আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসলেই একসময় বাংলাদেশের মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রন করতো রাজাকারের বাচ্চা

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি দীর্ঘদিন ধরে একটা কথা বলা হচ্ছে - তা হলো একসময় বাংলাদেশের মিডিয়া বলতে গুটিকয় পত্রিকা, রেডিও বাংলাদেশে আর ছিলো রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বিটিভি। বিটিভি মুলত ব্যবহূত হয়েছে ইতিহাসকে বিকৃত করার লক্ষ্যে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্থু আর চার নেতা হত্যার মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সামরিক সরকার - যার সেনাপতি ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়া পরে আসেন লেফটেন্ট জেনারেল হো মো এরশাদ। এই দুই শাসনামলে বিটিভিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পাকিস্তানী ভার্ষানে প্রচার করা হতো। খবরে কখনই শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা বলা দুরে থাকুক - বঙ্গবন্ধু বলা হতো না।

মুক্তিযুদ্ধের বহুল ব্যহূত শ্লোগান "জয় বাংলা" নির্বাসিত ছিলো - রাজাকার আল-বদর বা পাকবাহিনী শব্দগুলো ব্যবহার করা হতো না। নাটকগুলোতো দেখানো হতো মুক্তিযুদ্ধারা জীবনযুদ্ধে পরাজিত - পাগল আর রাজাকাররা সম্পদশালী। ধীরে ধীরে নুতন প্রজন্মের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধকে আড়ালে পাঠানো হচ্ছিলো - (এর মধ্যে পাঠ্যপুনস্তকেও একই কাজ করা হয়েছিলো)। এই ইতিহাসবিকৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছিলো ১৯৯১ সালে নির্বাচিত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সরকারও। যারা মুক্তিযুদ্ধে দেখেছে - ভুক্তভোগী - তাদের জন্যে সেই সময়কালটা ছিলো দমবদ্ধ পরিবেশের মতো।

এখন গনমাধ্যম নিয়ন্ত্রন করে ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ নেই বটে - কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তো হয়েই গেছে। দীর্ঘদিনের ইতিহাস বিকৃতির সুযোগে একদল বিভ্রান্ত মানুষ তৈরী হয়েছে - যারা এখন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় রাস্তায় নেমে পুলিশ পেটায় - বাসে আগুন দেয় - সরকারবে হুমকীয় দেয় - সন্ত্রাস করে বিচার বন্ধ করতে চায়। (২) এই ইতিহাস বিকৃতির পিছনে জামায়াতের লম্বা হাত কতদুরে গিয়ে পৌছেছিলো তা আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্যাইবুন্যাল - ১ এ নরপশু গোলাম আযমের ছেলে জবানবন্দ্বী থেকে পরিষ্কার হলো। আশির দশকে গোলাম আযমের ছেলে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসাবে সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিটিভির নিয়ন্ত্রন করতো। সে সকল খবর, অনুষ্ঠানসহ প্রচারাতব্য যে কোন অনুষ্ঠান পুংখানুপুংখ ভাবে যাচাই করে অনুমোদন দিতো - তারপর তা প্রচার করা হতো।

একজন বিবেকবান মানুষের এই কথাটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না যে - সেনাশাসনের সময় কোন যোগ্যতায় একজন ২০ বছর বয়সী সেকেন্ড লেফটেন্টকে জাতীয় টিভি ( একমাত্র) সেন্মরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। নিশ্চয় সেনাবাহিনীতে তার চেয়ে যোগ্যতম লোকের অভাব ছিলো না - কিন্তু ইতিহাস বিকৃতি এবং ইতিহাসকে পাকিস্তানী বান্ধব করার কাজে গোলাম আযমের ছেলের চেয়ে কি আর কেই বেশী যোগ্য হতে পারতো? আজ সেই লোক বাবার পক্ষে সাফাই স্বাক্ষী দিচ্ছে - বাবার অপকর্মগুলোকে সে অপকর্ম হিসাবে দেখছে না - দেখছে অর্জন হিসাবে - সাপের বাচ্চা যেমন করে সাপই হয়। কি এক অন্ধকারের সময় পেড়িয়ে এসে বাংলাদেশ আজ আলোর দিকে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি, তাদের দোসর আর তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের পরাজিত করার প্রথম পদক্ষেপ হলো যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা এবং যদি আমরা ব্যর্থ হই এই বিচারকাজকে একটা যৌক্তিক পরিসমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে - তাহলে বাংলাদেশকে হয়তো আরো অনেক বেশী মূল্য দিতে হবে - কারন আহত সাপ খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠে। মুল খবরের জন্যে লিংক - Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।