বাগেরহাটের কালিদাস বড়াল হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে অপর তিন আসামিকে। মামলার অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অন্য নয়জন।
আজ বুধবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ এস এম সোলায়মান এই রায় দেন। দণ্ড পাওয়া আটজনের মধ্যে দুই সহোদরসহ সাতজন পলাতক।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন, জেলার চিতলমারী উপজেলার রহমতপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর দুই ছেলে আলমগীর সিদ্দিকী ও নাছির সিদ্দিকী, একই উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে সাঈদুল ইসলাম ওরফে সাঈদ ফকির, ঘোলা গ্রামের আবদুল হক কাজীর ছেলে সাইফুর রহমান ওরফে বাবলু কাজী এবং কলাতলা গ্রামের সোনা মিঞা সরদারের ছেলে স্বপন। তাঁদের মধ্যে আলমগীর সিদ্দিকী ছাড়া অপর চারজন পলাতক।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া তিনজন হলেন চিতলমারীর রহমতপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর অপর ছেলে শওকত সিদ্দিকী, সদর উপজেলার চরগাঁ গ্রামের হাশেম মোল্লার ছেলে বাবলু মোল্লা ও একই উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে মানিক। তাঁরা সবাই পলাতক।
আর মামলার অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত নয়জন হলেন, চিতলমারীর বড়বাড়িয়া গ্রামের আবুল বাশার ওরফে পান্না, বড়বাড়িয়া গ্রামের কামরুল, চরবানিয়ারী গ্রামের গৌরপদ মণ্ডলের তিন ছেলে মুকুল তরুয়া, শ্যামল তরুয়া ও তুষার তরুয়া, সদর উপজেলার চরগাঁ গ্রামের ছোট ফকির ওরফে মারুফ, জেলা শহরের হাড়িখালী এলাকার খায়রুজ্জামান নিক্সন, হরিণখানা এলাকার আবদুল কুদ্দুস ওরফে কালা কুদ্দুস এবং চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্নি গ্রামের চান মোল্লা।
এদিকে এক যুগ পর স্বামী হত্যার বিচার পেয়েও খুশি হতে পারেননি নিহত কালিদাস বড়ালের স্ত্রী ও এই মামলার বাদী হ্যাপি বড়াল। খুশি হননি নিহতের ছোট ভাই ও চিতলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক বড়ালও।
রায় ঘোষণার পর বাগেরহাট আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আরও কঠোর এবং আরও বেশি আসামির শাস্তি প্রত্যাশা ছিল তাঁদের। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা।
একইভাবে রায়ে সন্তুষ্ট হননি আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মল্লিক আবু জাফর বলেন, তাঁরাও রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। তবে বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী এ কে আজাদ ফিরোজ পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যালোচনা না করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আসামিপক্ষে আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন মল্লিক আবু জাফর, আবু দাউদ টুকু, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ। বাদীপক্ষে ছিলেন বাগেরহাট আদালতের অতিরিক্ত পিপি সীতারাণী দেবনাথ, এ কে আজাদ ফিরোজ প্রমুখ।
২০০০ সালের ২০ আগস্ট সকালে বাগেরহাট শহরের সাধনা মোড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কালিদাস বড়ালকে গুলি করে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় সে সময় বাগেরহাটসহ সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।