কিছু দেশ দেখার সুযোগ হয়েছে এই জীবনে। ভ্রমণ আমার ভাল লাগে্ তাই সবার মাঝে তা জানাতে চাই। সবার উপরে ভালোবাসি বাংলাদেশ । ধন্যবাদ বাগদাদের ফন্দুক ক্যানাল বা ক্যানাল হোটেলের ক্যাফেটারিয়াতে সকালের নাস্তা ও দুপুরের লাঞ্চের ব্যবস্থা বেশ সুন্দর। ক্যাফেটারিয়ার কন্ট্রাক্ট নিয়েছিল একজন ইরাকী তার অধীনে বেশ ক’জন কর্মী কর্মরত।
বিধ্বস্থ বাগদাদে এদেরকেই হাসিখুশি দেখতাম সবসময়। চাকুরী আছে বেতন আছে তাই চেহারায় দুঃখের ছাপ ছিল না। ক্যানাল হোটেলে মানাল আর ফাতিমা বেশ পরিচিত সব বিদেশীদের সাথে। মানাল খৃষ্টান তাই তার পোশাক পরিচ্ছদ পশ্চিমা ধাচের স্মার্ট ও টপস পরা, ফাতিমা আবার হেজাব করে, তবে দুজনেই হাসিখুশি এবং চটপটে। সব ধর্মের মানুষের জন্য খাবার আয়োজন করা আছে ক্যাফেটারিয়াতে, সসেজ, হালাল বিফ, চিকেন সবই প্রয়োজন মত এবং পর্যাপ্ত।
ডিমের ওমলেট চিজ দিয়ে কিংবা ভেজিটেবল দিয়ে করার অর্ডার দিয়ে টেবিলে বসলেই কিছুক্ষণ পর হাজির। খাবার মান সম্মত এবং উপাদেয়। সচরাচর ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে যা হয় ওয়েট্রেসের সাথে সবাই হাসি তামাসা করে এর মধ্যে দু একজন একটু বেশী আন্তরিক। মানাল সুন্দরী, বিশের কোঠায় বয়স এবং এত বিধিনিষেধ না থাকায় মোটামুটি সবার সাথেই তার সখ্যতা বেশ জমে উঠেছে। ক্যানাল হোটেলে অস্ত্র পরিদর্শকদের আনাগোনা ছিল প্রতিনিয়ত।
তারা মোটামুটি ভিআইপি হিসেবেই চলাচল করত। নিজস্ব তিন চারটা নিশান পেট্রোল জিপে করে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে একেক সময় ইরাকের একেক অঞ্চলের দিকে চলে যেত। আস্তে আস্তে দেখলাম মানালের সাথে বেশ কজনের ভাব হয়েছেও অফিস সময় পরে মাঝে মাঝেই তাদের কারোর সাথে হাত ধরে চলে যাচ্ছে সুন্দর সন্ধ্যা কাটাতে। হঠাৎ একদিন শোনাগেল মানালের ক্যান্সার ধরা পরেছে। শুনে বেশ খারাপ লাগল।
বাগদাদে কয়েক মাস যাওয়া হয়নি তাই ক্যানাল হোটেলে এসে মানালকে মন খারাপ দেখলাম। উচ্ছ্বল তরুণী রোগের চিন্তায় বিমর্স। একটা অপারেশন হয়েছে। বেশ খরচ হয়েছে কেউ কেউ সাহায্যও করেছে। তবে সেই আগের চঞ্চল হাসিখুশী মানাল যেন মরে গেছে।
কাজ করতে হয় তাই করে যাচ্ছে। সবাই সহানুভুতির দৃষ্টিতে দেখে তাকে। সেই ক্যানাল হোটেলের উপর ইরাকীদের আক্রোষ এত বেশী ছিল যে,আত্মঘাতী বোমায় হোটেলটা উড়ে যায়। হোটেলে সোমালিয়ার মুসার কথা বেশ মনে হয়। বাগদাদে জাতিসংঘ মিশনে সে কর্মরত, আরবী ভাষাভাষি তাই তার চাকুরী পেতে সমস্যা হয়নি।
সোমালিয়ার মেয়েকে বিয়ে করেছে। বাচ্চাও আছে একজন। সোমালিয়াকে সে প্রচন্ড ভালবাসে কিন্তু জীবিকার প্রয়োজন তাকে ইরাকে আসতে বাধ্য করেছে। অশান্ত সোমালিয়াতে নিরাপদ আশ্রয় নেই,নেই সুনির্দিষ্ট জীবিকার উপায়। তবে সে মনের মধ্যে স্বপ্নকে লালন করে একদিন সোমালিয়াতে ফিরে যাবে তার প্রিয় দেশে।
