আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধোঁয়া ধোঁয়া ভালোবাসা....................... পর্ব- ৭

সাম্যের গান গাই- আমার চক্ষে পুরুষ রমনী কোন ভেদাভেদ নাই। বিশ্বে যা কিছু মহান, সৃষ্টি চির কল্যানকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর...........। আমি রক্তে, মাংসে গড়া অতি সাধারন এক মানুষ........... তবে আমি প্রচন্ড রকমের স্বপ্নবিলাসি। সেসব স্বপ্নের কিছ পর্ব- ১ পর্ব- ২ পর্ব- ৩ পর্ব- ৪ পর্ব- ৫ পর্ব- ৬ তিতলির আর একটা পরীক্ষা বাকি। পরশুদিন লাস্ট পরীক্ষা।

জানালা দিয়ে বিকেলের মিষ্টি রোদ ঘরে ঢুকছে। তিতলি বিছানায়, জানালার গ্রিল ঘেষে বসে আছে। এখান থেকে ফুপুর কবরটা দেখা যায়। ফুপুর কবরটা দেখলে মাঝে মাঝে তিতলির খুব অবাক লাগে। তার প্রায়ই মনে হয়, জীবিত অবস্থায় যে মানুষরা সারা দুনিয়া চষে বেড়ায়, মৃত্যুর পর এইটুকুন সাড়ে ৩ হাত মাটির ঘরে কেমন করে থাকে মানুষরা...................... তিতলির মুখের ওপর রোদ পড়ছিল।

তাকে খুব সুন্দর লাগছিল। হঠাৎ রুমের দরজায় দাড়িয়ে ফুলির মা ডাকা শুরু করলো--- > আম্মাজি, ও আম্মাজি......... > কি হয়েছে? এতো ডাকাডাকি করো কেন? > আফনের মেহমান আইছে? > কে এসেছে? > চিনতে পারি নাই। আফনে দেহেন গিয়া। > আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি যাও।

তিতলি ভীষন অবাক হলো। তার কাছে তো কারো আসার কথা না। আগে বন্ধুরা বাসায় আসা যাওয়া করতো। কয়েক বছর যাবৎ কারোরই তেমন আনাগোনা নেই। যাই হোক, তিতলি বিছানা থেকে নেমে চুল ঠিক করে ড্রইং রুমের দিকে গেলো।

তিতলি ধীরে ধীরে ড্রইং রুমের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালো। তিতলি অবাক হয়ে দেখলো ড্রইং রুমে কেউ নেই। কিন্তু টি-টেবিলের ওপর দারুন একটা ফুলের ঝুড়ি দেখলো। একটা বেতের ঝুড়ির ভেতর অনেকগুলো লাল গোলাপ ঠাসাঠাসি করে ভরা। তিতলি ঝুড়িটা হাতে তুলে নিলো।

ফুলগুলোর মাঝে ছোট্ট একটা কাগজ। তাতে লেখা, "সামান্য উপহার, পছন্দ হয়েছে তো?"। তিতলি ভীষন অবাক হয়েছে। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। সে কিছুক্ষন এদিক ওদিক দেখে ফুলির মাকে ডাক দিলো।

> আম্মাজি ডাকছেন আমারে? > হুম। কে এসেছিলো? > একটা ব্যাডা। > এই ফুল কি সে এনেছে? > জে। আফনের সাথে সাক্ষাত হয় নাই? > না। আমি আসার আগেই চলে গেছে।

> আহা কন কি! ব্যাডা ডা বড় বালা, খুব মায়া লাগা চেহারা। বড় সুন্দর কইরা কথা কয়........... > আচ্ছা তুমি যাও তো এখন। আজকাল খুব বেশী কথা বলো তুমি। > জে আইচ্ছা। তিতলি ভেবেই পাচ্ছে না যে কে তার জন্য এই ফুল আনবে।

যতই সে ভাবছে, ততই তার চিন্তায় জট পাকাচ্ছে............... রাতে খাওয়ার সময় বাবার সাথে কিছু কথা হলো--- > কিরে মা, বিকালে কি তোর কোন বন্ধু এসেছিল? > কেন বাবা? > না, ফুলির মা বলছিল তোর কাছে কে যেন এসেছিল......... > হুম। দেখা হয়নি, গিফট দিয়ে চলে গেছে। > কে এসেছিল? > বললাম তো দেখা হয়নি। মাঝরাতে পড়া শেষ করে তিতলি ফুলের ঝুড়িটা হাতে নিয়ে ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে গেলো। কে এই কাজ করতে পারে, সে কোনভাবেই বুঝতে পারছে না।

তার হঠাৎ কেন যেন মনে হলো, এটা কি বর্ষন করতে পারে............ বর্ষন তো ওদের বাসা চিনতো........... কিছুক্ষন পর মেঝোফুপু তিতলির রুমে ঢুকলো। > কিরে কি করিস? > চিন্তা করি। > কি এত চিন্তা করিস? > তুমি বুঝবে না। > এত ফুল পেলি কোথায়? > ভূত দিয়ে গেছে। > বাজে বকিস না তো।

সত্যি করে বল। > হবে হয়তো তোমার মতো কোন ভূত............ > এই আবার ফাজলামো করছিস? খবরদার আমাকে ভূত বলবি না। > ঠিক আছে পেত্নি রানী......... > কি যে বলিস না.......!!! আজকাল প্রেম করছিস নাকি.......??? > কি যে বলো না তুমি.........!!! কার ঠ্যাকা পড়েছে আমার সাথে প্রেম করতে আসবে...........!?! > তবে যাই বলিস, ছেলেটা কিন্তু মাশাআল্লাহ্ বেশ সুন্দর। > কোন ছেলে? > যে তোর জন্য ফুল নিয়ে এসেছিল। > তুমি তাকে কিভাবে দেখলে? > তাতো বলবো না।

তবে দেখেছি কোন একভাবে। > বুড়ি তুমি যে কি না.......... > এই আবার বাজে কথা বলে............ তিতলি সে রাতে ভালো করে ঘুমুতেও পারলো না। সেই ফুল দেনেওয়ালার কথা বারবার তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল................. (চলবে........) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।