আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়িয়ালার মেয়েটি, সাথে কে ঐ ছেলেটি !!!

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! সন্ধ্যার কাছাকাছি সময় । তাড়াহুড়া করে বাসার সামনে হাজির হলাম । গেট খুলতে যাবো ঠিক তখন একটা সুদর্শন মত যুবক গেট খুলে বের হয়ে এল । এই বাসায় এই ছেলেটা আবার কোথা থেকে এল ? আগে তো দেখি নি ? কিন্তু আমার দেখার আরও একটু বাকি ছিল । সুদর্শন যুবকের পেছনেই বাড়িয়ালার মেয়েটি বের হয়ে এল এবং এমন একটা ভাব করলো যেন আমাকে চেনেই না ।

আমার সামনেই দুজন হাসাহাসি করতে করতে চলে গেল । আমার সামনে দুজন এমন ভাবে চলে যাবে আমি ভাবতেই পারি নি । মিস্টার সুদর্শন চলে যাক সেটা আমার কোন মাথা ব্যাখা নাই কিন্তু বাড়িয়ালার মেয়েটা এভাবে চলে গেল কেন ? আমি গেটের সামনে দাড়িয়েই দুজনের চলে যাওয়া দেখলাম । মনের ভিতর ক্ষীন আশা ছিল যে বাড়িয়ালার মেয়ে একবার হলেও পেছন ফিরে তাকাবে । কিন্তু তাকাল না ।

ফাজিল মাইয়া !! একবার তাকালি না ক্যান ? আমার সত্যিই বিশ্বাস হল না যে মেয়েটা একবারও পিছন ফিরে তাকাল না । আসলেই মেয়েগুলো এমন কেন হয় ? এতো দিন আমার প্রতি এতো আগ্রহ দেখালো আর এখন আমাকে চিনেই না ? আমার থেকে সুদর্শন কাউকে পেয়ে গেছে বলে ? চেহারা এতোই জরুরী ? হয়তো যুবক ভাল জব করে ! এগুলোই কি জরুরী ? নাহ ! এগুলোই জরুরী ! মেয়েরা কেবল এগুলাই দেখে !! আমি মন খারাপ করে রুমে ফিরে এলাম । আমার মনে হয় আজ আর বাড়িয়ালার মেয়ের সাথে কথা বলা হবে না । প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা মেয়েটার সাথে আমার কথা হয় । ছাদের উপর ।

দুজন যে খুব কথা বলি অথবা পাশাপাশি বসি তা কিন্তু না । মেয়েটা কখনও এক জায়গায় বসে না । ছাদের এক মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত হাটা হাটি করে আমি কোন সময় দাড়িয়ে থাকি কোন সময় মেয়েটির পাশে পাশে হাটি । টুকটাক কথা হয় । কখনও বা চুপ করেই থাকি ।

কিন্তু দুজনেই সময় কাটে খুব চমত্‍কার । আমি ঠিক এই সময়টার জন্যই তাড়াহুড়া করে আসছিলাম কিন্তু এখন মনে হয় আর এসে লাভ নাই । বাড়িয়ালার মেয়েটি আজ মনে হয় আর আসবে না । সময় কাটানোর জন্য আমার থেকেও ভাল কাউকে পেয়ে গেছে ! ঘরের ভিতর বসেই পুরো সন্ধ্যা কাটিয়ে দিলাম । পুরো দুইদিন তার কোন খবর নাই ।

তিন দিনের দিন তার সাথে দেখা হল । সকালের দিকে । ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলাম । -কোথায় যাচ্ছেন ? পিছনে তাকিয়ে দেখি তিনি হাজির ! হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ! -ক্যাম্পাসে । -যেতেই হবে ? আমার একটু নিউ মার্কেটে যাওয়ার দরকার ছিল ।

স্পষ্ট ইঙ্গিত তার সাথে ! না । আমি আর ফাঁদে পা দিবো না । আর না । অনেক হয়েছে ! বললাম -আমি যাবো না ! মেয়েটির মুখ একটু কালো হয়ে গেল । আমি আবার বললাম -আপনি সেদিন কার সুদর্শন যুবকের সাথে যান ।

আমার কাজ আছে । আমি আর দাড়ালাম না । এই মেয়ের পেছনে ঘুরে আর লাভ নাই । সারা বছর আমার সাথে টাংকি মারবে আর সময় হলে অন্য জনের হাত ধরে চলে যাবে । মেয়েটি নিশ্চই আমার কাছ থেকে এই কথা আশা করে নি ।