তার চোখে সোমালিয়ার মত সুন্দর দেশ, তার নিজের সুন্দর গ্রামের মত কোন কিছুই সে বাগদাদে দেখে না। বাগদাদের প্রাচুর্য তাকে তেমন টানে না সে ফিরে যাবেই। রাশান প্রোগ্রামার নাতাশা চল্লিশ ছুই ছুই মহিলা। তালাক প্রাপ্তা এবং তার কোন সন্তানও নেই। বসনিয়াতে প্রথমে তার চাকুরী শুরু করে পরে ইরাকে চলে আসে।
বোনের ছোট্ট মেয়ের ছবি সবসময় তার অফিসে রাখা থাকত। মাঝে মাঝে সে তার দেশী লোকদের সাথে বাইরে যেত কিন্তু সবাই তাকে বেশ সমীহ করে চলত। নাতাশা ব্রংকাল সমস্যায় ভুগত। তাই তীব্র শীতের দেশ রাশিয়ার মানুষ হয়েও সে গরমের দেশই পছন্দ করত। বাহরাইন বা আরব দেশে কেউ ছুটিতে গেলে সে তার জন্য কিছু ভেষজ অষুধ আনার জন্য টাকা দিয়ে দিত।
ঔষধ পেলে তার হাসিমুখ হতো দেখার মত। যেন প্রান ফিরে পেয়েছে।
ব্রিটিশ হেনরীর বয়স প্রায় বায়ান্ন বৎসর। তার বুড়ো বাবা মা এখনো বেঁচে আছে। সে এখনো মাম্মি বেবি, বাবা মাকে প্রচন্ড ভালবাসে।
যৌবনে ব্রিটিশ মহিলার সাথে বিয়ে হয়েছিল। বাবামার দিকে টান দেখে কয়েক বছরের মাথায় তার সংসার ফেলে সেই স্ত্রী অন্যের ঘরে চলেগেছে। বহু বছর পর সে ভেবে দেখল বিয়েতো করা প্রয়োজন তখন থাইল্যান্ডে গিয়ে এক মেয়েকে বিয়ে করে। থাইল্যান্ডে তখন বিদেশীদের কাছে বউ কেনা বেচা হতো। সে ভেবেছিল এরা নরম ও অমায়িক হবে এবং বাবা মার সেবা করবে।
মেয়েটাকে নাগরিকত্ব পাবার কাগজপত্র সব ঠিক করে দেয়। তারপর তাকে লন্ডনের স্কুলেও ভর্তি করে দেয়। তিন চার বছর পর তার থাই স্ত্রী যখন সব নিয়ম কানুন জেনে যায় তখন তার বিরুদ্ধে তালাকের মামলা করে এবং তার অর্জিত টাকার বড় অংশ নিয়ে কেটে পড়ে। এখন সে ব্রিটিশ এবং তার দেশী কাউকে নিয়ে আছে। এ আঘাত সে সহ্য করতে পারে না।
কেমন যেন হয়ে যায় । তার বিশ্বাসের ভিত নড়ে যায়।
বর্তমানে তার বাবা মা অষ্ট্রেলিয়াতে চলে গেছে, সেও সেখানে যাবে। যেহেতু সে বিদেশী সংস্থায় কর্মরত তাই বাবা মার দেখাশোনার জন্য একজন কেয়ার টেকার দরকার। এবারও সে থাই মেয়ে বিয়ে করার চিন্তা করছে।
ব্যাংকক থেকে দুরে কোন গ্রাম থেকে ১৮-১৯ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে আনবে। তবে এবার তার পরিকল্পনা একটু আলাদা। একে সে ব্রিটিশ নাগরিকত্বের ব্যাপারে কোন সহায়তা করবে না এবং ইংরেজীও শেখাবে না। নার্সের মত বাবা মার সেবায় লাগিয়ে দিবে। গল্পটা শুনতে শুনতে বোতলে বন্দী দৈত্যের কথা মনে হলো।
বোতল খোলার পর সে তার রক্ষাকারী জেলেকে মেরে ফেলতে চাইছে। তখন দৈত্য বলল তুই আগে খুলিসনি কেন তাহলে তোকে রাজা বানাতাম। এখন মরার জন্য প্রস্তুত হও। এই নতুন মেয়ে তার আগের জনের বিশ্বাসঘাতকরার কারণে হয়ত বঞ্চিত হবে প্রথম বিশ্বের অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে। তবে হেনরী দয়ালু সে বলল যদি বাবা মা খুশী থাকে তাহলে ৫/৭ বছর পর সে অবশ্যই সদয় হবে।
কত বিচিত্র এই পৃথিবী আরো বিচিত্র মানুষের মন।
ইরাকে ভাগ্যাহত এক বাংলাদেশী
