায়ে
ছোরা ঢুকছে বিশ্বজিতের গায়ে
কিল পড়ছে লাথি পড়ছে ঘুষি পড়ছে ইট পড়ছে লাঠি পড়ছে
বিশ্বজিতের জীবন্ত শরীরে অসংখ্য কোপ পড়তে থাকে।
ময়না তদন্তে বিশ্বজিতের দেহের কোপগুলো ধরা পড়ে না।
ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট বিশ্বজিতের রক্তমাখা জামাটাকে ঠিক ডিফাইন করতে পারে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বজিতকে কোপানো কসাইদলটিকে আইডেন্টিফাই করতে পারে না।
আইনের চোখে কালো রুমাল বেঁধে চাপাতি-হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
আইনের চাপাতি বিশ্বজিতকে কোপাতে থাকবে।
বিশ্বজিতের মৃত শরীরে অসংখ্য কোপ পড়তে থাকে।
১৮.১২.১২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।