সেদিন হঠাৎ করেই কি মনে হল, মিরপুরগামী একটা বাসে উঠে বসলাম। প্রায় ৩ বছর পরে আবার চললাম মিরপুরের দিকে। কিছুদুর যেতেই একজন তরুণী আমার সামনের সিটে বসে তার বান্ধবির সাথে ফোনে গল্প করা শুরু করলেন। তার কথা শোনার ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্তু তিনি যেভাবে কথা বলছিলেন, তাতে কানটা ওদিকে না যেয়ে থাকতে পারছিল না।
হিন্দি আর বাংলার মিশেলে কথাগুলো বড্ড কানে বাজছিল। সবচেয়ে বিরক্ত লাগল যখন সে বলল, ' পরীক্ষা খাতাম হওয়ার পরে মে তো আজাদ হো যাউঙ্গি' । ১০ নম্বর পার হয়ে বামে যাওয়ার পর চিন্তা করলাম চিড়িয়াখানা ঘুরে আসি। সেই ছোটবেলায় আব্বুর সাথে যেতাম, তারপরে অনেকদিন যাওয়া হয়নি। চিড়িয়াখানার সামনে যেতেই মনে হল, ধুর পশুপাখি দেখে কি হবে? তার চেয়ে বরং বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘুর আসি।
গার্ডেনে ঢুকেই হতাশ হলাম। সবকিছু কেমন যেন বিবর্ণ মনে হচ্ছিল। সেই সতেজ, প্রাণবন্ত প্রকৃতি কথায় যেন মিলিয়ে গিয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে বেশ দূরেই গেলাম। হঠাৎ গানের সুর শুনতে পেলাম।
একটু এগিয়ে দেখি সেই অন্ধ ভদ্রলোক আজও গান গেয়ে যাচ্ছে। যার গান শুনে ছোটবেলায় মুগ্ধ হতাম। এই গান শুনতে শুনতেই হঠাৎ কিছু হিন্দি শব্দ কানে আসল। পিছনে ফিরে দেখি, একদল ছেলেমেয়ে গল্প করতে করতে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা মেয়ে আরেকটা ছেলেকে হিন্দিতে কথা বলা শেখাচ্ছে।
তারপরও ছেলেটা ঠিকমত হিন্দি বলতে পারছে না বলে মেয়েটার আক্ষেপের শেষ ছিল না। ওখান থেকে বের হওয়ার পর গেটের সামনে যখন দাঁড়িয়ে আছি, তখন আবার দেখলাম একটা ৫/৬ বছরের ছেলে তার মাকে বলছে,' মাম্মি ,মাম্মি মুঝে ও চিপস লাকে দো না। ' ভাবলাম ভালোই তো, 'বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই বহুভাষাবিদের (!) তীর্থস্থানে পরিণত হচ্ছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।