সোলেমানিয়া থেকে ইরবিল হয়ে বাগদাদে প্রথম ছুটিতে আসলাম প্রায় তিনমাস পর। এবার নতুন একটা হোটেলে উঠলাম। আগের হোটেলের কাছেই ফন্দুফ আল জোহরা বা জোহরা হোটেল। বেশ সুন্দর হোটেল তবে বহু বছর নিয়মিত গেষ্ট না থাকাতে যা হয় তাই।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কেমন যেন নিষ্প্রান ভাব। এবার কিছু কিছু গেষ্ট আসাতে হোটেলটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। দুই চারজন করে কর্মচারী কাজে যোগ দিচ্ছে। লিফটে করে রিসিপশন থেকে আমাদের ফ্লোরে এলাম। বেশ বড় রুম এসি ও অন্যান্য সব কিছু আধুনিক তবে ছোয়ার অভাবে এখানেও ম্লান ভাব।
হোটেলে এসে একটু গুছিয়ে বের হব তখনই রিং বেজে উঠলো। রিসিপশন থেকে জানালো নীচে একজন বাংলাদেশী আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা নীচে নেমে আসলাম। নীচে নেমে এক বাংলাদেশীকে বাগদাদে দেখে অবাক হলাম । পরিচয় হলো তার নাম আরমান সাথে সাথেই আরমান ভাই হয়ে গেলেন।
প্রায় ১০ বছর হলো তিনি ইরাকে আছেন। প্রথমে কোন একটা কোম্পানীতে চাকুরী নিয়ে এসেছিলেন তখন ইরাকের রমরমা অবস্থা। তার পরই নেমে এলো দুর্ভাগ্যের মেঘ। ইরাক - ইরাণ যুদ্ধ শুরু হলো। কোম্পানী গুলো তাদের ব্যবসা আস্তে আস্তে গুটিয়ে নেয়া শুরু করল।
বিদেশী শ্রমিক ছাটাই শুরু হলো। এক সময় প্রায় সব বিদেশীকে দেশে পাঠানো হলো। আরমান ভাই ততদিনে নিজেই আরবী ভাষা শিখে বাগদাদে মোটামুটি সেট হয়ে গেছেন। ছোট খাট ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করেছেন এবং দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন সবাই খুশী তার ও ব্যবস্যা দিন দিন বেড়ে গিয়েছিল। দেশের অর্থনীতির যে এই করুন অবস্থা হবে তা কোন ইরাকী স্বপ্নেও হয়ত ভাবেনি।
কারণ তাদের জন্মের পর থেকে অভাব কি জানতই না। আরমান ভাই টাকা জমাতে জমাতে প্রায় চল্লিশ হাজার দিনার জমিয়ে ফেলল ব্যাংকে। তিনিও ভাবেনি এত দামী দিনার পানির দামে বিক্রয় হবে। তখন এক দিনার তিন দশমিক তিন আমেরিকান ডলার। ১৯৯৬ - ৯৭ তে ১ ডলার দিয়ে প্রায় ২০০০ দিনার এবং কমপক্ষে ১৫০০ দিনার পাওয়া যেত।
আরমান ভাই এর জমানো টাকার কোন দামই রইল না। রক্ত দিয়ে উপার্জিত সেই অর্থের টানে তিনি আর দেশে যাওয়ার কথা ভাবতে পারছিলেন না। কি নিয়ে যাবেন কি বলবেন সবাইকে। ইরাকে বিদেশীদেরকেও থাকতে দিচ্ছে না। তবে ভাল ইরাকীও অনেক আছে।
তাদের অনুরোধ করে মাটি কামড়ে দুঃখ ব্যাথা সয়ে তিনি এবং তার মতো আরো অনেকে ইরাকের বিভিন্ন জায়গায় ঠিকানা বিহীন অবস্থায় কোন রকম জীবন যাপন করছেন। বাংলাদেশীরা বাগদাদে আসাতে তিনি যেন প্রান ফিরে পাচ্ছিলেন। আমাদের জন্য কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। আমরা তার অবস্থা ভেবে তাকে বললাম আমাদের গাইড হিসেবে থাকতে। তারপরও এটা ওটা তিনি কিনে দিতে চান।
