আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্পের কাজে ব্যাবহৃত বিল্ডিং অনুমোদিত নক্সা ও ঝুকিতে কিনা তার তালিকার সরকারী ওয়েবসাইট হউক!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সাভারের সোহেল রানার গার্মেন্টেস ভবন ধ্বসে যে র্দূঘটনায় নিহত, আহত হওয়া একটি পরিস্কার হত্যাকান্ড সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কারণ সরকারী প্রশাসনের ইউএনও ভবন পিলারের ফাটল দেখেও একে মোটেও ঝুকিপূর্ণ বলেনি; Click This Link ডেকে এনে শত প্রাণ হত্যা Click This Link উল্টা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মখা আলমগীর এখানে বিরোধী দলের চক্রান্ত তত্ত্ব আবিস্কার করছে। বস্তুত গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা আছে এমন অনেক বিল্ডিং এর নক্সা ত্রুটিপূর্ণ, অননুমোদিত এবং অতিরিক্ত তলা তৈরি করে একে ঝুকিপূর্ণ করা হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যা ও বেকার মানুষের আধিক্য। তাই কম বেতনে ও অতিরিক্ত খাটুনীতে বেশীর ভাগ শ্রমিকই পিছপা হয় না।

খুব কম গার্মেন্টসই আছে যেখানে শ্রমিকদের মাসের এক তারিখে বেতন দেয়। বেশীর ভাগই মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ এবং কেউ কেউ তৃতীয় সপ্তাহে এসে বেতন দেয়। তারপরেও পেটের দায়ে মানুষ গার্মেন্টেসে কাজ করতে বাধ্য হয়; দুইডা ভাতের জন্য সবাইরে হারাইছি! Click This Link উন্নত বিশ্বে শ্রমিকদের রোগ, অসুস্থ হওয়াতে কোন কথাই নেই এমনকি নির্ধারিত কোটায় হলিডে তথা ছুটিতে কোথাও ঘুরতে গেলেও সেই দিনের বেতনও মালিককে দিতে হয়। আর বাংলাদেশে ১-২ এর বেশী অসুস্থ হলে বেতনতো পায়ই না বরং তার চাকুরীটাও হারাতে হয়। তারপরেও মুখ বুঝে এই অসহায় মানুষ গুলো এই জুলুম সয়ে আসছে।

তাতে দিন যত যায় ততই অতি লোভী কিছু ধনী কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দূর্বল ভিতের উপর বিল্ডিং এবং বেপরোয়া ভাবে অতিরিক্ত তলা বানিয়ে তাকে হুমকিগ্রস্থ করে রাখছে। আর অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত বলাই বাহুল্য। তার উপর অর্থ ও ক্ষমতাসীন রাজনীতির প্রভাবে সরকারের প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিজেদের অবৈধ কাজকে অটুট রাখছে। তাই বিগত ৬-৭ বছর ধরে একাধিক অগ্নিকান্ড ও ভবন ধ্বসে শত শত লোক নিহত ও আরো বেশী মানুষ পঙ্গু ও আহত হলেও অন্যান্য ঝুকি ও ত্রুটিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থাই নিচ্ছে না সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এরা অর্থ দিয়ে সরকার ও বিজেএমইকে হাত করে রাখছে।

নিজেদের ব্যাবসা ও রপ্তানীর দোহাই দিয়ে তারা নিজেদের ভবন ও মজলুম শ্রমিকদেরকে চরম ঝুকিতে রাখছে। অথচ আমি মনে করি মাত্র ২০-৩০% ভবন বা স্থাপনা এই রকম ঝুকিতে আছে। তাইলে তার জন্য নিরীহ শ্রমিকদের ঝুকি ও বাকী গার্মেন্টস শিল্প এর ভাগীদার ও বদনামী হবে কেন? রাষ্ট্রের জনগণের মৌলিক অধিকার হল খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও আইনগত সাহায্য যার কোন বালাই নেই বাংলাদেশে। টাকা থাকলে বাচ নাইলে মর। তখন এই শ্রমিক যারা রক্ত পানি করে এত বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার আমাদের আয় করে দিচ্ছে তাদের কেন জেনে শুনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হবে? শত শত পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ সহ স্ত্রী তার স্বামীকে, সন্তান তার বাবা ও মাকে হারাবে এবং অসহায় বৃদ্ধ পিতা-মাতা তার শেষ বয়সে পুত্র বা কন্যাকে হারিয়ে অচল হয়ে যাবে এটা কোন ধরণের সুবিচার? এই ২০-৩০% ভবনের মালিকগণ কি ভাবল না ভাবল তারচেয়ে হাজার হাজার ও লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিক এবং দেশের ভাবর্মূতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