না করুক ! মেয়েদের সব আশা অনুযায়ী কাজ করার কোন মানে নেই । বিকেল বেলা ক্যাম্পাস থেকে ফিরছি । গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো সেই ফাজিল সুদর্শনের সাথে আবার দেখা হয়ে গেল । ঐ দিনের মতই প্রথমে সুদর্শন যুবক বের হল । তারপর বাড়িয়ালার মেয়েটি ।

কিন্তু আজকে বাড়িয়ালার মেয়ের পর আরও একটা মেয়ে বের হল । আমি কেন জানি দুজনের চেহারার ভিতর বেশ খুজে পেলাম ! বোন না তো দুজন ? আমার মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল বাড়িয়ালার মেয়েটি বলল -আপু তাহলে তোরা যা । তাড়াতাড়ি আসবি । তারপর সুদর্শন যুবকের দিকে তাকিয়ে বলল -দুলাভাই আমার গিফট কিন্তু চাই । তা না হলে কিন্তু আজ কে ঘরে ঢুকতে দিবো না ! আমি তাকিয়ে রইলাম মেয়েটির দিকে ।

আপু আর দুলাভাই রিক্সায় উঠে চলে গেল । বাড়িয়ালার মেয়েটি এবার আমার দিকে একটু তাকিয়ে উপরে উঠে গেল । হায় হায় আমি করেছি কি ? যদিও জানি যে মেয়েটা আসবে না তবুও ক্ষীন আশা নিয়েই ছাদে হাজির হলাম সন্ধ্যা বেলা । মেয়েটা কি আসবে ? মরয়রদের মন তো একটু নরম হয় ! আমার উপর রাগ করে থাকবে ! কিন্তু মনে হয় আসবে ! আমি অপেক্ষা করেই রইলাম । ঠিক যখন মনে হল মেয়েটা আর আসবে নি তখনই মেয়েটা ছাদে পা রাখল ।

কিন্তু আমার দিকে এল না । ছাদের অন্য কর্ণারে গিয়ে দাড়াল । আমি ও কিছুক্ষন দাড়িয়ে রইলাম । তারপর মেয়েটার দিকে হেটে গেলাম । আচ্ছা আজ মেয়েটার হাত যদি ধরি ! চট করে হাত ধরলে মেয়েটা একটু চমকাবে ! আমি ঠিক মেয়েটার পাশে গিয়ে দাড়াই ! আর একটু কাছে ! এই তো ! হাত বাড়ালেই হাত ছোঁয়া যাবে !! ধরবো নাকি ? যদি কিছু বলে ? বললে বলবে ! কেউ কোন কথা বলছে না ।

আমি অপেক্ষা করছি ! কিসের জন্য জানি না । কিন্তু করছি ! বাড়িয়ালার মেয়েটি এবার ঘুরে চলে যেতে চাইলো ! ঠিক তখনই আমি ওর হাত ধরলাম ! -হাত ছাড়ুন! -এই প্রথম হাত ধরলাম ! আর এখনই বলছ ছাড়ো ! মেয়েটি আমার হাড় থেকে হাত ছাড়া নোর চেষ্টা করলো ! আমি বললাম -এট লিষ্ট আমাকে সরি বলার সুযোগ দাও ! -আপনি কেন সরি বলবেন ! আপন এমন কিছু করে নি যে সরি বলবেন ! -সত্যি ! চারিদিকে অন্ধকার তবুও মেয়েটির চোখ দেখা যাচ্ছিল ! চোখে পানি টলটল করছিল তাও দেখা যাচ্ছিল ! আমি বললাম -দেখ আমি বুঝতে পারি নি ! তোমার সাথে তোমার দুলাভাই কে দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছে । খুব বেশি ! -কেন ? কেন খারাপ লেগেছে ? -তুমি জানো না ? -না আমি জানি না ! বলেন ! আমি পরলাম বিপদে ! এই কথা এখন কেমনে কই ! -আসলে ............... -বলেন !! মেয়েটি তার হাত ছাড়িয়ে নিল আমার কাছ থেকে ! -আমার ঐদিন আপনার কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছিল ! কিন্তু তারপর ..। আমি একটু আশার আলো দেখতে পেলাম । বললাম -তারপর? -তারপর বুঝলাম আপনি কেন রাগ করেছেন ! তারপর আর মন খারাপ করে থাকি নি ! যে কারোই মন খারাপ করে থাকতো ! -সত্যি??? -তবে খারাপ লেগেছে আপনার ঐদিনের কথা শুনে ! আপনি আমাকে একবার জিজ্ঞেস করতে পারতেন না ? -পারতাম !১ সরি ! মেয়েটি হেসে দিল !! তারপর বলল -আর যেন না হয় !! হবে না তো ? আমি কানে ধরলাম ।

আর হবে না ! বাড়িয়ালা সিরিজের অন্যান্য গল্পগুলো ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।