আমরা আপত্তি করি মাঝে মাঝে মন খারাপ করেন। বাগদাদ আসলেই আরমান ভাই এসে দেখা করতেন। আগেই হোটেলের বন্দোবস্ত করে রাখতেন। হোটেল আগে ঠিক করে রাখাতে হতো কারণ ইরাক সরকার বিদেশীদের জন্য কয়েকটা দামী ফাইভ ষ্টার হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেছিল। এই হোটেল গুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল বেশ ভাল এবং এখানে বসবাসকারীরা যেখানেই যেত নিরাপত্তার লোকজন তাদের আশেপাশেই থাকত।
এছাড়া অন্যান্য হোটেলে থাকা আউট অব বাউন্ড। ধরা পড়লে হোটেল কর্তৃপক্ষ ও বিদেশী গেষ্ট সবারই সমস্যা হবে। ৫ তারা হোটেল গুলোর ভাড়া ২০০-২৫০ আমেরিকান ডলার অথচ বাগদাদে ২০-২৫ ডলারে ভাল হোটেল ছিল তখন। আমরা তাই ৫ তারা বাদ দিয়ে অন্য হোটেল গুলোতে উঠতাম। বাংলাদেশের মানুষ এবং মুসলমান হিসেবে আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ সুবিধাও পেতাম।
বুঝতাম যে পুলিশ এ ব্যাপারে জানে তবে আমাদের জন্য এসব নিয়মকানুন আনঅফিসিয়ালি কিছু শিথিল করে দিয়েছিল ইরাকী কর্তৃপক্ষ।
আরমান ভাই আমাদের নিয়ে নিত্যনতুন জায়গায় যেতেন। আরবী চমৎকার বলতে পারতেন কাজেই কোন সমস্যা ছিল না। আমরা দেশে আসার সময় আরমান ভাই চিঠি ও মাঝে মাঝে কিছু টাকা পাঠাতেন পরিবারের কাছে । আমরা এগুলো নিয়ে যেতে ও দেশের খবর এনে দেয়ার ব্যাপারে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করতাম।
। একবার তিনি আমাদের বেশ ভাল করেই ধরলেন তার বাসায় যেতেই হবে। আমরা যতই না বলি তিনি ততই অভিমান করেন শেষমেষ রাজি হলাম। বিকালের দিকে ট্যাক্সি করে তার ডেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। শহর ছাড়িয়ে বেশ দুরে একটা ফ্যাক্টরীতে তিনি কোন রকম দিন গুজরান করেন।
যথাসময়ে ফ্যাক্টরীর সামনে চলে এলাম। বর্তমানে তা বন্ধ তবে বোঝা যায় এক সময় বিশাল কর্মকান্ড চলত এখানে। বিশাল এলাকা জুড়ে মিল ও গোডাউন আমরা হেটে হেটে একটা গ্যারেজ এর কাছে গেলাম এটার দোতলায় কষ্ট করে ৪/৫ জন বাংলাদেশী এক সাথে থাকে। কোন ভাবে কিছু উপার্জন করে সবাই মিলে বেশ কষ্টে দিন পার করেন। কথায় বলে বাংগালীর আন্তরিকতার অভাব নেই।
আমরা অবাক হয়ে গেলাম আমাদের জন্য বাগদাদে ইলিস মাছ,বেগুন রান্না কোক, মাংস পোলাউ ইত্যাদির বিশাল আয়োজন দেখে খুবই আন্তরিকতার সাথে গল্প করে খেয়ে সময় কাটালাম। রাত্রি নেমে এসেছিল সবাই মিলে কিছুক্ষণ হাঁটলামও গল্প হলো। শেষে ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। ট্যাক্সি ওই এলাকাতে কম বলে হেঁটে মূল রাস্তায় এসেছিলাম। এখনো ইরাকের অবস্থা ফিরেনি।
তাই আরমান ভাইয়ের মত অনেকে হয়ত সেখানে সুদিনের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন। একদিন হয়ত তাদের স্বপ্ন সফল হবে। তাদের সেই সঞ্চিত অর্থ তার পূর্ব মূল্যে পাবে এবং দেশে ফিরে তারা পারিবার পরিজন নিয়ে সুখে দিন কাটাবেন। মানুষের দুঃখের আরেক দিক দেখা হলো এই বাগদাদের প্রবাস জীবনে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।