এই কারণেই আর দেড়ী না করে ঝুকিতে যে সকল গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প ভবন আছে তার তালিকা করে সরকারী ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হউক। এ ছাড়াও অন্য সব শিল্পের বিষয়েও সঠিক তথ্য যূক্ত হউক। তাতে এই সকল হারামী ও শুয়োর মালিক গুলা গাফিলতি করলে করুক কোন নিরীহ পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক যেন অজ্ঞাতে সেখানে ঝুকিপূর্ণ পরিবেশে কাজে না যায় তা সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক ও শ্রমিক অধিকার সংগঠন গুলোও কর্মজীবি শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রের অবস্থান যেন জেনে নেয়। সাভারের রানা গার্মেন্টেসে যা ঘটছে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতেও আরো অন্য জায়গায় ঘটতে পারে।

এখন কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের যূগে এই বিষয়ে সচেতনতা কঠিন কিছু নয়। বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক সংগঠনের কিছু লোক জানলেই বাকীদের সতর্ক করা খুব কঠিন কিছু না। এই ভাবে সচেতন হওয়া গেলে ঝুকি ও ত্রুটিপূর্ণ ভবেনর মালিকগণ বাধ্য হবে তাদের সমস্যা দূর করে একটি নিরাপদ ভবন গড়তে। এই বিষয়ে রাজউক, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায় দায়িত্ব বেশী। তারা যেটা ঝুকির তালিকায় রাখবে তার বাইরে যদি অন্য কোন ভবনে এই ধরণের সমস্যার জন্য অগ্নিকান্ড বা ধ্বসের ঘটনা ঘটে তখন নিহত ও আহতদের শুধু সামান্য ক্ষতিপূরণ নয় বরং তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও দীর্ঘ দিনের দায়িত্ব নিতে হবে।

সামান্য ১-২ লক্ষ টাকা দিলে এতিম সন্তান অথবা অসহায় বৃদ্ধ পিতা-মাতার সমস্যা দূর হবে না। তাদের বাচার অবলম্বন ও সঠিক সহায়তার ব্যাবস্থা করতেই হবে। গত বছর আশুলিয়ার তাজিন গার্মেন্টস ও এবার সাভারে রানা গার্মেন্টস ধ্বসে বাংলাদেশ সমন্ধে সারা বিশ্বে প্রবল নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে শুধু এই দেশের সরকার বা গার্মেন্টস মালিকদের গাফিলতি বা মুনাফাখোরী নয় বরং পশ্চিমা বিশ্বের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও আঙুল উঠছে। এই বিষয়েই ভারতীয় বংশোদ্ভুত লেখিকা প্রমিলা জয়পাল লিখেছে; Can Western companies put an end to Bangladesh factory disasters? Click This Link রয়টার্স ব্লগে এমন সব রিপোর্ট আমাদের জন্য সুখকর বা শুভ নয়।

তাই বলছিলাম এই ঝুকিপূর্ণ ভবন সমূহ যেমন একদিনে তৈরি হয়নি তাই রাতারাতিও ভেঙে ফেলা যাবে না। কিন্তু অবশ্যই এই গুলাকে চিহ্নিত করা যাবে। তাতে শ্রমিকদের আরো ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে কোন কিছু আপাতত না হলেও কাউকে এই ভাবে র্দূঘটনার শিকার হয়ে নিহত, পঙ্গু হতে হবে না এবং নিজ পরিবার পরিজনকেও অসহায়ত্বের মুখে ঠেলে দিবে না।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.